‘অটোপাস’ শব্দটি বর্জন করি
অনেকেই ‘অটোপাস’ বলে এইচএসসি ও সমমান উত্তীর্ণ ছেলে-মেয়েদের হেয় করার চেষ্টা করছেন। আসলে ওদের তো কিছু করার ছিল না। ওরা করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতির শিকার। এই পদ্ধতিতে ফল প্রকাশ ছাড়া ভালো বিকল্প কেউ দিতে পেরেছেন বলেও মনে হয় না।
আমরা প্রায় সবাই মহামারীর মধ্যে লাখ লাখ ছেলেমেয়ের পরীক্ষা না নেওয়াকেই সমর্থন করেছি। মেনে নিয়েছি, আগে জীবন, তারপর পরীক্ষা বা লেখাপড়া। কিন্তু নানা বক্তব্য ও সমালোচনায় এখন বলা হচ্ছে, লেখাপড়া ছাড়াই ওরা পাস করেছে। বিষয়টি মোটেও তা নয়।
দুই বছর পড়াশোনা করে পরীক্ষায় বসার আগে তারা করোনা মহামারীর শিকার হয়েছে। সঙ্গত কারণে সরকার ওদের পরীক্ষা নিতে পারেনি। গত প্রায় একটি বছর যে উৎকণ্ঠার মধ্যে এই ছেলে-মেয়েরা সময় পার করেছে তা কী নিন্দুকেরা ভেবে দেখেছেন? ওরা পড়াশোনা করে পরীক্ষা দিতে না পারায় আগের দুটি পাবলিক পরীক্ষার ভিত্তিতে ওদের ফল দেওয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতির জন্য কেউই প্রস্তুত ছিল না। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, মহামারী তো আর বলেকয়ে আসে না।
করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশ নিজেদের মতো করে বিকল্প ব্যবস্থায় পরীক্ষা নিচ্ছে, ফল প্রকাশ করছে। এভাবে ফল প্রকাশ করাটা ছিল আমাদের বিকল্প। আমরা যদি আরও অপেক্ষা করতাম, তাহলে লেখাপড়ার জট ছাড়ানো প্রায় অসম্ভব হয়ে যেত। এভাবে ফল প্রকাশ করায় এমন কোনও বড় ক্ষতি হয়ে যায়নি। তাই আসুন আমরা ‘অটোপাস’ শব্দটি বর্জন করি। কিছু সংবাদমাধ্যমও এই শব্দটি দেদার ব্যবহার করছে, যা দুঃখজনক।
লেখক: প্রাক্তন হেড অব নিউজ, দৈনিক প্রথম আলো