পড়াশুনা থেকে ছিটকে পড়ছে দরিদ্র মেধাবীরা
কোনো দেশ বা রাষ্ট্রের এগিয়ে যাওয়ার মূলে শিক্ষার প্রভাব অপরিসীম। আর তাই তো রাষ্ট্রের মেরুদণ্ড হিসেবে শিক্ষাকেই নির্ধারণ করা হয়েছে। অথচ, এই মেরুদন্ড আজ করোনার রোষাণলে পৃষ্ট প্রায়। টানা ১৫ মাস ধরে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা অনলাইন আর বাসাবাড়িতেই গড়াগড়ি খাচ্ছে।
করোনার অজুহাতে শিক্ষালয়গুলোতে ছুটির আগ্রাসন বিস্তর হচ্ছে। শিক্ষালয় ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে এক বিশাল ব্যবধান। আর এই ব্যবধানের কারণেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে পড়াশুনার প্রতি অনিহা ও আলস্যতা গ্রাস করেছে।
গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীরা পরিবারের বোঝা হয়ে উঠায় ছিটকে পড়ছে পড়াশুনা থেকে। গ্রামের অনেক শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ সময় শিক্ষালয় থেকে দূরে থাকার কারণে লিপ্ত হয়ে পড়েছে আড্ডাবাজি আর নানা অনৈতিকমূলক কার্যক্রমে। অন্যদিকে শহরের শিক্ষার্থীরাও ঘরবন্দি হয়ে থাকতে থাকতে মানসিকভাবে সংকটের মুখামুখি হয়ে পড়ছে।
আর আমরা যারা গ্রাজুয়েশন চলমান, তারা তো পড়েছি নানা বিপাকে। একদিকে গ্রাজুয়েশন করতে গিয়ে বছরকে বছর সেশনজটে আটকে যাচ্ছে আমাদের জীবন। আর অন্যদিকে সামান্য চলার মতো টিউশন ও হারিয়ে ফেলতেছি অনেকে।
নদীর স্রোতের মতো প্রবহমান থাকে সময়ের ঘড়ির কাটা। করোনার প্রাদুর্ভাব যে আমাদের সময়কে ধরে রেখেছে এটা ভাবা তো বোকামি। রবার্ট ব্রাউনিংয়ের একটা উক্তি আছে, ‘‘একটা দিন চলে যাওয়া মানে, জীবন থেকে একটা দিন ঝরে যাওয়া’’। আমাদের দিনগুলো মূল্যবান করার লক্ষ্যে আমাদের পরিচালনায় যারা নিয়োজিত তাদের এলার্ট হওয়া উচিৎ। শিক্ষার্থীরা যাতে সময়গুলো যথাযথ ভাবে খাটাতে পারে সে ভাবে নিশ্চিত করা উচিৎ।
তাই সরকার ও শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালকদের উদ্দেশ্য করজোড় হাতে বলি- আমাদের ভবিষ্যত পথকে মূল্যহীন না করে মূল্যবান করে তুলতে সহায়ক হয়ে উঠুন। শিক্ষালয়গুলোকে অনতিবিলম্বে খুলে দেয়ার ব্যবস্থা করুন।
কেননা, শিক্ষার্থীরাই হলো দেশ ও জাতির অগ্রগতির ধারক ও বাহক, সভ্যতা ও সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখার অস্ত্র, ভবিষ্যৎ নির্মাতা, ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার প্রতীক। এ প্রসঙ্গে এম.কে বলেছেন- The students are the future leaders of the country who could fulfill country's hopes being capable.
যুগে যুগে এই শিক্ষার্থীরাই রচনা করেছে ভালোবাসার স্বর্গ। তারাই নিদ্রাচ্ছন্ন জাতির অভিমুখে জাগ্রত হওয়ার গান সুধায়, তাদের কন্ঠেই প্রভাত-পাখির কলগীতি। তাদের এগিয়ে যাওয়ার জন্য পথগুলোকে সতেজ করে দিন।
লেখক: শিক্ষার্থী, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা কলেজ