২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:১১

শিক্ষার্থীদের ভাবনায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

  © টিডিসি ফটো

দরজায় কড়া নাড়ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ক্ষমতাসীনদের অধীনে একপাক্ষিক নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক চলছে দেশে ও দেশের বাইরে। এর মাঝেও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবিতে বড় দলগুলো এবং বিরোধী দলগুলোর সহিংস-অহিংস কর্মসূচি, বৈদেশিক হস্তক্ষেপ সহ নানা ইস্যুর আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেই চলছে নির্বাচনী প্রচারণা। ভোটারদের বড় একটি অংশ তরুণ। নির্বাচনকে ঘিরে দেশের তরুণদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনাই যেন বেশি থাকে। এই তরুণ শিক্ষার্থীদের  নির্বাচন ভাবনা তুলে ধরেছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের গণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হুমায়রা রহমান সেতু


ক্ষমতার প্রতিযোগিতা নয় নির্বাচন হোক জনকল্যাণের
বাংলাদেশের রাজনীতি হয়ে গেছে ক্ষমতা দখলও লুটপাটের জায়গা৷ প্রতিবারই নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য বিদেশি শক্তিগুলোর সাহায্য নেয় রাজনৈতিক দলগুলো। এটা দেশের সার্বভৌম বিরোধী। এবারও দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র , যুক্তরাজ্য কিংবা ভারতের মতো সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর সাথে সংলাপ চালিয়েছে। স্পষ্টতই এখন প্রতীয়মান হচ্ছে যে বাংলাদেশ সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রের তাঁবেদার। গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচন প্রতিষ্ঠার নামে পুঁজিবাদী ও ক্ষমতালোভী এসব শাসকশ্রেণী মূলত বিদেশিদের স্বার্থ হাসিলে ব্যস্ত। বাংলাদেশের জনগণের জন্য এ ধরনের নির্বাচন কখনোই সুখকর হবে না। তাই, ক্ষমতার প্রতিযোগিতা নয় এমন নির্বাচন চায় যার মাধ্যমে জনকল্যাণমূলক সরকার গঠন সম্ভব।

মো. কামরুল হাসান সৈকত, শিক্ষার্থী, মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়।


নির্দলীয় নিরপেক্ষ ও সর্বদলীয় অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন কাম্য
একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সংবিধান বাস্তবায়নের প্রথম পদক্ষেপ হল নির্বাচন ব্যবস্থা। প্রতিনিধিরা জনগণ ও রাষ্ট্রের স্বার্থে দলমত নির্বিশেষে কাজ করবে এটাই  স্বাভাবিক। কিন্তু স্বাধীনতার পরর্বতীকাল থেকেই আমাদের দেশ চলছে গণতন্ত্রের উলটো রথে। অভ্যুত্থান, সামরিক শাসনের অস্থিরতা শেষে দেখা দিয়েছে পূর্ণাঙ্গ গণতন্ত্র স্থাপনের দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রাম। প্রতিবারই নির্বাচনকে ঘিরে তৈরি হচ্ছে নানা নানা প্রশ্ন। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় রাষ্ট্রের সকল শ্রেণি পেশার মানুষের জীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে এসেছে। অপরিকল্পিত উন্নয়ন, লুটপাট ও দুর্নীতিতে লাগামহীন নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। দেশের প্রতিটি সেক্টরে পড়ছে এর প্রভাব। জনজীবনে অস্বস্তি, উচ্চমূল্যের জীবন যাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে বিরোধী দলগুলোর হরতাল, অবরোধ জনমানুষের জীবনে তৈরি করছে বড় সংকট। এ সব সংকট থেকে বের হয়ে আসতে হলে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ ও সর্বদলীয় অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনী ব্যবস্থা স্থাপন জরুরি। 

নাসিম, শিক্ষার্থী রসায়ন বিভাগ, গণ বিশ্ববিদ্যালয়।


নির্বাচন হোক বাক স্বাধীনতার অধিকার
ভোট একটি স্বতন্ত্র, ন্যায়বিচারক এবং মৌলিক নীতিপরায়ণ সমাজ গঠনে সাহায্য করতে পারে। আমরা চাই এমন নির্বাচন হোক যা নির্ধারণ করবে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ সরকার গঠন প্রক্রিয়া। আমরা চাই দুর্নীতিমুক্ত, রাজনৈতিক স্থিতিশীল, বেকারমুক্ত, সুস্থ সমাজ। জনগণরের বাক স্বাধীনতা চাই। আমি আমার কথা মন খুলে বলতে চাই। যার যার ভোট সে সে দিবে তার নিজের বিচার-দক্ষতা অনুযায়ী যোগ্য প্রার্থীকে। বিতর্কিত, অবৈধ সম্পদশালী প্রার্থী কিংবা এক তরফা, বন্দুকের নলে তাক করা নির্বাচন ও নির্বাচনে প্রার্থীদের টাকা উড়ানোর মচ্ছব ও অসুস্থ রাজনৈতিক চর্চার মাধ্যমে একজন যোগ্য সমাজ সেবক নির্ধারণ কখনোই সম্ভব নয়।

আসিফ ইকবাল, শিক্ষার্থী ডিপ্লোমা ইন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, পাবনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট।


সর্ব সাধারণের অংশগ্রহণমূলক গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক
একটি স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন জনগণের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ এবং ভোটাধিকার নাগরিকের এক ধরনের মৌলিক অধিকার। তাই সকল বৈধ নাগরিকের ভোটাধিকারকে সম্মান করাটাও সকল রাজনৈতিক দলগুলোর কর্তব্য। এই সম্মান ও অধিকার তখনই কার্যকর হয় যখন সর্বদলীয় অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তাই আমরা চাই যে সকল রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করতে পারে এমন নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি করা হোক। কোন ধরনের রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণে বাধা যাতে সৃষ্টি করা না হয়। সঠিক সুষ্ঠু নির্বাচনই পারে যোগ্য প্রার্থী বাছাই করতে। বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য নিরাপদ ভবিষ্যতের পথ সুগম করতে একটি স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন সর্বস্তরের মানুষের কামনা।

হাবিবুর রহমান, শিক্ষার্থী কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইন্জিনিয়ারিং বিভাগ, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট)।