২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:৩৬

শতভাগ চাকরি ও টেকসই উচ্চশিক্ষার মডেল হতে পারে ইউনিটেক

ড. মো. আকতারুজ্জামান  © টিডিসি ফটো

কর্ম এবং শিক্ষার জগৎ ক্রমবর্ধমানভাবে বিশ্বজুড়ে মিলে যাচ্ছে। শিক্ষাকে শুধু জ্ঞান সংগ্রহের মাধ্যম হিসাবে চিন্তা না করে বরং আমাদের সাধারণ শিক্ষা ও কর্মমুখী শিক্ষার সমন্বিত পদ্ধতির দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। ৪র্থ বলেন আর ৫ম বলেন কোন শিল্পবিপ্লবের যুগেই রোবট এসে আপনার বাড়ির পানি বা বিদ্যুতের লাইন ঠিক করবে না। তাই কর্মমুখী শিক্ষার গুরুত্ব দিন দিন বাড়বে। একজন গ্রাজুয়েটের দেশে ও বিদেশে চাকরি বা উদ্যোক্তা হওয়ার সম্ভাবনা যদি ১৯% হয়, তবে সেটা ৯১% হবে ডিগ্রির সাথে কমপক্ষে ২টি কারিগরি দক্ষতা সম্পন্ন করা থাকে। আর উন্নত দেশে তাদের বেতন ৬-৮ হাজার ডলারের কম নয়, সামাজিক মূল্যায়নেও তেমন কোন পার্থক্য নেই।

বৈশ্বিক বাণিজ্যিক বিশ্বে শিক্ষা এখন শুধু সেবা নয়, ব্যবসাও। ইউনিটেক মডেলটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং পলিটেকনিক ও ইন্ডাস্ট্রির মতো কারিগরি খাতের মধ্যে সহযোগিতার উপর ভিত্তি করে তৈরি। মডেলটি প্রাথমিকভাবে ব্যবসায় মনোনিবেশ না করে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে একটি টেকসই পর্যায়ে উন্নীত করবে এবং চাকরির জন্য প্রস্তুত এমন গ্র্যাজুয়েট তৈরি করবে। ৫-১০ বছরের মধ্যে মডেলটি পরিপক্ব হলে এটি বিদেশি শিক্ষার্থীদের থেকে যথেষ্ট বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পথ তৈরি করবে।গত এক দশক ধরে আমি বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেভাবে প্রোগ্রাম পরিচালনা করছে, তাদের জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখছে এবং আমরা যেভাবে করি এবং/অথবা অবদান রাখি তা অনুসরণ করে আসছি। বেশ কয়েকটি ফেলোশিপের অধীনে আমি অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনেক খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয় এবং অনেক স্কুল ও কলেজে যাওয়ার এবং তাদের নিয়ে গবেষণা করার সুযোগ পেয়েছি। এই অভিজ্ঞতা, পর্যবেক্ষণ ও দেশ সমৃদ্ধ করার প্রয়োজনীয়তার আলোকে মনে হয়েছে যে অদূর ভবিষ্যতে আমাদের উচ্চশিক্ষার একটি বড় পরিবর্তন দরকার হতে পারে।

