বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের শাস্তি হলে কোটা আন্দোলনকারীরা বসে থাকব না
দলকানা প্রশাসন দিয়ে শুধু দলের স্বার্থই রক্ষা হয়, শিক্ষা ব্যবস্থা চলতে পারে না! বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরবিপ্রবি), গোপালগঞ্জে কিছুদিন আগে শিক্ষার্থীরা কৃষকের ফসলের ন্যায্য মূল্য প্রদানের লক্ষ্যে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে। যদিও এটা শিক্ষার্থীদের নৈতিক দায়িত্ব এবং সাংবিধানিক অধিকার ছিল।তথাপি দলকানা চাটুকার প্রশাসন এই মর্মে পরিপত্র জারি করেছে যে, শিক্ষার্থীরা নাকি সরকার এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড বহন করেছে এবং উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছে।
আমি বলি, সরকারও যদি অযাচিত (জণগণের স্বার্থ বিরোধী) কোন সিদ্ধান্ত নেয়, অবশ্যই আমরা সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবো, বিক্ষোভ করবো- এই অধিকার সংবিধান আমাদের দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও যদি কোন অন্যায় এবং স্বৈরতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত নেয় অবশ্যই আমরা তার বিরুদ্ধে আন্দোলন করবো। প্রয়োজন একদফা পদত্যাগের আন্দোলনও করবো।
সাধু সাবধান, সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর অন্যায়ভাবে কোন শাস্তি/অপরাধ চাপিয়ে দিলে আমরা কিন্তু বসে থাকবো না। তখন চেয়ার নিয়ে টানাটানি করতেই সময় চলে যাবে। সুতরাং শিক্ষার্থীদের বাইরে গিয়ে অন্যায়ভাবে কোন সিদ্ধান্ত নিবেন না, অনুরোধ রইল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যিনি এই পরিপত্রটি জারি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় প্রক্টর মহোদয় শিক্ষাজীবনে ছাত্রলীগের বড় নেতা ছিলেন। তাইতো উনার এতো হম্বিতম্বি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে খেলা বন্ধ করুন, তাদের ক্ষমতা সম্পর্কে আপনাদের অনুমান নেই।
শিক্ষার্থীরা সব বিষয়ে কথা বলবে, তাদের বলতেই হবে। কৃষক, শ্রমিক থেকে শুরু করে দিনমজুর পর্যন্ত সবার অধিকার নিয়ে কথা বলা তাদের নৈতিক দায়িত্ব। একজন শিক্ষার্থীর পিছনে গ্রামের দিনমজুর থেকে শুরু করে সমাজের এলিট শ্রেণীর মানুষের পর্যন্ত অবদান রয়েছে। সুতরাং শুধু সমাজের উঁচু স্তরের মানুষের কথা বললেই হবে না, সমাজের সব শ্রেনী পেশার মানুষের অধিকার দিয়ে কথা বলতে হবে।
আরো পড়ুন: ধানের ন্যায্য মূল্য চাওয়ায় শাস্তি পাচ্ছেন বশেমুরবিপ্রবির ১৪ শিক্ষার্থী!
অন্যকোন ছাত্র সংগঠন বলুক আর নাই বলুক, তবে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ সবসময় কৃষক শ্রমিক থেকে শুরু করে দিনমজুর পর্যন্ত সকলের অধিকার নিয়ে সব সময় সোচ্চার থাকবে ইনশাআল্লাহ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অনুরোধ করবো, এই অন্যায় সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসুন। সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর অন্যায়ভাবে কোন শাস্তি চাপিয়ে দেবেন না। তারা আপনাদেরই সন্তান। তারা যা করেছে, এটা তাদের নৈতিক দায়িত্ব ছিল এবং সাংবিধানিক অধিকারও বটে। এই কাজটা আপনাদের করা উচিৎ ছিল। কিন্তু আপনারা তা করতে পারেননি বিধায় শিক্ষার্থীরা তা করেছে। আপনারা যেখানে ব্যর্থ, শিক্ষার্থীরা সেখানে সফল।
লেখক: ফারুক হাসান
যুগ্ম-আহবায়ক,
বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ।