জিপিএর পেছনে ছোটার শিক্ষা না দিয়ে মানুষ হওয়ার শিক্ষা দিন

তাসরিফ খান
তাসরিফ খান  © সংগৃহীত

রেজাল্ট হয়েছে আজ। চারপাশে দেখছি খুশির চেয়ে আফসোস বেশি। ৪.৯ পেয়ে A+ এর আফসোস আবার ৩.৯ পেয়ে ৪ পাবার আফসোস। কেউ কেউ তো রীতিমত A+ পেয়েও মার্ক নিয়ে আফসোস! ফুটফুটে ফুলের মত সুন্দর মানুষের বাচ্চাগুলোকে আমরা কেমন যেন একটা গাধার রেইসে ঠেলে দিচ্ছি দিন দিন।

আমাদের অভিভাবকদের অনেকের মাঝেই এক রকমের মানসিকতা খেয়াল করেছি যা হলো আমরা জীবনে যা করতে পেরেছি কিংবা পারিনি তা আমরা আমাদের সন্তানদের দিয়ে যেভাবেই হোক করাতে চাই। এতে করে আমাদের এই বাচ্চাদের উপর যে কি ভয়ানক রকমের মানসিক প্রেসার তোরি হয় তা আমরা ভাবতেই ভুলে যাই।

আরও পড়ুন: জেএসসি-জেডিসির প্রভাব এসএসসিতে, বুক ভেঙেছে অনেকের

একটার পর একটা রেইস একটার পর একটা রেইস। ঠিকমত দমটা ফেলার আগেই এদের মাথায় আবার চাপিয়ে দেওয়া হবে যে এবার যে করেই হোক একটা ভাল কলেজে চান্স পেতেই হবে, তা না হলে জীবনে আর কিছুই রইবে না।

আমার লেখা পড়ে কেউ কেউ ভাবতেই পারেন ‘মার চাইতে মাসির দরদ বেশি হয়ে গেলো’ বা এরকম কিছু তবে আমি মূলত বলতে চাইছি ভালোকরে লেখাপড়া করা বা ভাল স্কুল-কলেজে চান্স পাওয়া খারাপ কিছু না। তবে ভাল স্কুল-কলেজে চান্স না পেলে জীবন শেষ হয়ে যাবে বা এর জন্যে খাওয়া-ঘুম বাদ দিয়ে ধ্যানে বসে যেতে হবে এমন কোন কথা নেই।

আরও পড়ুন: খারাপ রেজাল্ট করে যারা হতাশ, তাদের জন্য আমি আছি

দিনদিন যে আমাদের চারপাশে ডিপ্রেশনের রোগীর সংখ্যা বাড়ছে এর দায়ভার কিন্তু আমাদের অভিভাবকদের কিছুটা হলেও নিতে হবে। এভাবে অসুস্থ রেইস চলতে থাকলে কিন্তু ডিপ্রেশনের মহামারী গ্রাস করবে আমাদের তরুণ সমাজের উপর।

সময় থাকতে আসুন আমরা আরেকটু সচেতন হই। যে যা রেজাল্ট করেছে সেটাকে সেলিব্রেট করি। আমি নিশ্চিত প্রতিটা ছাত্রছাত্রী তার সর্বোচ্চটা দিয়েই চেষ্টা করে সাফল্য অর্জনের। দয়াকরে আপনারা এই সাফল্যগুলোকে কোন মার্কস বা পয়েন্টের মাঝে আবদ্ধ করে ওদের এই আপ্রান চেষ্টাকে ছোট করবেন না।

অভিভাবকদের বিনীত অনুরোধ করছি এই ছেলেমেয়েগুলোকে একটু শান্তিতে দম নিতে দিন। বাচ্চাদেরকে মার্কস বা পয়েন্টের পেছনে ছোটার শিক্ষা না দিয়ে বরং মানুষের মত মানুষ হওয়ার শিক্ষা দিন। [ফেসবুক থেকে সংগৃহীত]

লেখক: সঙ্গীতশিল্পী


সর্বশেষ সংবাদ