চিকিৎসা করাতে ভারতে গিয়ে বিপাকে জোৎস্না
ভারতের ওড়িশায় মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে যাত্রীবাহী ট্রেনের সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৩৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এতে আহত হয়েছেন ৯০০ জন। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় রেল স্টেশনে ভিড় করছেন দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনগুলোর যাত্রীদের স্বজনরা। আনন্দবাজার পত্রিকা হাওড়া স্টেশনের রাতের সরেজমিন পরিস্থিতি জানিয়েছে।
পত্রিকাটির খবরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ময়মনসিংহের বাসিন্দা জ্যোৎস্না বেগম কিডনির সমস্যায় ভুগছেন। ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতা এসেছেন তামিলনাড়ুর ভেলোরে চিকিৎসা করাতে যাবেন বলে। চেন্নাই মেলে টিকিট ছিল মা, ছেলের। কিন্তু দুর্ঘটনার কারণে বাতিল হয়েছে ট্রেন। ফলে বিপাকে পড়েছেন তারা।
জ্যোৎস্না বলেন, চিকিৎসা করাতে বাংলাদেশ থেকে এসেছি। ইন্ডিয়াতে চেনাশোনা কেউ নেই। এখন শুনছি ভেলোর যাওয়ার ট্রেন বাতিল হয়েছে। আমি নিজে অসুস্থ, হাতে টাকাপয়সাও খুব বেশি নেই। খুবই বিপদে পড়ে গেলাম। কী করব বুঝতে পারছি না।
হাওড়া স্টেশনে কথা বলেন অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিবার নিয়ে পুরী বেড়াতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু দুর্ঘটনার জেরে বাতিল হয়েছে তার ট্রেন পুরী এক্সপ্রেসও। অগত্যা বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে তাকে।
আরও পড়ুন: ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যুপুরীতে রূপ নিল ওড়িশা, নিহত বেড়ে ২৩৩
হাওড়া স্টেশনের পাশাপাশি শালিমার স্টেশনেও খোলা হয়েছে রেলের হেল্প ডেস্ক। সেখানেও বহু উদ্বিগ্ন মুখের ভিড়। সবাই তথ্য জানতে চান সবার আগে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সামলাতে মোতায়েন করা হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যদের।
এছাড়া হাওড়া এবং শালিমারে ভিড় রয়েছে পরিযায়ী শ্রমিকদেরও। রাজ্যের বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকেও বহু মানুষ প্রতি দিন হাওড়া থেকে ট্রেনে করে দক্ষিণে যান কাজের সন্ধানে। কিন্তু একের পর এক ট্রেন বাতিল হওয়ায় বড় সমস্যায় পড়েছেন তারা। পকেটে সামান্য টাকা। ট্রেন বাতিল হওয়ায় প্রত্যেককেই রাত কাটাতে হবে স্টেশন চত্বরে।
এদিকে, ওড়িশায় এ রেল দুর্ঘটনায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি টুইট করে বলেন, ‘ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনায় আমি মর্মাহত। এই দুঃসময়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই। আহত ব্যক্তিরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক। পরিস্থিতি নিয়ে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সঙ্গেও কথা বলেছি।’