করোনা দুর্ভোগের এইচএসসি পরীক্ষা ও আমার বিকল্প প্রস্তাবনা
বিশ্ব দীর্ঘ ছয় মাস যাবত নোভেল করোনাভাইরাসের অতিমারীতে পর্যুদস্ত। ছয় মাস ধরে বন্ধ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও একাডেমিক কার্যক্রম। সব থেকে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে রয়েছে এইচএসসি তথা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বারবার সিদ্ধান্ত নেয়ার তারিখ-দিন পেছানোই দিকবিদিক হয়ে পড়ছে কোমলমতি এসব শিক্ষার্থীরা।
কেননা, এইচএসসি পরীক্ষা পরবর্তী সময়ে রয়েছে ভর্তি পরীক্ষা। সচরাচর এইচএসসি পরীক্ষার পর তিন মাস একজন শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণের সময় পেয়ে থাকে। কিন্তু, বর্তমান এ প্রেক্ষাপটে যদি এইচএসসি পরীক্ষা নিতে হয়, তাহলে সেটি নেয়ার প্রথম শর্ত হবে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যগত নিরাপত্তা। আর এ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের রয়েছে পরীক্ষা কেন্দ্র বাড়ানো, সিলেবাস ছোট করা, বিষয়বস্তু কমানোসহ বিভিন্ন সুপারিশ।
যদি তাই হয়ে থাকে, তবে এইচএসসি পরবর্তী সময়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণের কোন সুযোগ থাকবে না। কেননা, পর্যাপ্ত সময় কোন শিক্ষার্থীই পাবে না। আবার, এইচএসসি কবে নাগাদ হবে এটাও করোনার সেকেন্ড ওয়েভ এর আগমনের কাছে অনেকটাই ধরাশায়ী।
প্রতিটি শিক্ষার্থীই ৮ম শ্রেণিতে জেএসসি এবং ১০ম শ্রেণিতে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে এবং বিশ্ববিদ্যালয়/মেডিকেল ভর্তির ক্ষেত্রে এসএসসির মার্ক/গ্রেড মূল্যায়নের সুযোগ থাকলেও মূল্যায়ন হয়না প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা জেএসসি।
যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির ক্ষেত্রে এসএসসি ও এইচএসসির গ্রেডকে মূল্যায়নের একটা মাধ্যম ধরা হয়, তাই এবার জেএসসি এবং এসএসসির গ্রেড পয়েন্টকে যদি এইচএসসি গ্রেডের বদলে মূল্যায়ন করা হয় তাহলে কিন্তু অর্ধেক সমস্যার সমাধান মিলে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে আগের মতনই ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহন করতে পারবে শিক্ষার্থীরা।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই বিশ্ববিদ্যালয়/মেডিকেলগুলোর ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ শুরু করে দিলে এই করোনাকালীন গ্যাপ পূরণ সম্ভব। সম্ভব একজন শিক্ষার্থীর নিজেকে গুছিয়ে প্রস্তুত করার এবং দু:শ্চিন্তা মুক্ত থাকার।
এ ক্ষেত্রে অনেকে প্রশ্ন করতে পারে, তাহলে এই দু’বছরের পড়ার ফলাফল কি। তাদের জন্য উত্তর, যেহেতু ভর্তি পরীক্ষাগুলোর প্রশ্ন এইচএসসি পাঠ্যপুস্তককে ভিত্ত করেই হয়ে থাকে, এ ক্ষেত্রে সহজে এই দুই বছরে একজন শিক্ষার্থীর মূল্যায়ন সম্ভব। তাই শিক্ষা মন্ত্রনালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহবান বিষয়টি ভেবে দেখার।
লেখক: শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়