২৮ জুন ২০২০, ০৮:৪৮

চাকরি প্রার্থীদের বাড়ছে অনিশ্চয়তা, বেকারত্ব বৃদ্ধির আশংকা!

  © ফাইল ফটো

করোনাভাইরাসের কারণে বিপর্যস্ত জনজীবন। সারা বিশ্ব আজকে থমকে গেছে, ব্যহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাপন। অর্থনীতিতে প্রভাব পড়েছে ব্যাপকভাবে। এমন পরিস্থিতিতে বন্ধ রয়েছে চাকরির বিজ্ঞপ্তি। ফলে বেকারদের মাঝে বেড়েছে হতাশা। এই মহামারির মাঝে একটা অনিশ্চয়তার মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে সময়।

মার্চ মাস থেকে বন্ধ সব ধরনের পরীক্ষা এবং সার্কুলার এই পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হতে পেরে সে বিষয়ে কেউ কোন ইঙ্গিত দিতে পারছে না। এর মধ্যে অনেকের মাঝে বয়স চলে যাওয়ার একটা চিন্তা রয়েছে। বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ২০ লাখ মানুষ চাকরির বাজারে যোগদান করে। প্রতি বছর যে হারে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পড়াশোনা শেষ করে সে হারে চাকরির বাজারে প্রবেশ এর সুযোগ না ফলে দেশে এমনিতেই বেকারত্বের হার অনেক বেশি। আর করোনা ভাইরাসের কারণে সেই সংকট আরও প্রকর আকার ধারণ করছে।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বেশেষ ২০১৭ সালের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী,বাংলাদেশে মোট কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর ৬ কোটি ৩৫ লাখ। এর মধ্যে কাজ করেন ৬ কোটি ৮ লাখ নারী পুরুষ আর ২৭ লাখ বেকার। বাংলাদেশে বেকারত্বের হার ৪.২% হলেও যুব বেকারত্বের হার ১১.৬ শতাংশ। করোনাভাইরাসের কারণে সেটি আরও কয়েক গুণ বেড়েছে।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাস সংকটে বিশ্বে প্রতি ছয়জনের একজন বেকার হয়েছে, আর বাংলাদেশের প্রতি চারজন যুবকের মধ্যে একজন কর্মহীন বা বেকার রয়েছে। আইএলও’র সংজ্ঞা অনুযায়ী, সপ্তাহে এক ঘন্টা কাজের সুযোগ না পেলে এই ব্যক্তিকে বেকার হিসেবে ধরা হয়। সেই হিসেবে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে বেকারের সংখ্যা ছিলো ২৭ লাখ।

তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই সংখ্যা বাস্তবে আরও অনেক বেশি। এই করোনাভাইরাসের ফলে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাকরি হারাচ্ছে অনেকেই। এই পরিস্থিতি নতুন কোন নিয়োগ দিচ্ছে না বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গুলোতে। বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পে কর্মরত রয়েছে বড় একটা অংশ। করোনার কারণে এই শিল্পে ব্যাপক ক্ষতি হয়। সরকার প্রণোদনা দিলেও খুব বেশি কাজ হয়নি।

আবু হানিফ

ইতোমধ্যে অনেক গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে গেছে। আর যেগুলো চালু আছে সে গুলোতে কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে শ্রমিক ছাঁটাই না করার জন্য বলা হচ্ছে। করোনা মহামারি স্বাভাবিক হলেও অর্থনৈতিক এই মন্দা কাটাতে আরও সময় লাগবে। যার প্রভাব পড়বে ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি চাকরির বাজারেও।

আইএলও-র একটি প্রতিবেদনে বলছে যে,কোভিড-১৯ মহামারির কারণে এই বছরে দ্বিতীয় প্রান্তিকে এসে আগামী তিন মাসের মধ্যে সাড়ে ১৯ কোটি মানুষ তাদের পূর্ণকালীন চাকরি হারাতে যাচ্ছে। বর্তমানে বিশ্বের পূর্ণ বা খণ্ডকালীন মোট কর্মশক্তির প্রতি পাঁচজনের মধ্যে চারজনের পেশা কোন না কোনভাবে করোনা ভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই ক্ষতির শিকার বড় একটি অংশ তরুণ তরুণীরা।

করোনার কারণে চাকরির বাজারে বাড়ছে অনিশ্চয়তা ফলে বেকারদের মাঝে বাড়ছে হতাশা। এমন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে কবে সেটা অনিশ্চিত। তাই চাকরির জন্য অপেক্ষা না করে বিকল্প কিছু একটা করার চিন্তা করতে হবে। উদ্যোক্তা হিসেবে ছোট বড় পরিসরে কিছু একটা শুরু করা যেতে পারে এতে নিজের অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পাবে পাশাপাশি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও হবে।

তথ্য সূত্রঃ বিবিসি

লেখক: যুগ্ম আহবায়ক, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