শিক্ষক নিয়োগের জন্য ‘বাংলাদেশ এডুকেশনাল সার্ভিস’ নামে আলাদা পরীক্ষা নিন
- আসিফ ইমতিয়াজ
- প্রকাশ: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৬:৪৯ PM , আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৭:৪৭ PM
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, “বাংলাদেশে এই মুহুর্তে অনেক শিক্ষক ঘটনাচক্রে শিক্ষক।” যারা বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি বা বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক থাকা অবস্থায় অন্য চাকরির প্রস্তুতি নেন, তাদের জন্য শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্য শতভাগ সঠিক। কারা নেন, কেন নেন, সবাই জানে। তর্কের কিছু নেই। সবাই জানে।
নাগরিক হিসেবে স্বাভাবিকভাবে ন্যায্য সেবা যেটা পাওয়ার কথা, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেটা পাওয়ার জন্য আমাদের কাঠখড় পোড়ানো লাগে। যে কারণে মানুষ যাদের কাছে ন্যায্য সেবাটুক পায় তাদের প্রভুজ্ঞান করা শুরু করে। এই আনহেলদি সিস্টেমের দৌরাত্ম্যের কারণে সরকারি কলেজের শিক্ষকগণ এখন শিক্ষকতার পরিচয়ের বদলে নিজেদেরকে ক্যাডার সার্ভিসের কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিতেই বেশি গর্ববোধ করেন।
একজন শিক্ষক কেন অন্য দশজনের মত হবেন? শিক্ষকদের সম্মান আর মর্যাদা কোন তলানিতে গিয়ে ঠেকলে এরকমটা হয়? এই সমস্যার সমাধানও মন্ত্রীদের করার সুযোগ আছে।
বাংলাদেশ এডুকেশনাল সার্ভিস (বিইএস) নামের একটা পাবলিক পরীক্ষা নেন। শিক্ষা ক্যাডারকে বিসিএসের টেকনিক্যাল ডোমেইন হিসাবে চিন্তা না করে আলাদা একটা সার্ভিস হিসাবে চিন্তা করেন। প্রাইমারি, সেকন্ডারি স্কুলের শিক্ষকদের বেতন আর মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন।
একটা ফিজিবিলিটি স্টাডি করেন, শিক্ষকদের বেতন আর মর্যাদা বাড়ায়ে দেন, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ে শিক্ষকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। ৩-৪ বছর পর থেকেই গুণগত পরিবর্তন দেখা যাবে।
শিক্ষকতা আর ইমামতি কোন করে খাওয়ার জিনিস না। মহান পেশা। এই দুই মহান পেশাই জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, আর গ্রাম পর্যায়ে সবচেয়ে অবহেলিত এবং আন্ডারপেইড।
সেবাপ্রদানের চাকরি আর শিক্ষাদান এক না। এই সত্য যত দ্রুত নীতিনির্ধারকরা বুঝবেন, তত লাভ।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) মহান শিক্ষা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপকমিটি আয়োজিত ‘শিক্ষা: ২০৪১ সালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বাস্তাবিক কৌশল’ শীর্ষক এক সেমিনারে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, “আমাদের শিক্ষকদের মধ্যে একটা বড় অংশ ঘটনাচক্রে শিক্ষক। যারা হয়তো অন্য কোনো পেশায় না গিয়ে এই পেশায় এসেছেন। আমাদের প্রশিক্ষিত শিক্ষক প্রয়োজন।”
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, এমআইএস বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়