বিএনপিই এই মাটি ও মানুষের গর্বিত প্রতিনিধি
আপসহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ‘বিএনপির অবস্থান বামপন্থীর ডানে এবং ডানপন্থীর বামে, বিএনপির অবস্থান কেন্দ্রে ও বিএনপিই এদেশের রাজনীতির কেন্দ্র; বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলই এদেশের মূলধারা এবং বিএনপিই বাংলাদেশের জাতীয় রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান’।
আপনি যদি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এবং এক সমুদ্র রক্তের বিনিময়ে বিজয় অনুধাবন করেন সেখানে স্পষ্ট উপলব্ধি করবেন তৎকালীন মেজর জিয়াউর রহমান এর "We Revolt ..." কিংবা "I Major Ziaur Rahman... I Declare the independence of Bangladesh..." দীপ্ত কণ্ঠ।
যদি ১৯৭৫ সালের বাকশাল পরবর্তী সময়ে বিপ্লব-প্রতিবিপ্লব কিংবা অরক্ষিত স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিশ্লেষণ করেন তখনই স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করবেন ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে সিপাহি-জনতার অভূতপূর্ব জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি, যেটি কিনা বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব-অখণ্ডতা সুরক্ষার অদম্য প্রেরণা ও জাতীয় ঐক্যের ঐতিহাসিক সোপান এবং বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার অভিযাত্রা।
আবার আপনি যদি ১৯৮৬ সালের স্বৈরাচার এরশাদের পাতানো নির্বাচন কিংবা স্বৈরাচারের বিপরীতে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দিনলিপি দেখেন তাহলে সেখানে দেখবেন, একজন সাধারণ গৃহবধূ থেকে জনগণের স্পন্দন অনুভব করে জনগণকে সাথে নিয়ে বাংলাদেশ ও গণতন্ত্রের প্রশ্নে আপসহীন অপরাজেয় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া' হয়ে ওঠার তপ্ত রাজপথের ইতিহাস।
আপনি যদি ১৯৯১ কিংবা ১৯৯৬ সালের ঘটনাগুলো দেখেন তবে খুব স্পষ্টভাবে দেখবেন বিএনপি তার নিজস্ব প্রেসিডেনশিয়াল ফরম্যাট থেকে বেরিয়ে এসে উদার রাজনৈতিক চর্চাকে উৎসাহিত করতে জনআকাঙ্খাকে ধারণ করে সংসদীয় গণতন্ত্র অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী শাসিত সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করে কিংবা জনগণের প্রত্যাশাকে আত্মস্থ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করে। আপনি যদি ১/১১ এর অবৈধ তাঁবেদার গোষ্ঠীর সাথে আপসরফা খতিয়ে দেখেন সেখানেও দেখবেন এই বিএনপিই দেশি-বিদেশি কোন প্রভুর সাথে এক মুহূর্ত আপস করেনাই।
আবার ২০১৪ সালের একতরফা নির্বাচন, ২০১৮ সালের নিশিরাতের ভোট কিংবা ২০২৪ এর ডামি নির্বাচন ও স্বৈরাচার থেকে ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনা হয়ে ওঠার সময়কাল বিশ্লেষণ করেন তবে দেখবেন, একমাত্র বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলই কোন আপস করেনাই, খুনি হাসিনার প্রায় ১৬ বছরের শোষণ আমলে ১৫৫১ জনের অধিক খুন, ৪২৩ জনের উপরে গুম, প্রায় ৬০ লক্ষ নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা, শতসহস্র নির্যাতন-নিপীড়ন-নিষ্পেষণ সহ্য করেও বাংলাদেশ ও গণতন্ত্রের প্রশ্নে একমাত্র বিএনপি নামক দলটিই থেকেছে আপসহীন এবং গণমানুষের সার্বিক স্বাধীনতা-গণতন্ত্রের লক্ষ্যে বিএনপিই ছিল অটল-অবিচল।
আবার আমাদের সাহসের অনুরণন ২০২৪'র রক্তস্নাত গণঅভ্যুত্থান বিশ্লেষণ করেন দেখবেন সেখানে জ্বলজ্বল করছে বিএনপি পরিবারের ৪২২ জনেরও অধিক শহিদের সাহসী মুখ, অযুত আহত আর লক্ষ-কোটি বিপ্লবীসহ একটি দৃঢ় নেতৃত্ব জনাব তারেক রহমান।
আবার গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বৈষম্যহীন-মানবিক ও নিরাপদ বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রয়াসে এবং প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশের গণতন্ত্র অভিযাত্রায় আলোকবর্তিকা হয়ে সম্প্রীতির বাংলাদেশ তথা ঐক্যবদ্ধ সমাজ ও জাতি গঠনে এই বিএনপিই অগ্রপথিক।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে অনেক রাজনৈতিক দলেরই বিভিন্ন ক্ষেত্র ও প্রেক্ষাপটে বিব্রতবোধ কিংবা অস্বস্তি আছে, এমনকি নেতিবাচকতাও আছে তবে এ দেশের জনতার নেতা শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান (বীর উত্তম) এর হাতে গড়া বিএনপিই বোধকরি দেশপ্রেমের সাহসে দৃপ্তকণ্ঠে উচ্চারণ করতে পারে বাংলাদেশের অস্তিত্বের সাথে মিশে থাকা ভালোবাসা আর সংগ্রামের অভিজ্ঞতা আলহামদুলিল্লাহ।
কেননা, বাংলাদেশের যা কিছু অর্জন কিংবা বাংলাদেশের স্বতঃস্ফূর্ততা মানেই বিএনপির গৌরবগাঁথা কিংবা বিএনপির নিত্যকার সুখানুভূতির ভাষা। বাংলাদেশের অর্জনে বিএনপির অর্জন, বাংলাদেশের ক্লেশে বিএনপির ব্যথা, এ যেন মাতৃসম দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সেই অমোঘ বাণী ‘বিএনপিই বাংলাদেশের জাতীয় রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান’ এর যথার্থতা।
আর তাইতো বিএনপিই গর্বস্বরে উচ্চারণ করেছে ‘সবার আগে বাংলাদেশ’। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব-গণতন্ত্র সুরক্ষা ও সুনীতি-সুশাসন-সুসরকারের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা এবং বৈষম্যহীন-মানবিক-নিরাপদ বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিএনপির পথচলা সফল হোক। বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।
লেখক: এফ. ফিল শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, কেন্দ্রীয় সংসদ।