০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৮:২৩

তুরস্ক যাচ্ছে বাংলাদেশের উদ্ধারকারী দল

তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্পে বহু ভবন ধসের ঘটনায় তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তবর্তী ঐ এলাকায় এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৫ হাজার মানুষের। যুক্তরাষ্ট্রের জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে ঐ ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। তীব্র ঠান্ডা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি না থাকাসহ নানা কারণে ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধার তৎপরতা। এর মধ্যেই বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা নেমে হিমাঙ্কের কাছাকাছি চলে গিয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর গাজিয়ানতেপের কাছে এ ভূমিকম্প হয়। কম্পন অনুভূত হয়েছে প্রতিবেশী সিরিয়া, লেবানন ও সাইপ্রাসেও। 

এদিকে তুরস্কে ভূমিকম্পের ঘটনায় উদ্ধারকাজে যাচ্ছে বাংলাদেশের ১০ সদস্যের একটি উদ্ধারকারী দল। এতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের পাঁচজন করে সদস্য থাকবেন। মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা। বলেন, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি বিমানে (সি-১৩০) দলটি কাল বুধবার তুরস্ক যাবে। প্রাথমিকভাবে ১০ জনের দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই দলে কারা থাকবেন, কী কী সরঞ্জাম, উপকরণ ও চিকিৎসা সামগ্রী পাঠানো হবে, তা ঠিক করা নিয়ে কাজ চলছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা আরও জানান, এর আগের ভূমিকম্পে তুরস্ককে উদ্ধারকারী দল পাঠানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তখন তারা বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছিল, উদ্ধারকারী দল পাঠানো দরকার নেই। এবার তারা প্রস্তাব পাওয়ার পরই আগ্রহ দেখায়। জানতে চাইলে ঢাকায় তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরান সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ থেকে উদ্ধারকারী দলের তাঁর দেশে যাওয়ার কথা রয়েছে।

প্রসঙ্গত, গতকাল সোমবার তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ছিল সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে। ভূপৃষ্ঠের ১৭ দশমিক ৭ কিলোমিটার গভীরে ছিল এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল। ভূমিকম্পের কারণে তুরস্ক ও সিরিয়ায় মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে। দুই দেশে মৃত মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৮০০। তবে সংখ্যাটি আরও অনেক বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

চলতি শতকে এটাই তুরস্কে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প। এর আগে ১৯৯৯ সালে দেশটিতে এমন ভূমিকম্প হয়েছিল। ১৯৯৯ সালে তুরস্কের ইজমিত ও ইস্তাম্বুলের পূর্ব মারমারা উপকূলীয় অঞ্চলে সেই ভূমিকম্পে ১৭ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়।
গতকাল ভূমিকম্পের পরপরই বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা তুরস্ক ও সিরিয়ায় সহযোগিতার ঘোষণা দিয়েছে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের কাছে শোকবার্তা পাঠিয়েছেন।