ভূমিকম্পের ১৩ দিন পর তিনজন জীবিত উদ্ধার
তুরস্ক-সিরিয়ার সীমান্ত এলাকায় ভয়াবহ ভূমিকম্পের ১৩ দিন পর ধ্বংসস্তূপ থেকে তিনজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তুরস্কের স্থানীয় টেলিভিশন এনটিভির প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে গতকাল শনিবার এ তিনজনকে উদ্ধার করা হয়। সংবাদমাধ্যমটি ট্রেচারে করে তিনজনকে অ্যাম্বুলেন্সে তোলার ছবিও প্রকাশ করেছে।
দেশটির গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, বহু মানুষ এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। তবে ঠিক কতজন নিখোঁজ আছেন, এ তথ্য দুই দেশের কারও কাছেই নেই। ত্রাণ সংস্থাগুলো বলছে, তুরস্কের দুর্গত এলাকার অবকাঠামো এত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে, তা ঠিক করতে কয়েক মাস লেগে যেতে পারে। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়ে এরদোয়ান এটিকে শতবর্ষে তুরস্কের সবচেয়ে ভয়ানক বিপর্যয় বলে বর্ণনা করেছেন।
ভূমিকম্পের কারণে বর্তমানে সবচেয়ে বিপর্যস্ত রয়েছে দেশটির শিশুরা। শত শত শিশু পরিবার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত উদ্ধারকৃত শিশুদের মধ্যে ৯৫৩টি শিশুকে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং ১ হাজার ৫৮৯টি শিশুর পরিবার খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ শিশুদের মধ্যে ২৪৭টির পরিচয়ই জানা যায়নি। দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ জানিয়েছেন এ শিশুদের দেখাশোনা করবে সরকার।
এছাড়া, ভূমিকম্পে তুরস্কের নিহতদের মধ্যে যুদ্ধের কারণে দেশ ছাড়া শত শত সিরীয় রয়েছেন। আশ্রয়শিবিরের নিচে চাপা পড়ে তাদের মৃত্যু হয়। শনিবার বাব আল-হাওয়া সীমান্ত ক্রসিং দিয়ে দেড় হাজারের বেশি সিরীয় শরণার্থীর মরদেহ হস্তান্তর করে তুরস্ক। তাদের নিজ দেশ সিরিয়ার মাটিতে কবর দেওয়া হবে। এ ছাড়া বহু সিরীয় শরণার্থী এরইমধ্যে নিজ দেশে ফিরতে শুরু করেছেন। গত বুধবার ১ হাজার ৭৯৫ জন শরণার্থী সিরিয়ায় ফিরে যান।
উল্লেখ্য, গত ৬ ফেব্রুয়ারি ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে হওয়া ভয়াবহ ভূমিকম্প তুরস্ক ও সিরিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলকে কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে। এর কেন্দ্র ছিল তুরস্কের গাজিয়ান্তেপ শহরের ১৭ কিলোমিটার নিচে। ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা এরই মধ্যে ৪৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। কেবল তুরস্কেই মারা গেছেন ৩৯ হাজার ৬৭২ জন। এছাড়া, সিরিয়ায় মৃত্যু হয়েছে ৫ হাজার ৮০০ জনের ।