অটোপাসের ভোগান্তি, হতাশায় ভর্তিচ্ছুরা
গত বছর এইচএসসি পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও করোনার প্রকোপে স্থগিত হয়ে যায় পরীক্ষাটি। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর বছরের শেষ দিকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের আলোচনায় অটোপাসের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ২০১৫ জেএসসি বা সমমান ও ২০১৮ এসএসসি বা সমমানের ফলাফলের ভিত্তিতে একই বছরের অক্টোবরের ৭ তারিখ এইচএসসি বা সমমান এর ফলাফল প্রকাশিত হয়। রেকর্ড সংখ্যক ১৩ লাখ ৬৭ হাজার ৩৭৭ জন কৃতকার্য হয় এবং জিপিএ ৫ ধারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১ লাখ ৬১ হাজার ৮০৭ জন যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ সংখ্যা।
তবে গত বছর অক্টোবরে ফল ঘোষণা করা হলেও এখন পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করতে পারেনি ইউজিসিভুক্ত কোনো বিশ্ববিদ্যালয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হঠকারিতায় ২ এপ্রিল ২০২১ সারাদেশে ১৯টি কেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধি তোয়াক্কা না করেই এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পরীক্ষাটি অনুষ্ঠিত হলেও এপ্রিলের মাঝামাঝি করোনার প্রকোপ তীব্র হওয়ায় পূর্বঘোষিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ২১ মে থেকে ৩১ শে জুলাই নিয়ে যাওয়া হয়। এতে চরম হতাশার সৃষ্টি হয় শিক্ষার্থীদের মাঝে। শিফট ভিত্তিক পরীক্ষার আয়োজন করা যেত বলে অভিমত অনেকের। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রদত্ত সার্কুলার নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এইচএসসি মূল্যায়নে গাফিলতি এবং সেই মূল্যায়নের ভিত্তিতে সিলেকশনে পরীক্ষায় বসতে দেয়ার ব্যাপারটিকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না অনেকেই।
তিন থেকে চার বছর পূর্বের ফলাফল দিয়ে মেধা যাচাই হয় না বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট এমনকি ইঞ্জিনিয়ারিং গুচ্ছ (রুয়েট ,কুয়েট, চুয়েট), GST সিলেকশন পদ্ধতি নিয়েও হতাশ ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। অথচ ব্যাপারটিকে খুব বেশি গুরুত্বের সাথে দেখছেন না অনেকেই। উচ্চ শিক্ষা থেকে এভাবে বঞ্চিতদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবা উচিত, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গাফিলতি শিক্ষার্থীদের জীবনের গতিপথ পাল্টে দিচ্ছে। সময়ের বিবর্তনে জাতির কাল হয়ে দাঁড়াবে এই শিক্ষাব্যবস্থা।
লেখক: রাফাত (ময়মনসিংহ)