দুঃখিনী মায়ের চোখের জলে গড়া ছাত্রদলের আজ জন্মদিন

তানভীর বারী হামিম
তানভীর বারী হামিম  © সংগৃহীত

আজ ১ জানুয়ারি। দেশের সংকটকালে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার এবং সামনের সারি থেকে নেতৃত্ব প্রদানকারী সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ১৯৭৯ সালের এই দিনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান গঠন করেন ছাত্র সংগঠনটি। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ছাত্র রাজনীতি ছিলো টালমাটাল। শিক্ষা অঙ্গনগুলো এতই বিশৃঙ্খল ছিলো যে, ছাত্র রাজনীতি সম্বন্ধে মানুষের মধ্যে তৈরি হয়েছিল ভুল ধারণা।

ঠিক সে সময়েই শহীদ প্রেসিডৈন্ট জিয়াউর রহমান প্রবর্তন করলেন তার বিখ্যাত রাজনৈতিক দর্শন ‘বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ’। প্রণয়ন করলেন ১৯ দফা কর্মসূচি এবং গঠন করেন রাজনৈতিক দল। সে সময়েই ভিশনারী হিসেবে খ্যাত জিয়াউর রহমান অনুভব করেছিলেন- তার রাজনৈতিক দর্শন ও কর্মসূচির সঠিক বাস্তবায়নে। সর্বোপরি ছাত্র রাজনীতির হারানো মর্যাদা ফিরিয়ে এনে শিক্ষা উপযোগী ক্যাম্পাস বিনির্মাণে প্রয়োজন একটি দেশপ্রেমিক ও সুশৃঙ্খল ছাত্র সংগঠন।

সেই প্রেরণা থেকেই শহীদ জিয়া ইংরেজি নতুন বছরের প্রথম প্রহরে সৃষ্টি করলেন ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল’। মূলনীতি হিসেবে শিক্ষা-ঐক্য-প্রগতি’র মেলবন্ধনে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আত্ম-কর্মসংস্থান সৃষ্টিই ছিল এর লক্ষ্য। ৯০’এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সর্বোচ্চ সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে স্বৈরাচার পতনে ভূমিকা রেখেছিল ছাত্রদল।

১/১১ এর উত্তাল সময়ে ছাত্র আন্দোলন গড়ে তুলেছিল এই সংগঠনটি। গত এক যুগে ছাত্রদল দেশের স্বার্থে সর্বোচ্চ ত্যাগের উদাহরণ হিসেবে দৃষ্টান্ত দাঁড় করিয়েছে। লাখ-লাখ মামলায় শুধু সারাদেশের ছাত্রদল নেতা-কর্মীরা জর্জরিতই নয়, গুম-খুনের শিকার হয়েও রাজপথে সরব থেকেছে। দীর্ঘ এক যুগ ক্যাম্পাসে সহাবস্থান হারালেও সর্বশেষ ডাকসু’র মাধ্যমে আবারো ক্যাম্পাসমুখী হয় ছাত্রদল।

বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সরাসরি নির্দেশনায় সাবেক ছাত্রনেতাদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করে তৃনমূলের সরাসরি ভোটে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের কমিটি গঠন করেন। সেই কমিটিতে সভাপতি নির্বাচিত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র ফজলুর রহমান খোকন এবং সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ইকবাল হোসেন শ্যামল। কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন পরবর্তী সময়ে প্রতিনিয়ত রাজনৈতিক আতুঘড় খ্যাত ‘মধুর ক্যান্টিন’-এ তাদের নেতৃত্বে অবস্থান নিতে শুরু করে ছাত্রদল।

চেয়ার-টেবিল কেড়ে নিয়ে ছাত্রলীগ হীনমন্যতার পরিচয় দিলেও টলাতে পারেনি। ফ্লোরে বসেই অবস্থান কর্মসূচী পালন করে ছাত্রদল। পরপর দুবার ছাত্রদল নেতাকর্মীদের উপর ছাত্রলীগ হামলা চালিয়ে রক্তাক্ত করলেও, সেই রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে পরবর্তীতে মধুর ক্যান্টিনে অবস্থান নিয়েছিলো। সমগ্র ছাত্রদলকে জবাবদিহিতায় এনে তৃনমুলের মতামতের উপর ভিত্তি করে গঠন হচ্ছে সারা দেশের কমিটি।

ছাত্রদলের ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সকল শুভানুধ্যায়ী, সর্বস্তরের নেতৃবিন্দের প্রতি রইলো ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা। একমাত্র জিয়া পরিবারের হাতেই সঠিকভাবে পরিচালিত হবে তরুণ সমাজের প্রিয় এই সংগঠন। মুক্তির আন্দোলনে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করবে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।

লেখক: প্রচার সম্পাদক, কবি জসীমউদ্দীন হল শাখা ছাত্রদল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়


সর্বশেষ সংবাদ