প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে যা বললেন এরদোয়ান
টানা তৃতীয়বারের মতো তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। ২০০৩ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী। এরপর তার দেশকে রাষ্ট্রপতিশাসিত রাষ্ট্রব্যবস্থায় নিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৮ সালের ভোটেও তাঁর প্রতি আস্থা রাখেন তুর্কি জনগণ। এদিকে রোববারের (২৮ মে) প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দ্বিতীয়দফা নির্বাচনে জয়ী হয়ে দুই দশক ধরে তুরস্কের ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকা এরদোয়ান আরও পাঁচ বছরের জন্য দেশটির নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ পেলেন। কেমাল কিলিচদারোগলুকে হারিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা নিশ্চিত করলেন এরদোয়ান।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ভবনের সামনে জড়ো হওয়া লাখ লাখ মানুষের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রেসিডেন্ট এরদোগান ঐক্যের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। নির্বাচনে নিজের এই বিজয়কে গণতন্ত্রের জয় হিসেবে অভিহিত করেছেন রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান। তিনি বলেন, নির্বাচনে প্রকৃত বিজয়ী হয়েছে সাড়ে আট কোটি তুর্কি নাগরিক এবং তুর্কি গণতন্ত্র।
এসময় তুর্কি জনগণের ঐক্যের ওপর জোর দিয়ে এরদোয়ান বলেন ‘আমরাই একমাত্র বিজয়ী নই। এই নির্বাচনে তুরস্কের জয় হয়েছে, আমাদের গণতন্ত্র বিজয়ী হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আজ কেউ হারেনি। তুরস্কের ৮৫ মিলিয়ন নাগরিক জিতেছে। আর এখন আমাদের জাতীয় লক্ষ্য এবং জাতীয় স্বপ্নকে ঘিরে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময়।
এরদোয়ান তার সমর্থকদের বলেন, রোববারের এই নির্বাচন আধুনিক যুগে তুরস্কের জন্য ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ’। তিনি বলেন, জনগণের জন্য আমাদের দিনরাত কাজ করতে হবে। আমাদের বহুদলীয় রাজনৈতিক ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই নির্বাচনে আমাদের জনগণ ‘সেঞ্চুরি অফ তুর্কিয়ের’ পক্ষে রায় দিয়েছে।
তিনি বলেন, তুর্কি জাতির ক্ষমতা ও শক্তি রয়েছে এবং তারা বিশ্বব্যবস্থায় তার যথাযথ স্থান অর্জন করবে। পাশাপাশি, গত ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি নিরাময় এবং ধ্বংস হওয়া শহরগুলোর পুনর্গঠন তার সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবে বলেও জানান এরদোয়ান।
তুর্কি গনমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, রোববারের নির্বাচনে ৯৯.৪৩ শতাংশ ব্যালট গণনা শেষে, অনানুষ্ঠানিক ফলাফল অনুসারে, বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান ৫২.১৬ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। অন্যদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী কিলিচদারোগ্লু পেয়েছেন ৪৭.৮৬ শতাংশ ভোট। রোববার সন্ধ্যায় তুরস্কের সুপ্রিম ইলেকশন কাউন্সিলের (ওয়াইএসকে) চেয়ারম্যান প্রেসিডেন্ট পদে এরদোয়ানের পুনর্নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। ওয়াইএসকে প্রধান আহমেত ইয়েনার বলেন, দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোটে এরদোয়ান বিরোধী প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কেমাল কিলিচদারোগলুকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী হয়েছেন।
উল্লেখ্য, প্রায় ছয় কোটি ভোটারের মধ্যে ৮৫ দশমিক ৫৫ শতাংশ ভোটার দ্বিতীয় দফায় ভোট দেন। এর আগে ১৪ মে অনুষ্ঠিত প্রথম দফার নির্বাচনে ৪৯ দশমিক পাঁচ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ের কাছাকাছি ছিলেন এরদোয়ান। কিন্তু কোনো প্রার্থী দরকারি ৫০ ভাগের বেশি ভোট না পাওয়ায় দ্বিতীয় দফায় গড়ায় দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন।