২৪ জুলাই ২০২০, ১৭:৩৬

প্রশ্ন ফাঁসের কারণে জীবন নষ্ট হওয়া শিক্ষার্থীর দায় কার?

  © টিডিসি ফটো

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন প্রেস থেকেই মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র একাধিকবার ফাঁস হয়েছে বলে আজ জানিয়েছে সিআইডি। আচ্ছা এই যে একই বিল্ডিংয়ে প্রেস, সেখানে গণ যাতায়াত, সিকিউরিটির লেশমাত্র নেই এগুলো কেউ দেখেননি? এখানে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ছাপাবার সিদ্ধান্ত যারা যারা নিয়েছেন তারা কারা?

আমাদের মন্ত্রী-সচিব-ডিজিরা কোথায় ছিলেন তখন? বারবার প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার পর তারা কী কেউ একবারের জন্য হলেও প্রেসটা দেখতে গিয়েছিলেন? এই যে হাজার হাজার মেধাবী ছেলেমেয়ের জীবন নষ্ট হলো এর দায় কে নেবে? আমি তো বলবো, দেশের স্বাস্থ্যখাতে যুগের পর যুগ ধরে হরিলুট চলছে আমরা এখন তার কিছুটা মাত্র দেখতে পাচ্ছি।

দেখুন: ২০১৫ সালের মেডিকেল প্রশ্ন ফাঁসকারী চক্র শনাক্ত

আর মন্ত্রী-সচিব-ডিজি-ঠিকাদারসহ সব চক্র এক না হলে এই লুটপাট হতে পারতো না। কেউ একজনও যদি প্রতিবাদ করতেন তাহলেও হতো। কেউ তা করেননি। মিলিমিশে তারা লুটপাট করেছেন। এদের সবাইকে বিচারের আওতায় আনা উচিত।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিদায়ী ডিজি তো পরিস্কার বলে দিয়েছেন, লিজেন্ড সাহেদের সঙ্গে চুক্তির পুরোটা হয়েছে সচিবের নির্দেশে। সেটা যে হয়েছে তার প্রমাণ ডাক্তাররা বারবার বলার পরেও, এমনকি অভিযোগ দেওয়ার পরেও সচিব সাহেব ব্যবস্থা নেননি। উল্টো ডাক্তারকে বদলি করেছেন।

দেখুন: মেডিকেলের প্রশ্নপত্র ফাঁস হতো স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকেই: সিআইডি

এই যে দেখেন ডিজি গেছে, পরিচালক গেছে, মন্ত্রী সাহেবও হয়তো যাবেন, কিন্তু দুর্নীতিবাজ যে প্রধান আমলা সাহেদের কাছ থেকে সুবিধা নিতে তাকে দিয়ে চুক্তি করাইছেন, যে আমলা পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছেন তাদের কী হবে?

সরকারি দপ্তরে খালি আমি আর আমার প্রতিষ্ঠান দুর্নীতিমুক্ত লিখে রাখলেই সব দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। আসলেই প্রতিষ্ঠানটা দুর্নীতিমুক্ত রাখতে হয়। রাষ্ট্রকে বলবো, স্বাস্থ্য খাতে যখন হাত দিয়েছেন পুরো চক্রের বিচার করুন। মন্ত্রী-সচিব-আমলা-কামলা-ডিজি-পাজি যেই জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন।

এমন উদাহরণ সৃষ্টি করেন যাতে ভবিষ্যতে এরা ভয় পায়। দেশে-বিদেশে যে যেখানে পালিয়ে আছে সবাইকে ধরে আনুন। একটা চোরাও যেন বাদ না যায়। পাশাপাশি এইসব চোরদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করুন। একটার পর একটা খাত ধরুন। নানা পেশায় সততার সঙ্গে যে মানুষটা লড়ছে তারা অন্তত আশা পাক। করোনায় আমরা বাঁচি-মরি এই দেশটা ঠিক হোক। নতুন প্রজন্ম একটা সুন্দর দেশ পাক। নয়তো প্রজন্মের কাছে আজীবন সবাইকে অপরাধী হয়ে থাকতে হবে।

লেখক: উন্নয়নকর্মী ও সাবেক সাংবাদিক