০৮ ডিসেম্বর ২০২০, ১২:৩০

প্রধান শিক্ষকদের টাইমস্কেল সংক্রান্ত দুটি মামলা ও দশম গ্রেড নিয়ে কিছু কথা

  © টিডিসি ফটো

আমাদের প্রধান শিক্ষক সমিতির অপর অংশের নেতাগণ তারা ১০ গ্রেডের জন্য মামলা করেছিলেন এবং তারা নাকি মামলায় রায়ও পেয়েছেন। রায়ে নাকি লেখা আছে ০৯/০৩/১৪ হতে ১০ গ্রেড ও ২০১৮ সনে সিলেকশন গ্রেড প্রদানের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আমরা সবাই জানি যে, ২০১৫ সালের জাতীয় পে স্কেলে টাইম স্কেল প্রথা বিলুপ্ত করা হয়েছে।

টাইম স্কেলের পরিবর্তে চাকুরীর ১০ বছর ও ১৬ বছর পুর্তিতে দুইটা উচ্চতর গ্রেড প্রদান করা হবে। যেখানে ২০১৫ সালে জাতীয় পে স্কেলে সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল বাতিল করা হয়েছে। সেখানে কি করে ২০১৮ সালে সিলেকশন গ্রেড হয়?। দশম গ্রেডের মামলার রায়টা প্রশ্নবিদ্ধ বলে আমার মনে হয়েছে। এই মামলার আপিল নিঃস্পত্তি হলে রায় বাতিল হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে শতভাগ।

তাছাড়া ০৯/০৩/২০১৪ থেকে দশম গ্রেড হলে ০৯/০৩/১৪ থেকে টাইমস্কেল হয় কি করে? দশম গ্রেড ও টাইমস্কেল দুটো পরস্পর বিরোধি ও সাংঘর্ষিক বিষয়। ০৯/০৩/১৪ থেকে ১০ গ্রেড হলে ০৯/০৩/১৪ হতে টাইমস্কেল হতে পারেনা। কেননা দশম গ্রেডে টাইমস্কেল নেই। তাই এক ব্যক্তি কি করে ০৯/০৩//২০১৪ইং হতে দশম গ্রেড ও একই তারিখ হতে টাইমস্কেল প্রাপ্তির মামলার বাদি হতে পারে বিষয়টি আমার বোধগম্য হচ্ছেনা।

এতোদিন তারা দশম গ্রেডের মামলা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন । দশম গ্রেডের মামলা নিস্পত্তি না করেই তারা হঠাৎ করে দশম গ্রেডের বিরোধী টাইমস্কেল নিয়ে মামলা করে বসলেন কেন?। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে নানা মুখি প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এ বিষয়টি তাদের পরিস্কার করে ব্যাখ্যা করা দরকার বলে মনে করি।

যেখানে টাইমস্কেল নিয়ে আমাদের একটা মামলা আছে। মামলার রায়ও শিক্ষকদের পক্ষে হয়েছে। সরকার মামলার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন। আপিল নিষ্পত্তির জন্য কজলিষ্টে তালিকাভুক্তও হয়েছে। করোনার কারণে কোর্ট বন্ধ থাকায় শুনানির নিষ্পত্তি হতে বিলম্ব হচ্ছে । কোর্ট খুললেই হয়তো আপিল নিস্পত্তি হয়ে যাবে বলে আমরা আশা করছি। সেখানে নতুন করে মামলা করার অর্থ কি?? তাদেরতো উচিৎ ছিলো আমাদের টাইমস্কেল মামলায় সাহায্য সহযোগিতা করা ও পরামর্শ প্রদান করা। কিন্ত তারা তা না করে নতুন করে মামলা করে করলেন? তারা দশম গ্রেডও চাই টাইমস্কেলও চাই। দুটো তো এক সাথে হতে পারেনা।

তাদের আসল উদ্দেশ্য অন্য খানে। শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতো অবস্থা তাহলো টাইমস্কেল নিয়ে মামলা করে টাইম স্কেল প্রাপ্তিতে বিলম্ব ঘটানো এবং টাইম স্কেলের কথা বলে শিক্ষকদের কাছ থেকে আদায় কৃত লক্ষ লক্ষ টাকা মামলার কথা বলে হজম করে নেওয়া। এটা হতে পারেনা হতেও দেওয়া যাবেনা। কেননা প্রধান শিক্ষকগণ তো ওতো বোকা নয়, তারা ভালো মন্দ বুঝতে পারে। এটা কি পাগলের দেশ? যে, এখানে যা ইচ্ছে তাই করা যায়?

তাই আমি টাইমস্কেল বঞ্চিত সকল শিক্ষকদের প্রতি উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি আপনারা ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে ঐক্যবদ্ধ হন। আমরা আপনাদের সাথেই আছি। আমরা জুম মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিয়ে অচিরেই ঢাকাতে বসতে চাই। আপনারা সিদ্ধান্ত দিবেন। ভালো কাজে আপনাদের সহযোগীতা চাই। আপনারা পাশে থাকলে আমরা অবশ্যই টাইমস্কেল আদায় করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ।

একটি বিষয় আমি অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, কিছু শিক্ষক নেতা আমাদের সমিতির মহাসচিব জনাব, দেলোয়ার সাহেবকে নিয়ে কটুক্তি ও নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন। না-জেনে, না বুঝে ও সত্যতা যাচাই না করে একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে এরুপ বিরুপ মন্তব্য করা তাদের উচিৎ হয়নি।

একজন শিক্ষক বিমানে চড়তে পারবেনা এ কথা বলে পুরো শিক্ষক সমাজকে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছে। আমি জানি বিমানে উঠার মতো সক্ষমতা তার আছে। একজন শিক্ষকের লেখার ভাষা কেন এতো খারাপ হবে? শিক্ষকের লেখার ভাষা মার্জিত ও সহনশীল হওয়া উচিৎ। আমি এ ধরনের নেতিবাচক লেখার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি। সবাইকে ধন্যবাদ।

 

লেখক: সভাপতি, বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতি।