নতুন বছরে তারুণ্যের শক্তিকে সাফল্যে রূপান্তরের ব্রত শিক্ষার্থীদের

  © টিডিসি ফটো

নতুন বছর এলে আমরা অপূরণীয় অনেক স্বপ্ন দেখি। সব ধরনের স্থবিরতা কাটিয়ে নতুন বছর সবার জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল আনন্দ। শান্তি, সমৃদ্ধি, স্বস্তি ও গতিময়তায় এগিয়ে চলুক বাংলাদেশ। নতুন বছরকে নিয়ে এমনটাই প্রত্যাশা সবার। দেশের মোট জনসংখ্যার বিরাট একটি অংশ তরুণ। তারুণ্যই একটি দেশের এগিয়ে যাওয়ার বিশাল শক্তি। নতুন বছরে তরুণ প্রজন্মের  নানা কল্পনা-পরিকল্পনা আর আশা-প্রত্যাশা নিয়ে কথা হয় চার মেধাবী শিক্ষার্থীর সাথে। মতামত নিয়েছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী শাহ বিলিয়া জুলফিকার।

‘নতুন বছরে এগিয়ে যাই, এগিয়ে দিই’
নতুন মানেই উদ্যম। পুরাতন বছরের সকল পাওয়াকে পুঁজি করে এবং অধরা স্বপ্নগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই অদম্য শক্তিতে। সাথে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই সকলকে। নতুন বছরের প্রথম দিনটিতেও অন্যান্য দিনের মতো ভোরের সূর্য উদিত হবে ও অস্তমিত হবে। কিন্তু নতুন বছর সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে আমাদের মনে সঞ্চার করবে নতুন প্রাণের। এই প্রাণের স্পন্দন টিকে থাকুক তারুণ্যের প্রতিটি দিনে। অস্তমিত না হোক কারো মাঝে জেগে থাকা আশা, প্রতিভা, সম্ভাবনা আর অনুপ্রেরণা। আগামী দিনগুলোতে সবার মাঝে জেগে থাকুক দেশপ্রেম, ভালোবাসা, সৌহার্দ্য আর সম্প্রীতি।

তৌফিকুল ইসলাম আশিক
 শিক্ষার্থী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি


‘সুন্দর হোক আগামী’
ঝরে পরা ফুলের পাপড়ি শুকিয়ে যায়, এক সময় শুকিয়ে যায় অতীতের করুন ক্ষত। সময় খুব তাড়াতাড়ি চলে যায় যেমন নিভে যায় ঝড়ের রাতে উজ্জ্বল আলোর প্রদীপ। তরুণরা ভুলে যেতে পারে অতীতের ভুল সিদ্ধান্ত। কারণ নতুন বছরে তারা নতুন মানুষ হতে চায়। আমাদের তরুণদের জীবনের এই সময়টা খুব সংগ্রামের। ৩৬৫ দিন নিজেকে গড়ে তোলার জন্য এক শপথ। স্বপ্নের চিত্র মন থেকে কলমের কালিতে নিয়ে নিজের সফলতাকে বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রতিদিন  নতুন কিছু শেখার জন্য অধীর আগ্রহী তরুণের চোখ পর্যবেক্ষণ করে সবকিছু। তাই পরিবর্তনটা আসুক এই আমার থেকে। ত্রুটিগুলো ধুয়ে দূর হয়ে যাক। নিজের কর্মের ছোঁয়ায় বেঁচে থাকবে তরুণের অমর অনুভূতি প্রজন্মের পর প্রজন্ম। আগামীতে পরিবর্তন আনতে পারা শুধু নিজের জন্য না দেশের সবার জন্য। ৭১-এর রক্তে অর্জিত দেশের প্রতিটি কোনায় স্বপ্নে আকাঁ শহিদের মানচিত্রের বাস্তব রূপ তৈরি করার প্রচেষ্টায় পদক্ষেপ নিতে হবে এই আগামীতে।

নাঈম আহমেদ রাহী
শিক্ষার্থী, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়


‘বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণাধীন হোক’
বাজার ব্যস্থার কথা উঠলেই জনমনে উচ্চারিত হয় ‘সিন্ডিকেট’ এর নাম। কিন্তু সিন্ডিকেট আসলে কী? এই যে প্রান্তিক কৃষকের কাছ থেকে ৫-১০ টাকা দামে ক্রয় করে ভোক্তা পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে যে সংঘ বা নির্দিষ্ট গোষ্ঠী ৫০-৮০ টাকার দামে বিক্রয় নামে লুটে নিচ্ছে তারাই সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেট এমন একটি জোট যা বড় কোনো ব্যবসায়িক মুনাফাকেন্দ্রিক বা আধিপত্য বিরাজের উদ্দেশ্য আদায়ের জন্য একসঙ্গে কাজ করে থাকে। মূলত কৃষি প্রধান দেশে প্রান্তিক কৃষকরা তাদের ন্যায্য বুঝে না পেয়ে দিনদিন আশায় গুড়ে বালির নিয়তি নিয়ে আশাহত ও নিরুৎসাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে ভোক্তারা কাঁচা-বাজারে গিয়ে চোখ কপালে তুলছে। এই যেন কার কথা কে শুনে, বুলি নাই শেষ, উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ। ফলশ্রুতিতে ভোক্তা ও কৃষকরা নিঃস্ব হয়ে দেশপ্রেমের সবক ভুলতে বসেছে এই অনিয়ন্ত্রিত অসম বণ্টনে। দেশপ্রেম ও গণতান্ত্রিক জন-সম্পৃক্ততা সহজতর করতে বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণের বিকল্প নেই।

রবিউল আলম 
শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়


‘শিক্ষা  ব্যবস্থা উন্নত হোক’
তরুণরা ভবিষ্যৎ সমাজের কর্ণধার, আজকে যারা তরুণ ভবিষ্যতে তারাই রাষ্ট্রের প্রধান ব্যক্তিত্বের পদ অলংকৃত করবে। তারুণ্যের জয় গান যুগে যুগে ধ্বনিত হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও হবে। তরুণদের হাত ধরে আসবে দেশ ও জাতির মঙ্গল বার্তা। তরুণদের যেমন দেশের প্রতি দায়িত্ব কর্তব্য আছে তেমনি দেশের কাছেও তাদের কিছু প্রত্যাশা রয়েছে। নতুন বছরে তরুণ সমাজের বিভিন্ন প্রত্যাশার মধ্যে একটি হলো শিক্ষা ক্ষেত্রে উন্নয়ন। বর্তমানে নতুন কারিকুলাম নিয়ে শিক্ষিত মহলে প্রশ্নের ঝড় উঠেছে। নতুন বছরে এই নতুন শিক্ষা পদ্ধতিটি কতটা ফলপ্রসূ হবে তা সময় নির্ধারিত ব্যাপার। তবে এই শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মান উন্নয়নের চেষ্টা করা উচিত। তরুণদের প্রত্যাশা নতুন বছরে নতুন করে সুস্থ সুন্দর জীবন যাপনের লক্ষ্যে শিক্ষা ও যোগাযোগ মাধ্যমের অভাবনীয় উন্নয়ন করে, দেশ ও দেশের মানুষকে নিরাপদে রাখা।

শ্রাবণী রাণী সরকার 
শিক্ষার্থী, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়


সর্বশেষ সংবাদ