‘সর্বাত্মক নারীর অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় পদক্ষেপ নিতে হবে’
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, জেন্ডার পরিচয়জনিত বৈষম্য নারী-পুরুষ, কিশোর-কিশোরী সবাইকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই সর্বাত্মক নারীর অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা তরান্বিত করতে পদক্ষেপ নিতে হবে। ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ এসব প্রতিরোধে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছে। বুধবার (৮ মার্চ) আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বার্তায় এ সব বলেন তিনি।
গুতেরেস বলেন, এবারের এই আন্তর্জাতিক নারী দিবসে, আমরা বিশ্বের প্রতিটি জায়গায়, জীবনের সর্বক্ষেত্রে নারী ও কিশোরীদের সফলতা উদযাপন করছি। পাশাপাশি তারা যে কাঠামোগত অবিচার, প্রান্তিকী-করণ ও সহিংসতা থেকে শুরু করে বহুমাত্রিক সংকটসহ নানাবিধ বাধার মুখোমুখি হয়, আমরা তাও স্বীকার করে নিচ্ছি। এসব বাধা ও সংকটে সর্বপ্রথম ও সবচেয়ে বেশীমাত্রায় তারাই আক্রান্ত হয়। আরও স্বীকার করছি যে নারীরাই সবচেয়ে বেশি ব্যক্তিগত স্বাধীনতা-বঞ্চিত হয় এবং নিজেদের জীবন ও দেহের ওপর তাদেরই সবচেয়ে বেশি অধিকার খর্বিত হয়। ব্যাপক ত্যাগ স্বীকার করে নিজেদের মৌলিক অধিকারের দাবি জানানো নারীদের জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, যৌন নিপীড়ন ও শোষণের বিরুদ্ধে নারীর সুরক্ষার জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে এবং নারীর সর্বাত্মক অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা ত্বরান্বিত করতে পদক্ষেপ নিতে হবে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্যে জেন্ডার সমতা নিশ্চিত করতে প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। যেন প্রযুক্তি নারী ও কিশোরীদের শিক্ষা ও সুযোগ সৃষ্টির পথ প্রশস্ত করতে পারে। তবে প্রযুক্তির অপব্যবহারে বিদ্বেষ ও নিপীড়ন বাড়ার আশঙ্কাও থাকে।
গুতেরেস বলেন, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিতে নারীর অংশগ্রহণ এক-তৃতীয়াংশেরও কম। কিন্তু নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনে নারীর প্রতিনিধিত্ব কম থাকলে শুরুতেই বৈষম্য সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। ঠিক এ কারণেই আমাদের ডিজিটাল বিভক্তি দূর করতে হবে এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে নারী ও কিশোরীদের অংশগ্রহণ বাড়তে হবে।
ডিজিটাল জগতে নারীর পর্যাপ্ত পদচারণা না থাকায় গত দশকে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জিডিপির আকার এক ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের মতো কম হয়েছে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে এ ক্ষতি ২০২৫ সাল নাগাদ বেড়ে এক দশমিক পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলার হবে হবে বলে আশঙ্কা জাতিসংঘের।
নারীর ওপর বিনিয়োগ সব মানুষ, সমগ্র সমাজ ও দেশের উন্নয়ন ঘটায় জানিয়ে সরকার, বেসরকারি খাত ও নাগরিক সমাজ একসঙ্গে কাজ করে নারী-পুরুষ, কিশোর-কিশোরীদের জন্য সর্বত্র আরও বেশি অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়সঙ্গত ও সমৃদ্ধ বিশ্ব গড়ে তোলার আহ্বান জানান গুতেরেস।