২৬ জুলাই ২০২০, ০১:১৮

সামর্থবান মুসলমানদের অবশ্যই কুরবানী দিতে হবে

মাওলানা এম এ করিম ইবনে মছব্বির  © টিডিসি ফটো

আল্লাহর হুকুমে হযরত ইব্রাহিম (আ.) তাঁর কলিজার টুকরো হযরত ইসমাইল (আ.)-কে কুরবানী দিতে উদ্যোত হয়েছিলেন। একমাত্র আল্লাহর হুকুম মানতে এবং আল্লাহকে রাজি ও খুশি করার মানষে। কুরবানী হলো আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় মন ও আত্নাকে আল্লাহর জন্য বিলিয়ে দেয়া। ইব্রাহিম (আ.)-কে আল্লাহ পাক পরীক্ষা করেছিলেন, আর উনিও সে পরীক্ষায় কামিয়াব হয়েছিলেন।

পুরো বিশ্বে মহামারী করোনাকালীন অবস্থায় সকল সামর্থবান মুসলমানদেরকে আল্লাহর নিকট তাওবার পাশাপাশি পশু কুরবানীর সাথে সাথে অন্তরকে ও কুরবানী দিয়ে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে হবে। এবারের করোনাকালীন কুরবানীতে অনেক উপকার রয়েছে। যেমন, করোনাকালীন বিপর্যস্ত অর্থনীতি চাঙ্গা ও সতেজ হবে। ঝিমিয়ে পড়া অর্থনীতি কুরবানীর দেওয়ার ফলে আরো এগিয়ে যাবে।

আল্লাহর পাক পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করেন যে, আপনার রবের উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ুন এবং কুরবানী করুন (সুরায়ে কাওসার, আয়াত দুই)। নামাজ হলো শারীরিক ইবাদত আর কুরবানী আর্থিক ইবাদত সমূহের মধ্যে বিশেষ গুরুত্বের অধিকারী। কুরবানী না দিয়ে, তার টাকা গরীবদের দান করলে হবে না।

১০ জিলহজ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত সকল সামর্থবান ধনীদের জন্য কুরবানী দেওয়া ওয়াজিব বা সুন্নত। এ বিষয়ে কুরবানী না দিয়ে সে অর্থ গরীবদের মাঝে বিলিয়ে দেয়ার কোন সুযোগ ইসলামী শরীয়তে নেই। তবে হ্যাঁ, যে সকল ধনী লোকেরা বিগত বছরগুলোতে একটা গরুর বদলে ১০টা গরু কুরবানী দিছেন, তাঁরা এবারের চলমান করোনাভাইরাস মহামারীকালীন সময়ে বেশী গরু বা ছাগল কুরবানী না দিয়ে সেই টাকাটা গরীব অসহায়দের মাঝে দান করতে পারেন। তবে সামর্থবানদেরকে কুরবানী দিতে হবে।

করোনাকালীন সময়ে অর্থনীতির অবস্থাও ভালো নেই। আল্লাহকে রাজী এবং খুশি করার জন্য কুরবানী দিতে হবে। রাসুল (সা.)-কে জনৈক ব্যক্তি বললো, হে আল্লাহর রাসুল (সা.) কুরবানী জিনিসটা কি? উত্তরে রাসুল (সা.) বললেন, কুরবানী হলো তোমাদের মুসলিম জাতির আদি পিতা হযরত ইব্রাহিম (আ.) এর অতি গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। যাদের সাড়ে সাত ভরি স্বর্ণ অথবা সাড়ে ৫২ তোলা রূপা বা সমপরিমাণ নিছাবের সম্পদ আছে, তাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব।

মহান আল্লাহ মানুষের মন দেখেন, মানুষের নিয়ত দেখেন। আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে মহামারী নভেল করোনাভাইরাস থেকে হেফাজত করুন এবং সামর্থবানদেরকে কুরবানী দেওয়ার তাওফিক দান করুন, আমীন।

লেখক: অতিথি অনুবাদক, মসজিদুল হারাম কাবা শরীফ, সৌদি আরব এবং সাবেক ইমাম ও খতীব বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ মসজিদ