ভারতে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে কাশ্মিরকে বলা হল আলাদা রাষ্ট্র
ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য বিহারের স্কুলের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে কাশ্মিরকে আলাদা রাষ্ট্র হিসাবে উল্লেখ করায় দেশটিতে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বুধবার দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বিহারের প্রাদেশিক সরকারের শিক্ষা বিভাগ গত ১২ থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যবর্তী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এই পরীক্ষায় সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজি প্রশ্নপত্রে একটি বিতর্কিত প্রশ্ন করা হয়। এতে ‘কোন দেশের মানুষকে কী নামে ডাকা হয়’ প্রশ্নের একটি জবাব দিতে বলা হয়। সেখানে কাশ্মির রাষ্ট্রের জনগণকে কী বলা হয় উল্লেখ করা হয়েছিল। চীনের উদাহরণ দিয়ে প্রশ্নে শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, চীনের জনগণকে ‘চীনা’ বলা হলে নেপাল, ইংল্যান্ড, কাশ্মির এবং ভারতের লোকজনকে কী নামে ডাকা হয়? বিহারের আরারিয়া, কিষাণগঞ্জ এবং কাটিহার জেলার শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে এই প্রশ্ন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।
প্রদেশের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক এসকে দাস বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেন, আমরা বিহার শিক্ষা বোর্ড থেকে এই প্রশ্নপত্র পেয়েছি। প্রকৃত প্রশ্ন ছিল কাশ্মিরের জনগণকে কী বলা হয়? কিন্তু ভুলবশত প্রশ্নে সেটি কাশ্মির রাষ্ট্রের জনগণকে কী বলা হয় উল্লেখ করা হয়েছিল। এটি ভুল। মানুষেরই তো ভুল হয়।
তবে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সুভাষ কুমার গুপ্ত ক্যামেরার সামনে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি। এদিকে, দেশটির শিক্ষাবিদ এবং বিজেপি নেতারা বিষয়টিকে ‘ষড়যন্ত্র’ বলে অভিযোগ করেছেন। একই সঙ্গে তারা ভারতের কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রীকে বিষয়টি নিয়ে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।
বিহার প্রদেশের বিজেপি সভাপতি সঞ্জয় জয়সাওয়াল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্নপত্রের ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, বিহার সরকার কাশ্মিরকে ভারতের অংশ নয় বলে মনে করে। তারা এখনও আমার উদ্বেগের বিষয়ে নীরব। এই প্রশ্নটিই প্রমাণ করে বিহার সরকারের কর্মকর্তারা কাশ্মিরকে নেপাল, ইংল্যান্ড, চীন এবং ভারতের মতো আলাদা দেশ বলে মনে করেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, নীতিশ কুমার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আকাঙ্ক্ষায় এতটাই অস্থির যে সপ্তম শ্রেণির বাচ্চাদের ওপর দেশবিরোধী প্রশ্নপত্র চাপিয়ে দিচ্ছেন।
২০১৭ সালে বিহারে স্কুলের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে একই ধরনের একটি প্রশ্ন করা হয়েছিল। পরে বৈশালী জেলার এক শিক্ষার্থী পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সেই ত্রুটি ধরেন। এ নিয়ে সেই সময়ও দেশটিতে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছিল।
সূত্র: এনডিটিভি