‘আওয়ার কান্ট্রি ইজ এ ল্যান্ড অব ব্রিলিয়ান্ট মাইন্ড কিলার!’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি ডিপার্টমেন্টে দুটি লেকচারার পদের জন্য আবেদনকারীদের মধ্যে পাঁচজন পিএইচডি করা প্রার্থী ছিলো। কিন্তু তাদের কাউকে তো নিয়োগ দেয়া হয়নি। এমন হবে, এটা তো সবাই জানতো। যারা আবেদন করেছে, তারাও জানে। তবুও হয়তো করেছিলো, স্বপ্ন নিয়ে। আশা নিয়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস থেকে পিএইচডি করা ড. মোরশেদা মাহবুব, যুক্তরাজ্যের কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করা ড. শুভ্র প্রকাশ নন্দী, ডেনমার্কের কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করা ড. জিনাত জেরিন হোসাইন ও ড. জান্নাতুল ফেরদৌস এবং ঢাবি থেকে পিএইচডি করা ড. শারমিন জামান ইমনকে বাদ দেয় বাছাই বোর্ড। —কী চমৎকার না বিষয়টা!
তাহলে কাকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে?—যাদের সাথে ডিপার্টমেন্টের রাজনৈতিক প্রভাবশালী শিক্ষকের পরিচয় আছে, সম্পর্ক আছে, কিংবা যাদের সাথে সরকারী দলের নেতাদের সম্পর্ক আছে। অথচ, এই যে ছেলে-মেয়েগুলো যারা বিদেশ থেকে পিএইচডি নিয়ে গেলো, তারা যদি দেশে ফিরে না যেতো, তাহলে আপনারা তাদের চৌদ্দগুষ্ঠিকে গালাগালি করতেন।—বলতেন, ওরা দেশের টাকায় পড়াশুনা করে বিদেশে গিয়ে সাদা চামড়ার কাছে নিজেদের বিকিয়ে দিয়েছে।
পিএইচডি করে কেউ কোন দেশে লেকচারার হয় না। পিএইচডি-পোস্টডক থাকলে সরাসরি এসিসট্যান্ট প্রফেসর হয়। চীন দেশে সরাসরি এসোসিয়েট প্রফেসর বা প্রফেসর হওয়া যায়! কিন্তু ওরা পিএইচডি করে নিজের দেশে লেকচারার পদে আবেদন করেছিলো! অথচ ওদের বন্ধুরা কিন্তু কোন ডিগ্রি-মিগ্রি ছাড়াই ওখানে এসোসিয়েট প্রফেসর হয়ে বসে আছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাঙ্কিং মায়ের হাতের মোয়া না! বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়, এশিয়ার র্যাঙ্কিং-এ যদি পাঁচশতের মধ্যেও থাকে, তাহলেও আমি সন্দেহ করবো। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে চাইবো কারা, কীভাবে, কোন ক্রাইটেরিয়ায় এই র্যাঙ্কিং করেছে। এগুলো প্রাচ্যের (মানে ব-দ্বীপের) হার্ভাড, এমআইটি আর অক্সফোর্ড হয়ে থাকারই যোগ্য।
আওয়ার কান্ট্রি ইজ এ ল্যান্ড অব ব্রিলিয়ান্ট মাইন্ড কিলার!
লেখক: যুক্তরাষ্ট্রের পিটিসি থেরাপিউটিকস’র সিনিয়র সায়েন্টিস্ট