২৪ মে ২০২৩, ১০:২৮

নুসায়র-এলিনের বিচ্ছেদের ঘোষণা

নুসায়র ইয়াসিন ও ডিয়ার এলিন  © সংগৃহীত

জনপ্রিয় ইউটিউবার নুসায়র ইয়াসিন ও তার বান্ধবী কনটেন্ট ক্রিয়েটর ডিয়ার এলিন বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।  সোমবার (২২ মে) রাতে প্রায় ১৩ মিনিটের একটি ভিডিও বার্তায় কোটি কোটি ভক্তদের সঙ্গে হৃদয়বিদারক এই খবর শেয়ার তারা। বিচ্ছেদ নিয়ে প্রকাশিত ওই ভিডিও এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী প্রায় ১১ মিলিয়ন ব্যবহারকারী দেখেছেন। ৪৪ হাজার ব্যবহাকরী মন্তব্য করেছেন।

নুসায়র ইয়াসিনের চ্যানেল ও প্রতিষ্ঠানের নাম নাস ডেইলি। ভিডিওর শুরুতেই নুসায়র ও এলিন বলেন, ‘এলিন এবং আমি একটি ঘোষণা দিতে চাই। আমাদের ছয় বছরের সম্পর্ক শেষ হতে চলেছে। আমরা আলাদা হয়ে যাচ্ছি। পেছনের কারণগুলো দুঃখজনক; কিন্তু আমরা শুরু থেকে সব বলতে চাই।’

পরে সাড়ে ১২ মিনিটের ভিডিওতে নিজেদের সম্পর্কের পুরো বিষয়টি তুলে ধরেন তিনি। এর আগে ২০১৬ সালের জুনে নুসায়র-এলিন সম্পর্কের শুরু। ইউটিউবে তখন একেবারেই নতুন নুসায়র। অন্যদিকে সদ্য বিবাহ বিচ্ছেদের পর পৃথিবী ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন এলিন। ইউটিউবে নাসের ভিডিও দেখে এলিনই প্রথমবার মেসেজ করেন নুসায়রকে। অনলাইনে প্রথম দিন কথার পর দুজনেরই দুজনকে ভালো লেগে যায়।

দীর্ঘ ভিডিওতে তাদের দুজনের সম্পর্ক সম্পর্ক নিয়ে তারা কথা বলেন। ‘এলিনের প্রথম মেসেজেই আমি প্রেমে পড়ে যাই। তার কথা বলার ধরন, হাস্যরসবোধ, ব্যক্তিত্ব, সংস্কৃতি—সব কিছুই ভালোবেসে ফেলি। আমি এখনো তোমার এসব কিছুকে ভালোবাসি,’ এলিনের দিকে তাকিয়ে বলেন নাস।

‘আমিও তোমার অনেক কিছু এখনো ভালোবাসি,’ উত্তর দেন এলিন। তিনি বলেন, ‘নাসের লক্ষ্য, বুদ্ধিমত্তা, উদারতা, চেতনাবোধ, এত এত মানুষের সঙ্গে মিশে যাওয়ার অসাধারণ ক্ষমতা, সবই ভালোবাসি।’

ইয়াসিন ইসরায়েলের আরাবায় মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি নিজেকে ফিলিস্তিনি-ইসরায়েলি হিসেবে পরিচয় দেন। তার বাবা একজন মনোবিদ এবং মা পেশায় শিক্ষিকা; চার সন্তানের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। তার মাতৃভাষা আরবি, এছাড়াও ইংরেজি ও ভাঙা ভাঙা হিব্রু বলতে পারেন। যদিও তিনি একজন মুসলিম হিসেবে বেড়ে উঠেছিলেন, তারপর থেকে তিনি মূলত ইসলাম পালন করা বন্ধ করে দিয়েছেন এবং নিজেকে ‘অধর্মীয় মুসলিম’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন।

