হ্যাকারের কবলে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন হ্যাকিংয়ের কবলে পড়েছে। স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় সংবাদ সম্প্রচারের সময় হ্যাকার গ্রুপ এর দখল নেয়। এ সময় টেলিভিশনের পর্দায় সংবাদ বন্ধ হয়ে ভেসে ওঠে একটি মুখোশ।
এরপর পর্দায় আসে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির একটি ছবি, যার চারপাশে আগুনের শিখা।
পর্দায় আলী খামেনির কপাল নিশানা করা হয়েছে বন্দুকের লিজারের আলো দিয়ে। খামেনির নিচে দেখা যাচ্ছে কুর্দি তরুণী মাহসা আমিনিসহ চলমান আন্দোলনে নিহত দুই তরুণীর ছবি।
গ্রুপটি নিজেদের ‘আদালত আলী’ বা ‘আলীর ন্যায়বিচার’ বলে পরিচয় দেয়।
সম্প্রতি তেহরানে পুলিশ হেফাজতে মাহসা আমিনি নামের এক তরুণীর মৃত্যুর প্রতিবাদে দেশটিতে ছড়িয়ে পড়া আন্দোলনের মধ্যে নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর গুলিতে তিনজন নিহতে পরপর হ্যাকিংয়ের ঘটনাটি ঘটে।
‘সঠিকভাবে’ হিজাব না পরার অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর পুলিশি হেফাজতে মারা যাওয়া মাহসা আমিনি এখন গোটা ইরানে নারীর পোশাকের স্বাধীনতার দাবিতে ছড়িয়ে পড়া আন্দোলনে ‘প্রতিরোধের প্রতীক’ হয়ে ওঠেছেন।
কুর্দি তরুণী মাহসাকে গত ১৩ সেপ্টেম্বর তেহরানের ‘নৈতিকতা পুলিশ’ গ্রেপ্তার করে। ইরানের পশ্চিমাঞ্চল থেকে তেহরানে ঘুরতে আসা মাহসাকে একটি মেট্রো স্টেশন থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি সঠিকভাবে হিজাব পরেননি।
পুলিশ হেফাজতে থাকার সময়ে মাহসা অসুস্থ হয়ে পড়েন, এরপর তিনি কোমায় চলে যান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৬ সেপ্টেম্বর তার মৃত্যু হয়। তার পরিবার ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন শুরু থেকেই দাবি করছে, গ্রেপ্তারের সময় মাহসার মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে লাঠি দিয়ে আঘাত করে পুলিশ। এ কারণেই পরে তিনি চেতনা হারিয়ে কোমায় চলে যান।
তবে ইরান সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, মাহসার মৃত্যুর কারণ ‘অসুস্থতাজনিত’। মাহসার মৃত্যুতে দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।