১২ এপ্রিল ২০২০, ২১:৪২

তার কর্মযজ্ঞ দেখছি, বিস্ময়ের সকল সীমা অতিক্রম করছে

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী  © সংগৃহীত

২৫ দিনে ৩০১ শয্যার করোনা চিকিৎসার হাসপাতাল বানানোর উদ্যোগ নিলেন। অর্ধেক কাজ শেষ হলো। মিছিল-ভাঙচুর করে হাসপাতালের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হলো।

হতাশ না হয়, কিছু টাকা জোগাড় করে ১০ হাজার গরীব পরিবারকে খাওয়ানোর উদ্যোগ নিলেন। পর্যায়ক্রমে তা আরও বাড়াচ্ছেন। কোনো ঘোষণা-প্রচার প্রচারণা নেই। শুধু বললেন, আরও কিছু টাকা পেলে আরও বেশি মানুষকে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতে পারতাম।

আর বললেন, প্রবাসীদের টাকায় দেশ চলে। তারা এখন খুব কষ্টে আছেন। সরকারের উচিত তাদের পাঠানো থেকে এক বিলিয়ন ডলার এখন বিভিন্ন দেশে পাঠিয়ে তাদের সহায়তা করা।

করোনা পরীক্ষার কিট উদ্ভাবন করলেন তার গড়া প্রতিষ্ঠানের গবেষকরা। এই প্রতিকূল সময়েও ব্রিটেন থেকে কাঁচামাল আনার ব্যবস্থা করলেন। পৌঁছতে দেরি হওয়ায় চীন থেকে কাঁচামাল নিয়ে এলেন। কিট উৎপাদন শুরু হলো।

ভোল্টেজ ওঠা-নামাজনিত বৈদ্যুতিক গোলযোগে উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেল। অভিযোগ না করেই বললেন, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধা পেলে হয়ত উৎপাদন বন্ধ করতে হতো না। আমাদের জেনারেটর স্টার্ট হতে ৩০ সেকেন্ডের মত সময় নেয়। ফলে প্ল্যান্ট চালু রাখা গেল না। টেলিফোনে একটু বিমর্ষ মনে হলো।

পরের দিন খুশিতে টগবগ করতে করতে জানালেন, ব্রিটেন থেকে কাঁচামাল এসে পৌঁছেছে। বৈদ্যুতিক গোলযোগের সমস্যাও কাটিয়ে উঠেছি। দুই-তিন দিনের মধ্যে কিট উৎপাদন শুরু করে সরকারকে দিতে পারব পরীক্ষার জন্যে।

সরকারের থেকে পাঁচজন করোনা রোগীর রক্ত নিয়েও পরীক্ষা করে দেখিছি, আমাদের কিট শতভাগ সঠিক রেজাল্ট দিয়েছে। আমরা আগেও নিশ্চিত ছিলাম। এখন আরও নিশ্চিত। বিদ্যুৎ বিভাগ বা সরকারের কেউ খবর নেয়নি, কী সমস্যা বা কেন উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেল!

দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় ও আধুনিক কিডনি ডায়ালাইসস সেন্টার গড়ে তুলেছেন গরীব মানুষের জন্যে।

১৯৭১ সালে ভারতের মাটিতে গড়ে তুলেছিলেন ৪৮০ শয্যার বাঁশ-ছনের হাসপাতাল। যেখানে যুদ্ধে আহত মুক্তিযোদ্ধাদের অপারেশনও হতো। সেই হাসপাতালটি স্বাধীন দেশে নাম হয় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। নামটি বঙ্গবন্ধুর দেওয়া।

এখন তার দু’টি কিডনি প্রায় অকেজো। সপ্তাহে তিন দিন ডায়ালিসিস করতে হয়। একবার ডায়ালিসিসে সময় লাগে ৪ ঘন্টা। বয়স ও কিডনি সমস্যা নিয়ে করোনা ঝুঁকির শীর্ষে অবস্থান করছেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

(ফেসবুক থেকে নেয়া)