ধরুন একজন বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বা ঢাকা মেডিকেলের গ্র্যাজুয়েট অস্ট্রেলিয়া বা কানাডায় চলে গেছেন এবং ঐ দেশে ভাল উপার্জন করছেন। তখন তারা দেশের বৃহত্তর স্বার্থে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের টিউশন ফি একবারে বা কিস্তিতে পরিশোধ করতে পারেন। বাংলাদেশে কর্মরত গ্র্যাজুয়েটরা ভালো বেতন না পেলে আংশিক ছাড় পেতে পারেন। মূল কথা হলো প্রত্যেককে সার্ধমতো তাদের বিশ্ববিদ্যালয় এবং দেশের জন্য অবদান রাখতে হবে। আবার ধরুন একটা ক্লাসে ১০০ জনের মধ্যে ১০-২০ জন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বা অফিসার হয়, বাকি ৮০-৯০ জন কোথায় যাবে? অনেক ক্ষেত্রে রেজাল্টের সাথে চাকরির ক্লাস সম্পর্কযুক্ত নয়। কেউ কেউ ভারতের উদাহরণ দেন - ওদের ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইটি প্রফেশনাল কতজন বিদেশ যায় আর অন্য সাধারণ জনতা কতজন যায়, একটু হিসেব করলেই দেখতে পাবেন সেটা ১:৪ এর মতো। ক্লাসের উপরের সারির ১০-২০ জনের চিন্তার পাশাপাশি ৮০-৯০ জনের ভবিষ্যৎ চিন্তা করা উচিত। আমরা সাধারণ শিক্ষায় পড়ে শিক্ষিত বেকার হবো, দেশ ও পরিবারের বোঝা হব তবুও কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করবো না- এ মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। দেশের প্রধান আয়ের উৎস গার্মেন্টস ও রেমিট্যান্স, তাই অফিসারের চেয়ে দক্ষ শ্রমিক বেশি প্রয়োজন। আমাদের উচ্চশিক্ষাকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর এটিই সঠিক সময়, সাথে সাথে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে এর প্রভাব বা অবদানকে নিয়মিতভাবে মূল্যায়ন করার জন্য জাতীয় বুদ্ধিমত্তা, দক্ষতা, শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং উদ্যোক্তা(NISE3)সিস্টেমের সাথে সংযুক্ত করতে হবে।

এখন ইউনিটেক মডেলের মূল দিকগুলো দেখে নেওয়া যাক
এটি কি – সাধারণ ও কারিগরি শিক্ষার সমন্বিত পদ্ধতি: শিক্ষার্থীদের ভাল কমিউনিকেশনের সাথে দুটি স্বীকৃত দক্ষতা বা সার্টিফিকেশন প্রোগ্রাম সম্পূর্ণ করতে হবে। ভর্তির প্রথম বছরে ইংরেজি কোর্সে আইইএলটিএস বা সমমানের দক্ষতা অর্জন করতে হবে। দুটি প্রাসঙ্গিক বা ভিন্ন খাতের সার্টিফিকেশন প্রোগ্রাম যথাক্রমে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বছরে সম্পন্ন করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র অটোমোবাইল এবং ড্রাইভিং এর উপর দুটি ট্রেড কোর্স সম্পন্ন করতে পারে, একজন ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র বৈদ্যুতিক ওয়্যারিং এবং প্লাম্বিং এর দুটি ট্রেড কোর্স সম্পন্ন করতে পারে। একজন সমাজবিজ্ঞানের ছাত্র গ্রাফিক্স, অ্যানিমেশন ও ভিডিও এডিটিং এবং কার্পেনট্রি এর উপর দুটি কোর্স সম্পূর্ণ করতে পারে। চূড়ান্ত বর্ষে শিক্ষার্থীরা ইন্টার্নশিপ এবং/অথবা অন্য আরেকটি ভাষায় দক্ষতা অর্জনের কথা বিবেচনা করতে পারে যেমন আরবি, ফ্রেঞ্চ বা জার্মান। শিক্ষার্থীরা সার্টিফিকেশন বা ট্রেড কোর্সের জন্য অনেকগুলো কোর্সের পুল থেকে বেছে নিতে পারে, তবে অর্জিত দক্ষতার লেভেলটি অবশ্যই আন্তর্জাতিক মানের হওয়া উচিত।

এটি কোথায় কাজ করে- বিশ্ববিদ্যালয় ও কারিগরি-ইন্ডাস্ট্রি সেক্টরগুলোতে সহযোগিতার মাধ্যমে: প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত বা অধিভুক্ত পলিটেকনিক ও ভাল ইন্ডাস্ট্রি সংযোগ থাকা উচিত। উদাহরণস্বরূপ, অস্ট্রেলিয়াতে ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটিতে ভিক্টোরিয়া পলিটেকনিক আছে, আরএমআইটি ইউনিভার্সিটিতে আছে আরএমআইটি টেইফ, সুইনবার্ন ইউনিভার্সিটিতে আছে সুইনবার্ন টেইফ এবং ফেডারেশন ইউনিভার্সিটিতে ফেডারেশন টেইফ আছে ইত্যাদি, যেখানে টেইফ অনেকটা বাংলাদেশের পলিটেকনিকের মতো কারিগরি এবং চলমান শিক্ষার প্রতিষ্ঠান। একইভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার জন্য তাদের অধিভুক্ত কমিউনিটি কলেজ রয়েছে। এই পলিটেকনিক, টেইফ বা কমিউনিটি কলেজগুলিতে দক্ষতা-ভিত্তিক সার্টিফিকেশন প্রোগ্রামগুলোর পুল রয়েছে যেগুলো থেকে যে কেউ, এমনকি একজন পিএইচডি গ্র্যাজুয়েট বা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা দক্ষতা উন্নয়নের জন্য যেকোনো সময় কোর্স করতে পারেন। আপনি নিশ্চয়ই তিনবার পিএইচডি বা মাস্টার্স করতে পারবেন না তবে যখনই প্রয়োজন হবে একটি সার্টিফিকেট কোর্স করতে পারেন, চাকরির পাশাপাশি। হার্ভার্ড বা অক্সফোর্ডের মতো বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অনুমোদিত পলিটেকনিক নাও থাকতে পারে, তবে তাদের শক্তিশালী ইন্ডাস্ট্রি নেটওয়ার্ক রয়েছে। তাই স্থানীয়, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদার ভিত্তিতে চাকরির জন্য প্রস্তুত গ্র্যাজুয়েট তৈরি করতে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এ বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত।