আরও পড়ুন: পরীমনির ছেলের নাম পছন্দ হয়নি তসলিমা নাসরিনের

সম্পর্কের পুরো সময় তারা সব কিছুই করেছেন একসাথে। ঘুরে বেড়িয়েছেন পৃথিবী, করেছেন টাকা উপার্জন, দেখা করেছেন অনেক দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সাথে, এমনকি নকল বিয়ে পর্যন্ত। নুসায়র বলেন, ‘তবে খুব ভালো কিছুরও শেষ আছে। আমি এলিনকে সময় দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলাম। কোম্পানি সামলাতে ও ভিডিও বানাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। ধরেই নিয়েছিলাম, সম্পর্ক ঠিকই আছে; কিন্তু আসলে তা ছিল না’।

ভিডিওতে দেখা যায় মুখোমুখি বসে সম্পর্ক ভাঙার কারণগুলো আলোচনা করছেন তারা। দুজনেই দাবি করেন যে কেউ কারও চাহিদা পূরণ করতে পারছিলেন না।

এলিন বলেন, ‘বেশ কয়েক বছর ধরে আমার প্রতি তোমার মনোযোগের অভাব লক্ষ্য করছিলাম। কেমন যেন নিজের দুনিয়াতে চলে যাচ্ছিলে তুমি। নিজেকে তোমার মতো করে মানিয়ে নিতে চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু অবশেষে বুঝতে পারছিলাম যে আমিও নিজের একটি আলাদা পরিচয় তৈরি করতে চাই।’

কোনও তর্ক না করে এলিনের অভিযোগ মেনে নিয়েছেন নুসায়র। তার পালটা যুক্তি, ‘তুমি তো দেখেছ, একটা সময় আমি নিজের ভালোমন্দও দেখিনি।’ আলোচনা যখন বেশ গভীরে একটা সময় তিনি নিজের অক্ষমতা স্বীকার করে বলেন, ‘অ্যালিনের যে মাত্রার প্রায়োরিটির প্রত্যাশা রয়েছে তা পূরণ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।’

জবাবে অবশ্য নুসায়রকে আক্রমণের পথই বেছে নেন এলিন। তার কথায়, ‘তুমি মোটেই অক্ষম নও। বরং এই সম্পর্কে সময় বিনিয়োগ করা থেকে বিরত থাকারই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলে।’ এবার অবশ্য কোনও রাখঢাক না রেখে নুসায়রের স্বীকারোক্তি, ‘একদমই ঠিক ধরেছ।’

সাধারণত সম্পর্কের ঘোষণায় ঘটা করে ছবি-ভিডিও পোস্ট করার চল রয়েছে। বিচ্ছেদের খবর জানানোর ক্ষেত্রে একটি বিবৃতি দিয়ে দায় সারেন সেলেব্রেটিরা। তবে নুসায়র ও এলিন সে পথে হাঁটেননি। বরং ওই ভিডিওতে আলোচনার মাধ্যমে তুলে ধরেছেন সুদিনের ছবি। পাশাপাশি ছোটখাট বিষয় নিয়ে ঝগড়াঝাটিও জায়গা পেয়েছে। বিচ্ছেদের ঘোষণার জন্য পৃথকভাবে শ্যুটও করেছেন।

আরও পড়ুন: চিকিৎসক ছাড়া কেউ সাদা এপ্রোন পরতে পারবে না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

ভিডিওটির শেষে একে অপরকে জড়িয়ে ধরে ধন্যবাদ দেন নুসায়র ও এলিন। একসঙ্গে গেয়ে ওঠেন, ‘কে সেরা সেরা (যা হওয়ার তাই হবে)।’ সবশেষে তাদের বক্তব্য, আমাদের সম্পর্ক শুরুর কথা প্রথমে ভক্তদেরই জানিয়েছিলাম। তাই তাদের কাছে বিচ্ছেদের খবর পৌঁছে দেওয়ার দায় বর্তায়। পাশাপাশি এই ভি়ডিও দেখে অন্যরা যাতে একই ভুল না করেন সে বিষয়েও সতর্ক করেছেন তারা।