‘সম্মতি’ সাপেক্ষে শারীরিক সম্পর্কের শাস্তি কী?

মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন
মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন

ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।
আগের যে শাস্তির বিধান ছিলো, সেটির বাস্তবায়ন কতোটুকু হয়েছে?
আপনি ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করেন, আর ১০ বছর জেল দেন, অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন, অথবা প্রকাশ্যে ফাঁসি দেন, বাস্তবায়ন না হলে সেই আগের মতোই হবে।

আরেকটি বিষয় না বললেই না।
রিলেশনশিপকে কেন্দ্র করে যে ধরনের শারীরিক সম্পর্ক হয়, সেটির ক্ষেত্রে কি হবে? একদিকে বলা হয় "সম্মতি" তে শারীরিক সম্পর্ক করলে আইনের দৃষ্টিতে অপরাধ নয়। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় "সম্মতি" তে এ ধরনের সম্পর্ক করলেও পরবর্তীতে ছেলেকে ভিন্নভাবে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়, যখন মনোমালিন্য তৈরি হয়।

এখন প্রকৃত অর্থে যারা ধর্ষণের শিকার হয়, যেমন সুবর্ণচরের গৃহবধূ ধর্ষণ, সিলেটের এমসি কলেজের ঘটনা ইত্যাদি। এই ধর্ষণের ঘটনাগুলো আর "সম্মতি" তে বা বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্কের ঘটনা কি এক হতে পারে? নাকি শাস্তিও এক হতে পারে?

এখন বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী সম্মতিতে বা বিয়ের প্রতিশ্রুতিতে বা জোরপূর্বক যেটিই হোক না কেন, সবগুলো ঘটনাকেই ধর্ষণ বলে। এক্ষেত্রে উভয় ধরনের ঘটনার জন্য শাস্তি কি একই হবে? উভয় ঘটনা কখনো এক নয়, সুতরাং শাস্তির মাত্রাও এক হতে পারে না।

বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিয়ে না করা মেয়েটির সাথে যেমন প্রতারণা। আবার বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করা আরও বড় প্রতারণা। কিন্তু একজন বোন প্রতারিত কেন হবেন ? বিয়ে ব্যাপারটা তো ভাগ্যের একটি বিষয়।
একজন মেয়ে একটি ছেলের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করলো, কিন্তু ঐ ছেলেটির সাথে মেয়েটির বিয়ে হলো না। মেয়েটির বিয়ে হলো আরেকটি ছেলের সাথে। এক্ষেত্রেও তো পরের ছেলেটি প্রতারিত হলো।

আবার ছেলে- মেয়ের শারিরীক সম্পর্কের পরে ছেলে মেয়েটিকে বিয়ে করতে রাজি থাকলেও, পারিবারিক বা ছেলের বেকারত্ব অথবা অন্য কোন কারণে মেয়েটি ছেলেটিকে বিয়ে করলো না। এটির জন্য কি হবে? এখানে ছেলেও তো প্রতারিত হলো।
মনে করেন এই ছেলে অন্য আরেকটি মেয়েকে বিয়ে করলো,
এই মেয়ে ছেলের আগের সম্পর্কের কথা জানতো না।
না জানার কারণে মেয়েটিও তো প্রতারিত হলো।

এই যে সবখানে প্রতারণা। এই প্রতারণা কিভাবে বন্ধ করা উচিত? শুধু ছেলেকে শাস্তি দিলেই কি এই প্রতারণা বন্ধ হয়ে যাবে?
নাকি মৃত্যুদণ্ডের আইন করে, কিন্তু আইনের বাস্তবায়ন না করে কিভাবে ধর্ষণ বন্ধ করা সম্ভব?
কারণ পূর্বে যে শাস্তির বিধান ছিলো, সেটি বাস্তবায়ন করা হয়নি। [ফেসবুক থেকে]

লেখক: আহ্বায়ক (ভারপ্রাপ্ত), বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ


সর্বশেষ সংবাদ