এটি কীভাবে কাজ করে– ফ্লেক্সিবল ব্লক ও কর্মমুখী শিক্ষাক্রম প্রণয়নের মাধ্যমে: শিক্ষাক্রম ফ্লেক্সিবল, প্রয়োজন-ভিত্তিক এবং সময়োপযোগী হওয়া উচিত। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ব্যাচেলর ডিগ্রির তৃতীয় বর্ষ এবং মাস্টার্সের শুরু থেকে ফ্লেক্সিবল ব্লক মোড প্রবর্তন করা যেতে পারে, যেখানে শিক্ষার্থীরা কলা ও মানবিক, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও ক্রীড়া অধ্যয়নের ক্ষেত্রে ৪ সপ্তাহে (পূর্ণ-সময় এবং খণ্ডকালীন) একটি কোর্স করতে পারে। বিজ্ঞান ও ব্যবসায়, প্রকৌশল, আইটিতে ৮ সপ্তাহে (পূর্ণ-সময়) দুইটি কোর্স বা ৮ সপ্তাহে (খণ্ডকালীন) একটি কোর্স করতে পারে। এই ধরনের ফ্লেক্সিবিলিটি শিক্ষার্থীদের পূর্ণ-সময় অধ্যয়ন করার পাশাপাশি খণ্ডকালীন কাজ করতে সক্ষম করে – এমনটি উন্নত বিশ্বে বেশ প্রচলিত। এটি শিক্ষার্থীদের অধ্যয়নের সময় কাজে নিযুক্ত হয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন এবং স্নাতক শেষ করার পরে কর্মক্ষেত্রে আরও ভাল করতে সাহায্য করে। আজকাল আপনি উন্নত বিশ্বে খুব বেশি বিশ্ববিদ্যালয় খুঁজে পাবেন না যারা মাস্টার্স বাই রিসার্চ অফার করে। এর পরিবর্তে তারা মাস্টার্স বাই কোর্সওয়ার্ক এবং গবেষণা শুধুমাত্র পিএইচডিতে করে। লাখ লাখ স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী এই ফ্লেক্সিবল মাস্টার্স প্রোগ্রামে আকৃষ্ট হয়, যা মূলত চাকরির জন্য প্রস্তুত গ্র্যাজুয়েট তৈরি করে। ব্যাচেলর প্রোগ্রামের মতো এই মাস্টার্স প্রোগ্রামগুলো এখন তাদের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি। আমাদের শিক্ষার্থীদের স্নাতকের ৩য় বর্ষ ও মাস্টার্সের শুরু থেকে প্রতি সেমিস্টারে ৪টির বেশি কোর্স অধ্যয়ন করা উচিত নয়। একাডেমিক ব্যাংক অফ ক্রেডিটস (ABC) স্কিমের অধীনে প্রাসঙ্গিক সার্টিফিকেশন প্রাপ্ত হলে কিছু কোর্স মওকুফ করা যেতে পারে, উদাহরণস্বরূপ সিসকো সার্টিফাইড নেটওয়ার্ক অ্যাসোসিয়েট এর জন্য একটি মৌলিক কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং কোর্স বা বেসিক ডাটাবেইস কোর্সের জন্য ওরাকল সার্টিফিকেশন, ইত্যাদি।

এটির অর্থায়ন কীভাবে হবে – টেকসই উচ্চশিক্ষা অবদান প্রকল্পের মাধ্যমে: অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, কানাডা বা যুক্তরাষ্ট্রে, চিকিৎসা বিজ্ঞানে ব্যাচেলর প্রোগ্রামের গড় টিউশন ফি বাংলাদেশি টাকায় ২-৩ কোটি, প্রকৌশল এবং আইটিতে ১.৫-২.০ কোটি এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ১ কোটির কম নয়। মাস্টার্স প্রোগ্রাম ০.৫-১.০ কোটির মধ্যে। সাবজেক্ট এরিয়া বিষয়ক টিউশন ফি’র জন্য ব্যান্ড নির্ধারণ করা হয় সেখানে। দেশের প্রেক্ষাপটে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউশনাল র‍্যাঙ্কিং ফ্রেমওয়ার্ক (NIRF)এর আলোকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ৩-৪টি ক্যাটাগরিতে শ্রেণিবদ্ধ করে, তারপরে ৫-৭টি সাবজেক্ট ব্যান্ডের উপর ভিত্তি করে সরকারি ভর্তুকি এবং পূর্ণ-ফির অপশনগুলো বিবেচনা করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ ধরুন, বাংলাদেশের মেডিকেল শিক্ষার্থীদের জন্য টিউশন ফি হল ১৫ লাখ টাকা, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের জন্য ১০ লাখ এবং অন্যান্য স্নাতকদের জন্য ৫ লাখ। শিক্ষার্থীরা যথারীতি তাদের বর্তমান টিউশন ফি প্রদান করা চালিয়ে যাবে এবং অবশিষ্ট পরিমাণ তাদের ইউনিক আইডি অ্যাকাউন্টে রেকর্ড করা থাকবে। টিউশন ফি সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ভর্তি হওয়ার সময় প্রত্যেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের অবশ্যই ট্যাক্স নম্বর (TIN) থাকতে হবে। স্নাতক শেষ করার পর যখন তারা চাকরি পাবে এবং তাদের আয় দেশের গড় বেতনের চেয়ে বেশি হবে, তখন ঐ বাকি টিউশন ফি কিস্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরত দিতে হবে। এটা ঋণ নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য তাদের অবদান। সংগৃহীত অর্থ তাদের গবেষণা ও প্রকল্প, কারিগরি দক্ষতা উন্নয়ন, ইন্টার্নশিপ, উচ্চশিক্ষার সুযোগ, ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং করতে ব্যয় হবে।

ইউনিটেক মডেলের সফল বাস্তবায়ন আগামী দশ বছরে রেমিট্যান্স প্রবাহ ৮-১০ গুণ বৃদ্ধি করতে পারে। ৫-১০ বছরের মধ্যে মডেলটি পরিপক্ব হলে বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য আয় আসতে শুরু করবে। ততদিনে আমাদের অন্তত ক্যাটাগরি-১ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের উচ্চমানের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ প্রদানের অবস্থানে থাকবে, বিশেষ করে এশিয়া, আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে অনলাইন এবং ব্লেন্ডেড পদ্ধতিতে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার পাশাপাশি আমাদের কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় দক্ষতা অর্জন করতে হবে। নতুন পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো, যাদের সীমিত আয় ও অবদান রয়েছে, তারা অন্যের সাথে যোগ দিয়ে দক্ষ গ্র্যাজুয়েট তৈরি এবং অর্থনীতিতে ভালো অবদান রাখতে পারে। ২০৪১ সালে বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশ হবে বলে আশা করা হচ্ছে কিন্তু ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকলে তা কখনোই টেকসই হবে না। তাই নীতিনির্ধারকরা যদি ইউনিটেক এর মতো একটি কার্যকরী মডেল বিবেচনা করেন, তাহলে আমাদের অন্তত ৪১টি বিশ্ববিদ্যালয় ২০৪১ সালের মধ্যে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে নিজেদের অবস্থান সুসংহত করতে পারবে এবং সারাবিশ্বে 'এডুকেশন বাংলাদেশ' ব্র্যান্ডিং করা তখন অসম্ভব হবে না।

লেখক: শিক্ষাক্রম, ডিজিটাল শিক্ষা ও সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ, মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়া