বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে মোদিকে কেন না বলবেন?
- মো. আবু রায়হান
- প্রকাশ: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১০:২৮ AM , আপডেট: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১১:২৪ AM
আসছে ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উদযাপনে সরকারি বেসরকারি উদ্যোগে নানান কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। আয়োজন করাটাও অস্বাভাবিক নয়। বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রের জন্য দিয়েছেন নেতৃত্ব ও তাঁর অসামান্য অবদানের বিনিময়ে আমরা আজ স্বাধীন দেশের নাগরিক। বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উদযাপনে একশ কোটি টাকার বাজেটও রাখা হয়েছে।কিন্তু বঙ্গবন্ধুর শত বার্ষিকী উদযাপনে কিছুটা বিতর্ক দেখা দিয়েছে। এ বিতর্ক বঙ্গবন্ধু কিংবা বাজেট নিয়ে নয়।বিতর্ক হচ্ছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির উপস্থিতি নিয়ে। মোদি ছাড়া অনুষ্ঠানে আর যেসমস্ত অতিথি ঢাকায় আসবেন তাঁরাও বিশ্বের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব৷ কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, মালয়েশিয়ার অন্তর্বর্তী কালীন প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ, সংযুক্ত আরব আমিরাতের যুবরাজ জায়েদ আল নাহিয়ান, ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি, ভারতের কংগ্রেস দলের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন-সহ অনেকেই। তবে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে মোদিকে নির্বাচন করা নিয়ে তীব্র বিতর্ক দেখা দিয়েছি।স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে মোদি ভারতের সবচেয়ে বিতর্কিত প্রধানমন্ত্রী ও আপাদমস্তক একজন চরম হিন্দুত্ববাদী। দেশে বিদেশে ব্যাপকভাবে সমালোচিত মোদি। গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে গত বছর নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ
বিনায়ক ব্যানার্জি বলেছিলেন," ভারতে উপযুক্ত নেতা নেই, জনপ্রিয় বিরোধী নেতার অভাবেই মোদি আজ প্রধানমন্ত্রী।" মোদি সম্পর্কে আরেক ভারতীয় নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেন।
আমেরিকান ম্যাগাজিন দ্য নিউ ইয়র্কারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন," মোদি সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে ভারতের বহু-ধর্মীয় ও বহুনৃতাত্ত্বিক পরিচয় নষ্টের চেষ্টা করছে।"
২০০২ গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে মোদির নীরব ভূমিকা তাকে গুজরাটের কসাই বানিয়েছে। যে দাঙ্গায় দুই হাজারেরও বেশি মুসলমান নিহত হন। মোদি ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত ভারতের ষোড়শ সাধারণ নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টিকে নেতৃত্ব প্রদানের মাধ্যমে প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন।এরপরের নির্বাচনে দ্বিতীয় বারের মতো ক্ষমতায় আসে মোদি। ক্ষমতায় এসেই মোদি ভারতকে চরম হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্রের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।যার অংশ হিসেবে আসামে বাঙালিদের তাড়ানোর নামে জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন( এনআরসি)চালু , সংবিধান প্রদত্ত কাশ্মীরের বিশেষ সুযোগ সুবিধার ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করেছে। তবে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ), জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) ও জাতীয় জনসংখ্যা নিবন্ধন (এনপিআর) নিয়ে ভারত বিগত দুই মাস ধরে উত্তপ্ত।