জনগনকে রাজনৈতিক সচেতন করাই হোক দল গঠনের উদ্দেশ্য
টাইমস ম্যাগাজিনের একটি লেখা পড়ছিলাম। কমলা হ্যারিস নির্বাচনী ক্যাম্পেইন এডে চারবার ‘ফ্রিডম’ শব্দটি উচ্চরণ করেছেন। অথচ গত অর্ধশতাব্দী ধরে তাদের (ডেমোক্রেটিক পার্টি) নির্বাচনী ক্যাম্পেইনে এই শব্দটি অনুপস্থিত ছিল।
চলতি বিশ্বকে ডেমোক্রেসি এবং অটোক্রেসিতে বিভক্ত করা হয়েছে। মর্ডান টেকনোলোজি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং অর্থনীতিতে র্যাপিডলি এগিয়ে যাওয়া চায়নাকে এবং তাদের বলয়ে থাকা রাশিয়া, উত্তর কোরিয়ার মতো দেশগুলোকে চারিদিক থেকে জাল ফেলার ক্ষেত্রে ডেমোক্রেসি অর্থাৎ ‘ফ্রিডম’ টার্ম সবথেকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
এক্ষেত্রে ভূরাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠা বাংলাদেশেও এই প্রগ্রেশনের দীর্ঘদিন ছোঁয়া ছিল। কিন্তু এতোবছর ভারতের বোগলের নিচে থেকে আওয়ামী লীগ ৭১ এর চেতনা বিক্রি করতে গিয়ে প্রফিট করতে পারেনি। তাই কেউ যদি নতুন করে ২৪ এর চেতনা বিক্রি করার চিন্তা করে সেটাও তাদের জন্য হবে বোকামি। কেননা ২৪ এর চেতনার পেছনে ছিল ১/১১ এর তৈরি ১৭ বছরের একটি দলের রাজনৈতিক বন্দোবস্তের বিলোপসাধন।
তবে, ফাস্ট ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যদি ডেমোক্রেসি, হিউম্যান রাইটস এবং ফ্রিডম অব স্পিচ এন্ড মিডিয়া- এসব চেতনা ধারণ করতে পারে তবে তারাই রাজনীতিতে সফল হবে। সেক্ষেত্রে নতুন দল গঠনে এই ট্রেন্ডসগুলো ধরে রাখতে পারলে তারা আওয়ামী লীগ ও অন্যান্য দলের হারানো জায়গার কিছুটা দখল নিতে পারবে।
এদিকে, ক্ষমতা পালাক্রমের মধ্যে থাকা বৃহত্তর দল বিএনপির মধ্যেও অনেক কিছু পরিবর্তন এসেছে এবং আরো আসা লাগবে। সেক্ষেত্রে ফাস্ট ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে থার্ড ওয়ার্ল্ডের প্যাটার্নের সমন্বয় ঘটিয়ে বিএনপির বর্তমান নেতৃত্ব যদি দক্ষতা এবং পেশাদার রাজনীতিবিদের মতো সক্ষমতা দেখাতে পারে তবে তারাই এগিয়ে থাকবে।
কিন্তু, মোমেন্টারিলি বাংলাদেশের রাজনীতিতে মাস্টারমাইন্ডের ভুমিকায় আছে জামায়াত। দলটির বর্তমান নেতৃত্ব তাদের দলের মূলনীতির সঙ্গে পশ্চিমা বিশ্বের ছড়ানো আধুনিকতার সমন্বয় ঘটাতে পেরেছে। বর্তমানে তারা হিউম্যান রাইটস রিলেটেড কাজগুলোকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। পাশাপাশি, তাদের মধ্যে পুরোপুরি ডেমোক্রেসির চর্চা আছে। তবে, তাদের মধ্যে দুইটা জিনিসের ঘাটতি আছে। প্রথমত, তারা নিজেদের গন্ডির মধ্যে থেকে বের হতে না পারা এবং প্রচারবিমূখীতা।
সুতরাং, সবাই দল গঠন করুন। আপনি যতবেশি দল গঠন করবেন সাধারণ মানুষের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রমের প্রতিযোগিতা তত বাড়বে। এক্ষেত্রে মানুষ রাজনৈতিকভাবে সচেতন হবে। তারাও দেশের জন্য ভাবার সুযোগ পাবে। ভোটাভুটির মাধ্যমে দেশের ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে পারবে।
লেখক: জার্নালিস্ট ও ফ্যাক্ট চেকার, সাবেক প্রেসিডেন্ট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি।