শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়ে একটি প্রস্তাবনা

করোনার কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে শিশু
করোনার কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে শিশু  © ফাইল ফটো

এতো দীর্ঘ সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের নজির বিশ্বের কোথাও নেই। করোনার মহামারি সময়ে কোনো কোনো দেশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখলেও কিছুদিন পর তা খুলে দেয়। কিন্তু বাংলাদেশে আজও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। ফলে শিক্ষা ক্ষেত্রে চলছে বন্ধ্যত্ম। শিক্ষার্থীরা অলস সময় কাটাতে বেছে নিয়েছে মোবাইল ফোন। আর এ ফোনের নেগেটিভ দিকগুলোই তাদের আকৃষ্ট করছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীরা কিন্তু ঘরে বসে নেই। তারা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছে। মাস্তি করছে।

কিছু অংশ এলাকার কিশোর গ্যাংয়ের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। ফলে সমাজে তৈরি হচ্ছে অস্থিরতা। যাকগে আজকের বিষয় তা নয়, বিষয় হলো- করোনার কারণ দেখিয়ে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে আর কতো দিন? খোদ শিক্ষামন্ত্রী নিজেও তা জানেন না। সর্বশেষ তিনি বলেছেন, সকল শিক্ষার্থীকে টিকা নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়া হবে। অথচ টিকা আনতে গলদঘর্ম হচ্ছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। দ্বিতীয় ডোজের ঘাটতি ১৫ লাখ টিকা নিয়ে দুশ্চিন্তা সবার মাঝে। আর স্কুল-কলেজের ক্ষেত্রে যেন অসহায় সবাই।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনলাইনে ক্লাস নেয়ার কথা শোনা যায়। কিন্তু এতে কতোজন অংশ নিচ্ছেন শিক্ষকরাই জানেন না। এমপিওভুক্ত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বেশির ভাগই অনলাইন ফটোশেসন করছেন শিক্ষকরা। তাদের কাছে অনলাইন ক্লাস মানে হলো তা ভিডিও করে ফেসবুকে ছেড়ে দেয়া। শিক্ষকরা মিলেমিশে একাজ করছেন। ফেসবুকে ছেড়ে দেয়া শিক্ষকের এ ক্লাস কতোজন দেখে? এ নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন। অথচ একটু চিন্তা করলেই স্কুল- কলেজ খুলে দেয়া যেতে পারে। বিশেষ করে মাধ্যমিক স্কুলের ক্ষেত্রে নবম ও দশম শ্রেণি। কলেজের ক্ষেত্রে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি।

সকলেই জানেন শিক্ষা জীবনের মোড় ঘুরিয়ে নিতে এ চারটি ক্লাসের রয়েছে বিশেষ ভূমিকা। আর তাই এখানে একটি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হলো। ইচ্ছা করলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি ভেবে দেখতে পারেন। এ চারটি ক্লাস খুলে দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধানদের কিছু নির্দেশনা দেয়া যেতে পারে। এতে করে শিক্ষার্থীদের বিশাল একটা অংশ ফের লেখাপড়ায় ফিরে যেতে পারবে। এক্ষেত্রে যেটি করতে হবে তা হলো- প্রতিটি শ্রেণির তিনটি বিভাগকে দুইদিন করে স্কুলে উপস্থিত বাধ্যতামূলক করতে হবে।

ছয়দিনে তিনটি বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে সরাসরি ক্লাস নিতে পারবেন। দুই দিন ক্লাস করলেও বাকি চারদিনের জন্য হোমওয়ার্ক দেবেন শিক্ষকরা। এমনটি করলে স্কুলগুলো ফের জেগে উঠবে। আর প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত অটোপাস দিলেও কোনো ক্ষতি হবে না। মাঝে মাঝে তাদের ডেকে শুধুমাত্র হোমওয়ার্ক করে যাওয়ার নির্দেশনা দেয়া যেতে পারে।

লেখক: শামীমুল হক

সূত্র: মানবজমিন


সর্বশেষ সংবাদ