সর্বশেষ দিল্লিতে ভারতীয় পুলিশ ও চরম হিন্দুত্ববাদীদের দ্বারা গত পাঁচদিনের হামলায় এ পর্যন্ত ৩৪ জন মুসলমান নিহত হয়েছেন৷ টার্গেট করে মুসলমানদের ওপর হামলা হচ্ছে। এসব ঘটনায় মোদির চরম সাম্প্রদায়িক মুখোশ আবারও উন্মোচিত হয়েছে। বহু ভাষাভাষী ও ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর রাষ্ট্র ভারতে ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র মোচনে বর্তমান মোদির সরকার বেশ তৎপর মনে হচ্ছে।বলা যায় ভারতকে হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্রের চেহারা দিতেই বিজেপি মরিয়া। এছাড়া তারা ধর্মীয় সংঘাত সৃষ্টি করে নির্বাচনে ফয়দা হাসিলও করতে চায়।
ভারতের বিতর্কিত সব সিদ্ধান্তে বেশ অস্বস্তিতে রয়েছে প্রতিবেশি বাংলাদেশ৷গত বছর ১২ ডিসেম্বর তিন দিনের ভারত সফর বাতিলের ঘোষণা দিয়ে ভারতকে হয়ত সেরকম বার্তাই দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ৷সফর বাতিলের কারণ হিসেবে অবশ্য সিএএ, এনআরসি বা এনপিআর-এর কথা বলা হয়নি৷ ভারত সরকারও সফর বাতিলের সিদ্ধান্তে কড়া কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি৷ গত ৭ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে মোদীকে প্রধান বক্তা করার ঘোষণা আসে৷এদিকে ডাকসু ভিপি মোদির বাংলাদেশে আগমন প্রতিহিত করার ঘোষণা দিয়েছেন। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে বলেন, মোদিকে দেশে আনা হলে রাজপথে জনতার অগ্নিস্ফুলিঙ্গ সৃষ্টি হবে। বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদ সাম্প্রদায়িক মোদিকে বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে আগমন ঠেকানোর হুশিয়ারি দিয়ে রেখেছে।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী মুজিববর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে ইসলাম ও মুসলিমবিদ্বেষী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশের জনগণ দেখতে চায় না বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন। বিবৃতিতে আল্লামা আহমদ শফী বলেন, মোদির প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে গুজরাট, কাশ্মীর, দিল্লিসহ অনেক রাজ্যে মুসলমানদের খুন করা হয়েছে। চরম নির্যাতন-নিপীড়ন চালানো হয়েছে। তাই যার হাতে এখনও মুসলিম গণহত্যার দাগ লেগে আছে, তার উপস্থিতি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশের জনগণ মেনে নেবে না। অবিলম্বে মোদির রাষ্ট্রীয় আমন্ত্রণ বাতিল করা হোক।এদিকে আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের মোদির আমন্ত্রণ বাতিল করার দাবি নাকচ করে দিয়েছেন।তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সাহায্যকারী ও সবচেয়ে বড় মিত্র দেশ ভারত। বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে ভারতের প্রতিনিধিত্বকে আমরা বাদ দেবো-এটাতো চিন্তাও করা যায় না।সব মিলিয়ে দিল্লিতে পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মীদের মুসলমানদের হত্যা ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দিল্লি ছাড়িয়ে ঢাকায়ও খানিকটা উত্তাপ ছড়াচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু ছিলেন অসাম্প্রদায়িক ব্যক্তিত্ব। যা তাঁর জীবনাচারে পরিলক্ষিত। তিনি সব ধর্মের মানুষের মাঝে ব্যবধান ঘুচিয়ে সাম্যের গান গেয়েছেন। সারা বিশ্বে তিনি অসাম্প্রদায়িক নেতা হিসেবে প্রশংসিত ও অবিসংবাদিত। ৫৫ বছরের বর্ণাঢ্য ঐতিহাসিক রাজনৈতিক জীবনের বঙ্গবন্ধু