পিএসসির মাধ্যমে তথাকথিত তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণীর কর্মী নিয়োগ

শোনা যাচ্ছে তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণীর পদগুলোতে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে লোক নিয়োগ করা হতে পারে। পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ হলে চাকরি প্রার্থীরা ন্যায়বিচার পাবে। কিন্তু উত্তরোত্তর দেশের কি উন্নতি হবে? আমাদের দেশে ওইসব পদে কাজের মান এখনো অত্যন্ত নিম্ন। তার একটা বড় কারণ এই ধরনের কাজে হাতে কলমে কোন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেই। পরিচ্ছন্নকর্মীর কথাই ধরুন না কেন। পাঁচতারা হোটেলের পরিচ্ছন্নতাকর্মীর সাথে তুলনা করলে সহজেই বিষয়টি বোঝা যায়। কিছুদিন আগে মালয়েশিয়াতে যারা অন্যের বাড়িতে কাজ করে তাদের কাজের মান দেখেছি। তার থেকে আমার ধারণা হয়েছে আমাদের দেশে এ ধরনের কর্মী নিয়োগের আগে ইন্সটিটিউশন ডেভলপ করা দরকার। আমার মনে হয় এক্ষেত্রে আরো অনেক কিছু করার আছে।

প্রথমত: নিয়োগবিধি সংশোধন করা দরকার। যে যে কাজ করবে সেই বিষয়ে সার্টিফিকেট দরকার। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যিনি পরিচ্ছন্নকর্মী তিনি এই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ব্যাপারে প্রশিক্ষণের একটি সার্টিফিকেট থাকতে হবে। এই মুহূর্তে হয়তো এমন কোনো প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান নাই। কিন্তু সরকার ঢাকঢোল পিটিয়ে এই ধরনের সংশোধনী আনলে। আমাদের যে অসংখ্য টেকনিক্যাল প্রতিষ্ঠান আছে তারা রাতারাতি সার্টিফিকেট কোর্স চালু করে দেবে। প্রথমদিকে সুন্দর না হলেও আস্তে আস্তে কোর্সগুলো আরো বেশি পেশাদারী হবে। ঠিক সেরকম আরো এ ধরনের কাজের প্রত্যেকটি আলাদা আলাদা সার্টিফিকেট নির্ধারণ করে দিতে হবে। কি কি কাজের দক্ষতা থাকলে এই সার্টিফিকেট পাবে তা উল্লেখ করতে হবে। কারিগরি অধিদপ্তর এগুলোর স্ট্যান্ডার্ডআইজ করে দিতে পারে। এক সময় আমাদের দেশে নিম্ন পদের চাকুরীতে পেশাদারিত্ব আসবে। এর ফলে এইসব পদের জন্য বিদেশেও চাহিদা বাড়বে। উচ্চ বেতনে কাজ করতে পারবে।

লেখাপড়ায় চৌকস কিন্তু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজে আগ্রহী নয় এমন লোক নিয়োগ দিয়ে কি হবে। এখন যদি পাবলিক সার্ভিস কমিশন পরীক্ষা নেয় তবে তাকে নিশ্চয়ই লেখা পড়ার বিষয়টিতে পরীক্ষা নিতে হবে। কিন্তু যদি সার্টিফিকেট ব্যবস্থা চালু হয় তবে তখন একটা স্ট্যান্ডার্ড ঠিক হবে ওয়েস্টার এর পরে নির্ভর করে পরীক্ষা নিলে সঠিক আগ্রহী কর্মীকে বেছে নেওয়া সম্ভব হবে।

লেখক: সাবেক শিক্ষা সচিব


সর্বশেষ সংবাদ