অভিনন্দন বুয়েট, একেই বলে নেতৃত্ব
কিউএস ওয়ার্ল্ড রেঙ্কিং-এ আমাদের বুয়েটের অসাধারণ অগ্রগতি। প্রকৌশলী ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর মাঝে এক লাফে ৩৪৭তম থেকে ১৮৫তম পজিশনে চলে এসেছে। এই বিশাল জাম্প বা উন্নতি কি এমনি এমনি হয়ে গেছে? না।
বিশ্বের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় যেই নিয়ম অনুসরণ করে উন্নত হয়েছে সেই নিয়ম অনুসরণ করলে যেকোন প্রতিষ্ঠানই উন্নত হবে। এর কোন ম্যাজিক বিকল্প নেই। বুয়েটের বর্তমান ভিসি কিছু যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে তার ফলেই এই যুগান্তকারী উন্নতি সম্ভব হয়েছে।
আমাদের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য এটা একটা দারুন মেসেজ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও ইদানিং কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে কিন্তু তা যথেষ্ট না। আশা করি বাংলাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় এই উন্নতির কারণগুলো বিশ্লেষণ করে পদক্ষেপ নিতে।
আরও পড়ুন: কিউএস র্যাংকিংয়ে বড় অগ্রগতি বুয়েটের
বুয়েট কি করেছে?
প্রতিটি ভালো মানের গবেষণা পত্র প্রকাশের জন্য শিক্ষকদের ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শিক্ষকদের গবেষণা বরাদ্দ বৃদ্ধি করেছে। ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের পার্ট-টাইম চাকরির ব্যবস্থা করছে যেন টিউশন করাতে ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়ে সময়ের অপচয় না হয়।
সরকারের কাছে বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য দাবি জানিয়ে সফলও হয়েছে। আবার গবেষণা ল্যাব উন্নত করার জন্য ২৫০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প সরকারের কাছে পাঠিয়েছে। এরকম আরো অনেক উদ্যোগ নিয়েছে বলেই একটা পজিটিভ সুবাতাস বইছে যার প্রতিফলন এই রেঙ্কিং-এ ঘটেছে।
বিশ্বের যেইসব বিশ্ববিদ্যালয় উন্নত হয়েছে তারা কি করেছে এই প্রেসক্রিপশন কিন্তু ক্লাসিফাইড কিছু না। এই প্রেসক্রিপশন উম্মুক্ত। আমরা সবাই জানি উন্নত বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিয়মগুলো কি কি।
কয়েকদিন আগে লিখেছিলাম যে আমরা যদি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষক নিয়োগ ও প্রমোশন নীতিমালা ও বরাদ্দের পরিমান অদল বদল করি তাহলে খুব দ্রুত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মত হয়ে যাবে। পুরোটা হবে না কারণ রাজনৌতিক পরিবেশ বিশেষ করে একই সাথে ছাত্র রাজনীতির ধারার অদল বদলও দরকার।
অভিনন্দন বুয়েট, দুঃসাহসী। একেই বলে নেতৃত্ব। এভাবেই একজন ইতিহাসে ঠাঁই নেয়।
লেখক: অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়