সম্প্রীতির কথা বলেছেন, শোষিতের পক্ষ নিয়েছেন। ফিদেল কাস্ত্রো তাঁর মৃত্যুতে বলেছিলেন, "শেখ মুজিবের মৃত্যুতে বিশ্বের শোষিত মানুষ হারাল তাদের একজন মহান নেতাকে,আমি হারালাম একজন অকৃত্রিম বিশাল হৃদয়ের বন্ধুকে। ”মোদি যেখানে হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা উসকে দিচ্ছে বঙ্গবন্ধু সেখানে হিন্দু মুসলিমের ঐক্যের জন্য দিন রাত পরিশ্রম করেছেন যা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী পাঠে জানা যায়। ভারত বিভক্তির আগের ১৯৪৬ সালে কলকাতার দাঙ্গা দমনে বঙ্গবন্ধু সাহসী ভূমিকা রাখেন। বেকার হোস্টেল থেকে তাঁর যাত্রা।১৬ আগস্ট ১৯৪৬ সালে কলকাতায় অকটারলনি মনুমেন্টের পাশে মুসলিম লীগের জনসভা হয়। সোহরাওয়ার্দী ছিলেন সভাপতি। প্রত্যক্ষ দিবস পালনে ও জনসভা আয়োজনে শেখ মুজিবুর রহমান মুখ্য ভূমিকা রাখেন। সভা চলাকালে কলকাতা শহরে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে দাঙ্গা শুরু হয়। দাঙ্গা চলে ১৬ থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত। চার হাজার লোক মারা যায়। ইতিহাসে এ ঘটনাকে বলা হয়, ‘দ্য গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং।’
সোহরাওয়ার্দী দাঙ্গা দমনে সাহসী ভূমিকা রাখেন।সেদিন ইংরেজ সেনাবাহিনী যদি এগিয়ে আসত তাহলে দাঙ্গায় এত লোক মারা যেত না। জীবনের ঝুঁকি সত্ত্বেও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা দমনে শেখ মুজিব তাঁর সঙ্গীদের নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। কলকাতার বাইরেও বিভিন্ন জায়গায় দাঙ্গা দমনে কাজ করেছেন বঙ্গবন্ধু ।১৯৪৭ সালে কলকাতায় হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার বিরুদ্ধে মহাত্মা গান্ধী এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে অনশন করেন সে সময়কার তরুণ ছাত্রনেতা শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৬৪ ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরে অবস্থিত হজরত বাল মসজিদ থেকে হযরত মুহাম্মদ (সা.)'র সংরক্ষিত মাথার চুল চুরি করা হয়েছে এমন সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে পূর্ব-পাকিস্তান বর্তমানের বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে।তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান ১৩ জানুয়ারি এক বিবৃতিতে দেশের সকল শ্রেণীর জনসাধারণ বিশেষ করে ছাত্রসমাজকে সাম্প্রদায়িক শান্তি অক্ষুন্ন রাখার জন্য সর্বশক্তি দিয়ে মানবতার দুশমনদের রুখে দাঁড়াবার আহ্বান জানান, শেখ মুজিবুর রহমান তার বিবৃতিতে বলেন, ’সাম্প্রদায়িকতাবাদ পুনরায় দুঃস্বপ্নময় বিভীষিকা ও হিংস্রতার রূপ লইয়া আত্মপ্রকাশ করিয়াছে। ইহার অন্ধভাবে ঘৃণা করার মারাত্মক দর্শন সর্বপ্রকার মানবিক মূল্যবোধকে তলাইয়া দিতেছে। ইহার কবলে ইতিমধ্যেই অসংখ্য নিরীহ মানুষ প্রাণ বিসর্জন করিয়াছে এবং আরও হাজার হাজার লোক রাতারাতি সর্বস্বান্ত হইতে চলিয়াছে। আমি আমার দেশবাসীর কাছে সাম্প্রদায়িক প্রতিশোধ ও পাল্টা প্রতিশোধের ঘৃণ্য চক্রের উর্ধ্বে থাকার জন্য তাহাদের মাথা ঠান্ডা ও অন্তর পরিষ্কার রাখার জন্য এবং কলিকাতা ও পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য অংশের দু:খজনক ঘটনাবলীতে উত্তেজিত না হবার জন্য আবেদন জানাইতেছি“। (তথ্যসূত্র: খন্দকার কামরুল হুদা, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও শেখ মুজিব, ঢাকা: জাতীয় গ্রন্থ প্রকাশন, ১৯৯৫, পৃ. ৮৪)। অন্যায়-অসংগতির বিরুদ্ধে সারাটা জীবন লড়ে বাংলাদেশ নামে একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন।