০৮ এপ্রিল ২০১৯, ১৯:০৫

রেডিও আজ স্মৃতিতে থাকলেও বাস্তবে নেই

রেডিও  © টিডিসি ফটো

প্রাচীনকালে নিত্য দিনের খবরাখবরের একমাত্র মাধ্যম রেডিও আজ বিলুপ্ত। সর্বত্র বিজ্ঞানের অত্যাধুনিক আবিষ্কারগুলো পৌঁছে যাওয়ায় কোনো কদর নেই রেডিওর।

পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরেও রেডিও’র দেখা তেমন মিলে না। কিছু কিছু ঘরে রেডিও থাকলেও তা আজ বাচ্চাদের খেলার সামগ্রী হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকে আবার নিজ যত্নে সাজিয়ে রেখেছে শোকেজে।

গ্রামের বয়-বৃদ্ধদের কাছ থেকে জানা যায়, আগের দিনে নানা অনুষ্ঠান, বিনোদন ও খেলার বিবরণী ছাড়াও আবহাওয়া, রাজনৈতিক বিভিন্ন ধরণের খবরাখবর শোনার একমাত্র মাধ্যম ছিল রেডিও। বিশেষ করে উপকূলবাসীদের আবহাওয়ার খবর জানার প্রধান যন্ত্র ছিল এটি। এছাড়া জেলে সম্প্রদায় যারা গভীর সাগরে মাছ আহরণে যেত তারা আবহাওয়ার খবরের জন্য ব্যবহার করত রেডিও। রেডিওর প্রচলন শুরুর পর প্রায় ঘরে ঘরে জায়গা করে নেয় এই টেনডেস্টার নামে খ্যাত রেডিও। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপহার হিসেবে দেয়া হতো এটি। প্রাচীনকালে তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে বয়-বৃদ্ধদের কাছে রেডিও বেশ জনপ্রিয় ছিল। তরুণ-তরুণীরা বেশির ভাগ সময় নজরুল সঙ্গীত, রবীন্দ্র সঙ্গীত, গানের ডালি, দূর্বার, সুখি সংসার, দর্পণ, বাংলা ছায়াছবির গান, ম্যাগাজিন ও নাটক শোনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করত। কিন্তু আধুনিক যুগে মোবাইল, টেলিভিশন ও ইন্টারনেটের কারণে রেডিও এখন সম্পূর্ণ বিলুপ্ত। বর্তমান মোবাইলের কারণে রেডিওর জনপ্রিয়তা সম্পূর্ণ হারিয়ে গেছে। এখন আর আগের মত কেউ রেডিও শোনে না। গ্রাম-গঞ্জে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাওয়ায় দুই একটা ঘর ছাড়া রেডিও খুঁজে পাওয়া মুশকিল। কিন্তু কিছু প্রবীণ লোকদের কাছে এখনো রেডিওর বিবিসি খবর পছন্দনীয়। দিন দিন হারিয়ে যাওয়া রেডিও আগামী প্রজন্মের কাছে শুধু স্মৃতি হয়ে থাকবে। ভবিষ্যতে বইয়ে পেলেও বাস্তবে রেডিওর দেখতে হলে যাওয়া লাগতে পারে বিভিন্ন জাদুঘরে।

গলাচিপার রতনদী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মোঃ লুৎফুন নাহার জানান, ছোটকাল থেকে বিভিন্ন বিষয়ে যা কিছু জানা সবই প্রায় এই রেডিওর কারণে। আমার ঘরে টেলিভিশন থাকলেও শত কষ্ট হলেও রেডিও সংগ্রহ রাখি। বাজারে এখন রেডিও পাওয়া দুষ্কর। শত দোকান খুঁজলেও রেডিও পাওয়া মুশকিল। তবুও সুখে দুখে রেডিও আজও আমার সঙ্গী।