কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে থাকতে পারবেন না সোনালি চক্রবর্তী
কলকাতা বিশ্ববিধ্যালয়ের উপাচার্য পদ থেকে শেষপর্যন্ত অপসারিত হতে যাচ্ছেন সোনালি চক্রবর্তী বন্দোপাধ্যায়। আজ মঙ্গলবার তাকে উপাচার্য পদ থেকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে ভারতের শীর্ষ আদালত সুপ্রিমকোর্ট।
মঙ্গলবার শীর্ষ আদালতে মামলাটি ওঠে। সেখানেই দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের ক্ষমতার উপর ‘হস্তক্ষেপ করে’ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে সোনালিকে দ্বিতীয় বার নিয়োগ করা হয়েছে। ফলে যে রায় হাই কোর্ট দিয়েছিল, তা-ই বহাল থাকবে।
সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, কলকাতা হাই কোর্টের সিদ্ধান্ত সর্বতো ভাবে ঠিক। আদালত এ-ও জানিয়েছে যে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে যে ‘সমস্যার অপসারণে’র ধারা (রিমুভাল অফ ডিফিকাল্টি) রয়েছে, তার অপব্যবহার করে ওই নিয়াগ করেছে রাজ্য। আর তা করতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য যে রাজ্যপাল, তাঁর ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: মন্ত্রণালয়ের চাপ, ইউজিসির নীরবতায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনীহা
সোনালিকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে পুনর্বহাল করেছিল রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর। সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন আইনজীবী অনিন্দ্যসুন্দর দাস। হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ ১২ সেপ্টেম্বর সেই মামলার রায়ে জানিয়ে দেয়, সোনালিকে দ্বিতীয় বার উপাচার্য পদে পুনর্বহালের এক্তিয়ার রাজ্যের নেই। আদালত সোনালিকে উপাচার্য পদ থেকে অপসারিতও করে। এর পরই হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান সোনালি। পাশাপাশি রাজ্য সরকারও এ নিয়ে আবেদন করে সুপ্রিম কোর্টে। ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ও হিমা কোহলির ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হয়। মঙ্গলবার সেই মামলারই রায় ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্ট।
রাজ্যপালের পদে থাকাকালীন জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের টানাপড়েনের মধ্যে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে সোনালিকে পুনর্নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য প্রশাসন।
উপাচার্য-পদে সোনালির প্রথম দফার মেয়াদ ২০২১ সালের ২৭ অগস্ট শেষ হয়ে গিয়েছিল। তাঁকে পুনর্নিয়োগের জন্য রাজ্যপাল তথা আচার্যের কাছে প্রস্তাব যায়। রাজ্যপাল রাজ্য প্রশাসনের কাছে কিছু ব্যাখ্যা চেয়েছিলেন। তার উত্তর না-দিয়ে পর দিন থেকেই সোনালিকে চার বছরের জন্য পুনর্নিয়োগ করে রাজ্য। এর বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা হয়েছিল। অভিযোগ ছিল, এই নিয়োগ ইউজিসি-র নিয়মবিরুদ্ধ। সর্বোপরি রাজ্যের এই ক্ষমতাই নেই। রাজ্যের যুক্তি ছিল, শিক্ষা আইনে সংশোধনের ফলে সরকার এই নিয়োগের ক্ষমতা পেয়েছে। আচার্য-রাজ্যপাল সিদ্ধান্ত না-নেওয়ায় রাজ্য সরকারই সোনালিকে নিয়োগ করেছে। সেই মামলাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়। তারই রায় জানা গেল মঙ্গলবার।