মাকে নিয়ে ধর্মীয় উগ্র মন্তব্য ইসলামের শিক্ষা নয়: তারানা হালিম
মা দিবসে চঞ্চল চৌধুরীর তার মায়ের সাথে ফেসবুকে দেয়া ছবিতে ধর্ম নিয়ে কুরুচিপূর্ণ কিছু মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি এ্যাড. তারানা হালিম।
এ বিষয়ে তিনি লিখেছেন, ইসলাম একজন মাকে একজন সন্তানের জীবনে-একবার,দুইবার নয় -তিনবার পর পর উচ্চ আসন দিয়েছে। ইসলাম ধর্ম যেখানে মা-কে শুধু মা হিসেবেই আখ্যায়িত করেছে ,ধর্ম ভেদে কোন বিভাজন করেনি,সেখানে এই সন্তান কারা যারা “মা দিবসে”- কোন হিন্দু মা’র ছবি দেখলে কুৎসিত মন্তব্যে মেতে ওঠে !! আশ্চর্য মানব সন্তান এরা -প্রসব বেদনা কি হিন্দু-মুসলমান মা ভেদে কম বা বেশী হয়? নাকি ধর্মভেদে সন্তান লালন পালনে মা'দের কস্ট কম বা বেশী হয়? সন্তানের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গে ধর্ম ভেদে কোন মার অনুভূতির তারতম্য ঘটবে কি? ঘটবে না। এসব ঘটে কিছু উদ্ভট মানুষের মস্তিস্কে যারা সামাজিক মাধ্যমে হিন্দু আর মুসলমান মায়ের মাঝে বিভাজন করেন, মা’দের ছবিতে ধর্মের কারণে অশালীন মন্তব্য করেন। এই বিশেষ সন্তানদের অনুরোধ করবো- তারা যেন নিজ নিজ মা’র কাছে যান -তাকে জিজ্ঞেস করেন তিনি অন্যের মাকে নিয়ে করা নিজ সন্তানের (তা সেই মা-র ধর্ম যাই হোক না কেন ) এহেন কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যে হতাশ কিনা বা তিনি নিজ সন্তানের এমন অপরাধ ক্ষমা করবেন কিনা অথবা এমন সন্তান জন্ম দিয়ে তিনি লজ্জিত কিনা ?
আমার বিশ্বাস মা হিসেবে তিনি লজ্জিত হবেন এটি ভেবে যে তার শিক্ষার কোথায় কমতি রয়ে গেল !! (দোষটি তিনি নিজের ব্যর্থতা হিসেবেই দেখবেন-সব মাই তাই করেন )। আমার মনে হয় এসব কদর্য মন্তব্য যারা করেন তাদের নারীদের অশালীন মন্তব্য করাটা একধরণের বাজে অভ্যেসে পরিণত হয়েছে। এমন বিকৃত অভ্যেসেরই বহিপ্রকাশ এসব মন্তব্য। তারা উগ্র, তারা কুসন্তান, তারা সাম্প্রদায়িক।
একজন মুসলমান সন্তান যেমন মাকে ভালোবাসে একজন হিন্দু সন্তানও মাকে তেমনি ভালোবাসে। তাই নিজ মা’কে নিয়ে দেয়া পোস্ট এ অশালীন মন্তব্য দেখলে সে ব্যথিত হয়, ক্ষুব্ধ হয়। অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী সহ অনেকে এমন ঘটনার শিকার হয়ে ব্যথিত হয়েছেন। মা’র পাশে এমনই শক্তভাবে সুসন্তান হিসেবে প্রতিবাদ করবেন মার অপমানের। আপনারা তাই করেছেন। সমাজে এটাই কাম্য। মন চাইলেই যা খুশী লেখা যায় বটে, তবে সুশিক্ষায় শিক্ষিত কোন মায়ের সন্তান এমনটি করে না- কারণ নিজের মানসিক কদর্যতাকে তারা জয় করতে পেরেছেন। যারা পারেননি তাদের জন্য চরম তাচ্ছিল্য বরাদ্দ রইলো।