ক্লাসরুমে পড়ানো আর শেখানো এক না
ক্লাসরুমে পড়ানো আর শেখানো এক না। আপনি যদি শুধু পড়ান, তাহলে আপনার হাতে প্রচুর সময় থাকবে। আর আপনি যদি ছাত্র ছাত্রীদের শেখাতে চান, তাহলে খবর আছে। পড়ানো ফুল টাইম কাজ না, কিন্তু আন্তরিকভাবে কিছু শেখানোর চেষ্টা করা ১০০ ভাগ ফুলটাইম কাজ এর চেয়েও বেশী।
আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখন পড়ানো হয় কিন্তু শেখানোর গুরুত্ব কমে গেছে। কারণ বলা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণার জায়গা। কিন্তু গবেষণার নামে যা হয় তার একটা বড় অংশ হইলো বুদ্ধিবৃত্তিক আবর্জনা।
এর সবচেয়ে বড় ভিকটিম হইলো শিক্ষকতা, যেইটা একটা ফুল টাইম প্রফেশন। আর পশ্চিমা বিশ্ব থেকে উচ্চতর ডিগ্রী নিয়া আইসা আমরাও তোতা পাখির মতন বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা গবেষণা করি। আর গবেষণার ভাব নিয়া শিক্ষকতা বা গবেষণা কোনটাই ঠিক মত করি না।
আর যারা গবেষণা করেন বলে মনে হয় তাঁরা বেশীরভাগ কনসালট্যান্সী করেন অথবা গাদা গাদা অর্থহীন জার্নাল পাবলিশ করেন। সেইসব গবেষণা হইছে শুধুমাত্র জার্নালের পাতা ভরানোর জন্য বা প্রমোশনের জন্য। কোন অনুসন্ধিৎসু মনের গভীর কোন প্রশ্নের উত্তরের জন্য না।
এইসবের ভীড়ে গুটিকয়েক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক যারা ক্লাসরুমে ১০০ ভাগ দিয়ে পড়ান আবার উন্নত মানের সত্যিকারের গবেষণা করেন তাঁরা অতিমানব। সেইসব অতিমানব মানবী বাংলাদেশে বিরল। তবে যেই আছেন তাঁদের সেলাম।
থুক্কু শুধু বাংলাদেশে না গোটা বিশ্বেই বিরল। কারণ দুইটা ফুল টাইম কাজ একসাথে ভালো ভাবে করতে গেলে আসলেই অতিমানব হইতে হয়।
লেখক: সহকারি অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়