বঙ্গবন্ধুর হাতে সৃষ্টি সেই রাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির মূল কথা ছিল, Friendship to all and malice towards none.(‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়)।বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের সংবিধানের মূলনীতির একটি রেখেছিলেন ধর্মনিরপেক্ষতা। সংবিধানের ১২ অনুচ্ছেদে বিষয়টি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়৷ওই অনুচ্ছেদে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে বলা হয়েছে।ধর্মনিরপেক্ষতা নীতি বাস্তবায়নের জন্য "সর্ব প্রকার সাম্প্রদায়িকতা, রাষ্ট্র কর্তৃক কোনো ধর্মকে রাজনৈতিক মর্যাদা দান, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মীয় অপব্যবহার, কোনো বিশেষ ধর্ম পালনকারী ব্যক্তির প্রতি বৈষম্য বা তাহার উপর নিপীড়ন বিলোপ করা হইবে।"জাতিগত দাঙ্গা, ধর্মীয় উগ্রবাদকে তিনি কখনও প্রশ্রয় দেননি। যেখানে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, মানবতার ওপর আঘাত এসেছে সেখানে প্রতিবাদ করেছেন।
১৯৭৩ সালে ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্বরাজনীতিতে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন।১৯৭৩ সালে জোটনিরপেক্ষ সম্মেলনে কিউবার প্রেসিডেন্ট প্রয়াত বিপ্লবী নেতা ফিদেল কাস্ত্রো বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলিঙ্গন করে বলেছিলেন, I have not seen the Himalayas. But I have seen Sheikh Mujib. In personality and in courage, this man is the Himalayas. I have thus had the experience of witnessing the Himalayas.(আমি হিমালয় দেখিনি, তবে আমি শেখ মুজিবকে দেখেছি। ব্যক্তিত্ব ও সাহসে এই মানুষটি হিমালয়ের সমতুল্য। আর এভাবেই আমি হিমালয় দেখার অভিজ্ঞতা লাভ করেছি)।বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ খুব অল্প সময়ে জাতিসংঘ, জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন, কমনওয়েলথসহ ১৪টি আন্তর্জাতিক সংগঠনের সদস্যপদ লাভ করেছিল। বঙ্গবন্ধু মৃত্যুবরণ করার পরও বিশ্বরাজনীতিতে ছিলেন একটি রোল মডেল।আজ বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে নিশ্চয়ই ভারতে চলমান দাঙ্গার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতেন। মুসলিমদের খুনে রঞ্জিত কসাই মোদির সঙ্গে হাত মেলাতেন না। বর্তমান সরকার ভারতের কাছে রাজনৈতিক সুযোগ সুবিধা পাবার আশায় দেশের স্বার্থ বিসর্জন দিতেও কুন্ঠিত নয়। মুসলিম নির্যাতন ভারতের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার বলে সরকার এড়িয়ে গেলেও জনগণ এসব বিষয় নিয়ে বেশ খোলামেলা। যার প্রমাণ জনগণের মোদির আগমনের বিরুদ্ধে অবস্থান। বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে মোদির আগমন বঙ্গবন্ধুর আজীবনের অর্জনকে ম্লান ও প্রশ্নবিদ্ধ করবে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মোদিকে একজন ইতিবাচক রাজনৈতিক হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেবে। ঢাকা পড়ে যাবে কসাই মোদির মুসলিম নির্যাতনের বীভৎস দিক। এদিকে বঙ্গবন্ধু মৃত্যুর ৪৪ বছর পর ২০১৯ সালে ১৬ আগস্ট প্রথমবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়। শোক দিবসে বিশ্বের কূটনীতিকরা বলেন, শেখ মুজিব শুধু বঙ্গবন্ধু নন, তিনি ‘বিশ্ববন্ধু। আজ বিশ্ববন্ধুর সম্মান ও কীর্তিগাথা সমুন্নত রাখতে মোদি বিহীন বঙ্গবন্ধুর জন্মশত বার্ষিকী উদযাপিত হোক। একজন বিবেকহীন চরম সাম্প্রদায়িক প্রধানমন্ত্রী হতে পারে না বিশ্ববন্ধু ও অসাম্প্রদায়িক নেতার স্মরণসভায় প্রধান অতিথি।