‘গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষাটি যেন মানবিক হয়’

ভর্তি পরীক্ষার্থী ও ইনসেটে
ভর্তি পরীক্ষার্থী ও ইনসেটে  © ফাইল ফটো

এবছর ইউজিসির নেতৃত্বে বিশটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রথমবর্ষে ভর্তিচ্ছু ছাত্রদের গুচ্ছ ভর্তিপরীক্ষা নিচ্ছে। এক অর্থে এর মাধ্যমে ছাত্ররা জেলায় জেলায় ঘুরে পরীক্ষা দেবার ঝামেলা থেকে মুক্তি পাবে।

নি:সন্দেহে ভাল উদ্যোগ। পরীক্ষা নেয়ার সুবিধার জন্য কমিটি প্রাথমিক সিলেকশনের মাধ্যমে আগেই ছাত্রদের যাচাই-বাছাই করে নিচ্ছে।কিন্তু এই করোনা পরিস্হিতিতে প্রাথমিক সিলেকশন পদ্ধতিতে কি একটু ছাড় দেয়া যায়?

গতবছর এইচএসসি পরীক্ষা হয়নি। এদের সিলেকশন হবে এসএসসি এবং জেএসসি পরীক্ষার নম্বরের উপর ভিত্তি করে। ঐ দুপরীক্ষার নম্বর হিসাব করে দেখা গেছে এইচএসসিতে গতবছর যে পরিমান জিপিএ-৫ পেয়েছে তা অন্যান্য কয়েক বছরের মোট জিপিএ-৫ এর সমান। এবং বেশিরভাগ জিপিএ-৫ পেয়েছে বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা। ফলে প্রাথমিক সিলেকশনে যারা ৪.৮ বা ৪.৭ পেয়েছে, তারাও বাদ পড়েছে। তেমনি এই গ্রেড পাওয়া বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা যখন বিভাগ পরিবর্তন করতে চাচ্ছে, তখনও বাদ পড়ে যাচ্ছে। এরা কিন্তু জিপিএ-৫ পাওয়াদের থেকে কোনমতেই কম মেধাবী নয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তিপরীক্ষা দেয়া যায় না। তাই সারাবাংলাদেশের বিশেষ করে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ছাত্রদের ভরসা এই গুচ্ছপরীক্ষা। তাই এই বাদ পড়া শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে সিলেকশন প্রসেস কি একটু শিথিল করা যায় না?

আজকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাদপড়া শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছে। সেখানে বাচ্চারা আবেগে বিষপানের চেষ্টা করেছে! পুলিশ বাঁধা দিয়ে তাদের থামিয়েছে। এই ২০২০ এর ব্যাচটা এমনিতেই হতভাগা। অটোপাস এদের কয়েকজনের মনে সাময়িক আনন্দ আনতে পেরেছে কিন্তু পরবর্তীতে যে এত বড় ক্ষতির মুখামুখি হবে তা এরা স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেনি। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন যে অটোপাস উচ্চশিক্ষায় কোন প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু সেই আশ্বাসের কোন বাস্তবায়ন দেখা যাচ্ছে না। এই ব্যাচটা এমনিতেই অটোপাসের খোটা সারা জীবন শুনবে, এদেরকে আর যন্ত্রণা দিবেন না। করোনা পরিস্হিতিতে কর্তৃপক্ষ ওদের এইচএসসি পরীক্ষা নিতে পারেনি, এখন আবার ভর্তি পরীক্ষা দিতে দিবে না! এতটা কঠিন ওদের প্রতি না হয়ে অনুরোধ করছি,এইবারের মত প্রাথমিক সিলেকশন বাদেই পরীক্ষা দিতে দিন এদের। যাচাই কিন্তু প্রথমেই সঠিকভাবে হয়নি, তাই এখন (এইচএসসি পরীক্ষা বাদে) যাচাই যথাযথ হবে না।

গুচ্ছ পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক ছাত্রদের আশ্বাস দিয়েছেন যে বাদ পড়া শিক্ষার্থীদের বিষয়টা দেখবেন। পরশু থেকে শুরু হবে চূড়ান্ত আবেদন।আশা করছি এই ছাত্রবান্ধব পরীক্ষাটি যেন ছাত্রদের জন্য মানবিক হয়।

লেখক: শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়


সর্বশেষ সংবাদ