০৫ মে ২০২০, ১৭:০৫

একদিনে আক্রান্ত ৭৮৬ এবং শপিংমল খোলার বিপদ

  © ফাইল ফটো

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসে কোন প্রতিষেধক আবিষ্কার না হওয়ায় লকডাউনকেই সমাধান হিসাবে দেখছে স্বাস্থ্যখাত সংশ্লিষ্টরা। তবে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে লকডাউনের মধ্যেই সীমিত পরিসরে দোকানপাট-শপিংমল খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সরকারের এমন সিদ্ধান্তে আলোচনা-সমালোচনা দুটোই এখন তুঙ্গে।

তবে এই মুহূর্তে মার্কেট এবং শপিংমল খোলার সিদ্ধান্ত ভুল বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আমানুল্লাহ ফেরদৌস। আর এটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন তিনি। নিচে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের পাঠকদের জন্য স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-

এই মুহূর্তে শপিংমল খোলার বড় বিপদ হলো দিনে ২/৩ হাজার নতুন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া। কেন? তাহলে শুনুন বুঝুন এবং কাউন্টার যুক্তি থাকলে দেখান:

১। শুধু ড্রপলেট নয়, এসির বন্ধ আবহাওয়াতে মাইক্রো পার্টিক্যালসের মাধ্যমে লোকজন করোনায় আক্রান্ত হবে এবং এনিয়ে আন্তর্জাতিক জার্নালে গবেষণা পেপার আছে (বাসার এসি ঠিক আছে)।

২। আমাদের দেশের মানুষ কিনার আগে কাপড়চোপড় এবং অন্যান্য জিনিসপত্র হাতাহাতি করে, গায়ে দিয়ে দেখে। এসব জিনিসপত্রে করোনাভাইরাস কয়েক ঘণ্টা জীবিত থাকে। এনিয়েও আন্তর্জাতিক গবেষণা আছে।

৩। এ উপলক্ষে মানুষ প্রচুর টাকাপয়সা হাতাহাতি করবে। টাকায় করোনাভাইরাস জীবিত থাকতে পারে কয়েক ঘণ্টা। এনিয়েও আন্তর্জাতিক গবেষণা আছে।

৪। মানুষ শপিংয়ে গেলে খাওয়া দাওয়া করতে চায়। এটা শপিং এর একটা অংশ। এতে ক্রোকারিজের মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে দ্রুত।

৫। মানুষ শপিংয়ে গেলে প্রচুর সাজুগুজু করে। ফলে তারা ভ্যানিটি ব্যাগে করে, মানি ব্যাগে করে, ঘড়ি, অলঙ্কার ইত্যাদিতে চড়িয়ে করোনা ঘরে নিয়ে আসতে পারে।

৬। শপিংয়ে গেলে মানুষ প্রচুর কথাবার্তা বলে, বার্গেনিং করে। কথাবার্তা বলে বলে বার্গেনিং করতে করতে মানুষ করোনা ঘরে নিয়ে আসতে পারে।

৭। এই মুহূর্তে উবার কিংবা পাব্লিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করা আত্মাহুতি দেয়ার সামিল। নিজস্ব ড্রাইভার গাড়ীতে তোলাও বিপদ। মনে রাখবেন প্রচুর মিডিয়া, হাসপাতাল, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ড্রাইভার এই মুহূর্তে করোনায় আক্রান্ত। আপনার ড্রাইভার কি পরিবেশে থাকে তা আপনাদের অনেকেই হয়ত জানেন না।

৮। গত সপ্তাহে হবিগঞ্জের সদর হাসপাতালে ভর্তি করোনা আক্রান্তের ৫২ জনের ৫১ জনেরই কোন উপসর্গ ছিলো না। দেশের বিশিষ্ট হেমাটোলজিস্ট অধ্যাপক ড. মনিরুজ্জামান বুঝতেই পারেন নাই তিনি করোনায় আক্রান্ত। ফলে, অফিস করে বাসায় ফিরলে সাডেন এট্যাকে তার মাল্টি অর্গান ফেইল করে যায় এবং তাৎক্ষনিকভাবে মারা যান।শপিং মলগুলোতে এই উপসর্গ বিহীন বাচ্চা এবং অপেক্ষাকৃত কম বয়সী করোনা রোগীর সংখ্যা বেশী থাকবে।

৯। এখন সরকার সিদ্ধান্ত নিক শপিং মল এক্ষুনি খুলবে কিনা আর আপনি সিদ্ধান্ত নিন ওয়ান-ওয়ে টিকেট এখুনি কিনতে চান কিনা (যদিও এই টিকেট সবারই এডভান্সড বুক করা আছে)?