যুদ্ধটা শেষ করতে আপনাকে বাঁচতে হবে
পেশাগত কারণে বহু বহুবার দেখা হয়েছে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর সাথে। আমার দেখা বিখ্যাত সব মানুষ থেকে এই মানুষটি আলাদা। গায়ে সবসময় দেখতাম হাফ হাতার প্রিন্ট শার্ট। সম্ভবত দুই-তিনটা শার্টই ঘুরেফিরে পরেন। প্যান্টটা দেখলে মনে হতো একটিমাত্রই প্যান্ট। কারণ ঘষা লাগতে লাগতে পায়ের কাছে ছিঁড়ে যাওয়া বিবর্ণ একটা প্যান্ট পরনে দেখতাম সবসময়।
একটা বেল্ট পরেন। কথা বলার সময় কিছুক্ষণ পরপর কোমরে হাত দিয়ে প্যান্ট উপরে তুলতেন। নাইনটি মডেলের একটা বহু পুরনো সাদা রঙের ছোট্ট প্রাইভেট কার ব্যবহার করেন। ভেতরে এসি নেই। যার কারণে গাড়িতে মিনি ফ্যান লাগিয়েছেন।
সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় সবসময় থাকেন হাস্যজ্জ্বল। বিনয়ের ঘাটতি নেই। সরল মনে যা বিশ্বাস করেন তাই বলেন। কথায় কোনো চালাকি থাকে না। কোনো কুতর্কে যান না।
বিএনপির অনেক অনুষ্ঠানে গিয়ে বেগম খালেদা জিয়ারও সমালোচনা করেছেন। ড. কামাল হোসেনের পাশে বসে তার সমালোচনা করতেও ছাড়েননি। এরকমই একজন নির্বিবাদী মানুষ মি. চৌধুরী।
ভোগ, বিলাস, নিজের স্বার্থের কথা ভাবেন না কোনদিন। ভাবনায় শুধু দেশ আর সাধারণ মানুষ। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে শুরু করা তার যুদ্ধ এখনও চলমান। সর্বশেষ যুদ্ধটি করছেন করোনা থেকে মানুষকে বাঁচাতে। যুদ্ধটা শেষ করতে আরও কিছুকাল বাঁচতে চান বলে নিজেই ফেসবুকে লিখেছেন।
শ্রদ্ধেয় জাফরুল্লাহ চৌধুরী, আপনি কি জানেন- হাতে গোনা কয়েকটা মানুষ ছাড়া সবার কাছে আপনি অতি প্রিয় ব্যক্তিত্ব। আপনি দেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী কিংবা এমপি হননি। কিন্তু আপনার তুলনা শুধুই আপনি। সাধারণ মানুষের হৃদয়ে আপনার আসনটি চিরস্থায়ী।
আর এই মানুষদের জন্যই আপনাকে আরও কিছুকাল বাঁচতে হবে। শেষ করতে হবে যুদ্ধটা। কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করি, আপনি যেন অতিদ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেন।
লেখক: গণমাধ্যম কর্মী
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)