১৬০০ টাকার রেমডেসিভির বাংলাদেশে ৬ হাজার!
আমি প্রথমেই বলে নেই আমি করোনাতে এই ওষুধের ক্লিনিক্যাল কার্যকারিতা নিয়ে কনভিন্সড না। তারপরেও এই ওষুধ নিয়ে হাইপ তৈরি করেছে বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানীগুলো। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, তারা বাংলাদেশের নাগরিকের ঘরপোড়ার মধ্যে ওষুধ কোম্পানীগুলো আলুপোড়া খেতে চাচ্ছে।
এই ওষুধটাকে কেইস স্টাডি হিসেবে নেয়া যেতে পারে। তখন বুঝা যাবে, বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানীগুলোর কার নিয়ত কেমন? রেমডেসিভিরের উৎপাদনে খরচ কত হতে পারে, আমি সেটা ওষুধ উৎপাদনের বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নিয়ে হিসাব করেছি। কাঁচামাল উৎপাদকের কাছে থেকে কাঁচামালের দাম নিয়েছি।
এইটা লায়াফিলাইজড ইনজেকশন। আমি এইটার জটিল টার্মিনোলজির মধ্যে যাবো না। তবে এইটা ইনজেকশন উৎপাদনের পদ্ধতি হিসেবে লায়াফিলাইজড টেকনোলজি তীব্র ঠান্ডায় ভায়ালের ভিতরের দ্রবণ থেকে সব পানি বের করে ফেলা হয়। বাংলাদেশের অনেক কোম্পানীর লায়াফিলাইজড টেকনোলজি জানা আছে ও তার জন্য যন্ত্রপাতি আছে।
আমি ধরে নিচ্ছি লায়াফিলাইজড করার যন্ত্রপাতি নেই। লায়াফিলাইজড করেই বিদেশ থেকে আমদানী করবে পাউডার। বাংলাদেশে শুধু ভায়ালে ভরবে। তাহলে উৎপাদন খরচ কত হবে?
রেডি টু ফিল লায়াফিলাইজড পাউডার: ১৬০ ডলার/ গ্রাম।
ভায়াল প্রতি কত খরচ হবে
রেমডেসিভিরের কাঁচামাল ১০০এম জি- ১৬ ডলার। ভায়াল, পানি, প্যাকিং- ০.৬ ডলার। ফ্যাক্টরি ওভারহেড খরচ- ০.৪ ডলার। উৎপাদনে খরচ কোন মতেই ১৭ থেক ১৮ ডলারের বেশী হবার কথা নয়। অর্থাৎ ১৫৮৫ টাকা সর্বোচ্চ হওয়ার কথা।
আর নিজেরা লায়াফিলাইজড করে নিলে উৎপাদন খরচ হবে ১২০০ টাকা। বেক্সিমকোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বলেছেন রয়টার্সকে, একেকটা ভায়াল তারা বিক্রী করবে ৫০০০-৬০০০ টাকায়। কী অবিশ্বাস্য মুনাফা করছে তারা, ভেবে দেখুন। মানুষের দুর্দশা নিয়ে মুনাফা করতে এদের একটুও বিবেকে বাধে না।
সকল প্রতিষ্ঠান যারা রেমডেসিভিরে উৎপাদন করবে, তাদের সবাইকে উৎপাদন খরচ প্রকাশ্যে জনগণকে জানাতে হবে। উৎপাদন খরচের উপরে বাংলাদেশের জনগন উৎপাদক কোম্পানীকে ২০-৩০ শতাংশ মুনাফা দিতে রাজী আছে। এর চেয়ে বেশী মুনাফা পৃথিবীর কোন জেনেরিক ওষুধের কোম্পানী করে না।
পড়ুন: এক রোগীর চিকিৎসায় লাগবে ৬০ হাজার টাকার রেমডেসিভির
লেখক: অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট, ব্লগার
ফেসবুক থেকে নেয়া।