শিক্ষার্থীদের ভাবনায় শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস
মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশের জ্ঞানী-গুণী ও মুক্তবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষদের হত্যা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। যখন তারা বুঝতে পারে বাঙালিদের সাথে যুদ্ধে জেতা সম্ভব নয় তখন নবগঠিত দেশকে সাংস্কৃতিক, সামাজিক ও শিক্ষাগত দিক থেকে দুর্বল করে দেওয়ার ফন্দি আঁটে। পরে পরিকল্পনা মাফিক ১৪ ডিসেম্বর বাঙালির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নির্মমভাবে হত্যা করে বর্বর বাহিনী। সেই দিনের শহিদদের স্মরণে ১৪ই ডিসেম্বরকে 'বুদ্ধিজীবী দিবস' হিসেবে পালন করা হয়। আর এই 'বুদ্ধিজীবী দিবস' নিয়ে প্রতি বছর শিক্ষার্থীদের মনে বিভিন্ন শ্রদ্ধাবোধ ও ভাবনা তৈরি হয়। হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীদের নিয়ে এই ভাবনা তুলে ধরেছেন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের হাবিপ্রবি প্রতিনিধি রিয়া মোদক।
শহিদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মগোপন আমাদের অনুপ্রেরণা
স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আত্মত্যাগ বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড। যা পাকিস্তানি শাসনের নিকৃষ্টতম ও সর্বশেষ অধ্যায়ের সাক্ষী বহন করে।বুদ্ধিজীবীদের হত্যার মাধ্যমে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে যেভাবে মেধাশূন্য জাতিতে পরিণত করা হয়েছিল আজকে স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পেরোলেও আমরা সেই শূন্যতা কাটিয়ে উঠতে পারিনি। তাই অর্ধশত বছর পরেও শ্রদ্ধাভরে স্বরন করি আমাদের সেইসব সূর্য সন্তানদের যারা একটি সুস্থ, সুন্দর, সুশৃঙ্খল জাতি গঠনের প্রত্যাশায় নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।
[মো: মেহেদী হাসান, কৃষি অনুষদ]
বুদ্ধিজীবীরা ঘুমিয়ে আছে বাঙালির অন্তরে
শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস, যে দিনটি আমাদের প্রতিবছর স্মরণ করায় যে হত্যা করে বাংলাদেশিদের "দাবায় রাখতে পারেনি।" ১৯৭১ সালের এই দিনে পরাজিত শক্তি তাদের নিশ্চিত পরাজয় আন্দাজ করতে পেরে এক জঘন্য সিদ্ধান্ত নেয়। যুদ্ধে আমাদের পরাজিত করতে না পেরে জাতির সুর্য সন্তানদের হত্যা করার মিশন হাতে নেয়। কর্তব্য ছিল এই জাতিকে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে পঙ্গু করে "তলাবিহীন ঝুড়িতে" পরিণত করা। আজ আমরা অনেক উন্নতি করছি, অর্থনৈতিকভাবে অনেক শক্তিশালী হয়েছি। কিন্তু আমি বলব হয়ত সেদিন এই হৃদয় বিদারক ঘটনা না ঘটলে এই জাতি আরও কয়েকশ বছর এগিয়ে যেতে পারত। তবে এটাও পরাজিত শক্তির জানা উচিত, তারা আমাদের হত্যা করে "দাবিয়ে রাখতে পারেনি"।
[আবু সাদাত মো: সায়েম, ম্যানেজমেন্ট বিভাগ]
শহিদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ ভুলবার নয়
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আমাদের জাতীয় জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা বাংলার বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। এ হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে তারা দেশের ভবিষ্যৎকে অন্ধকারে নিমজ্জিত করতে চেয়েছিল। কিন্তু শহিদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ ছিল আমাদের জাতীয় চেতনা জাগ্রত করার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। আমরা শিক্ষার্থীরা শহিদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগের কথা ভুলব না। আমরা তাদের স্মরণে কাজ করে যাব। আমরা দেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ জাতি হিসেবে গড়ে তুলবো।
[মরিয়ম নেসা স্মৃতি, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগ]
শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হয়ে উঠেছে আমার কাছে আফসোস এবং অবর্ণনীয় মনঃকষ্টের প্রতীক।যগোবিন্দচন্দ্র দেব,মুনীর চৌধুরী,আবদুল আলীম চৌধুরীর মতো গুণী এবং মেধাবী শিক্ষক,ডাক্তারেরা স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশের পুনর্গঠনে অংশ নিতে পারলে আজ বাংলাদেশ বর্তমান অবস্থানের চেয়ে একশ বছর এগিয়ে থাকতো।এই আফসোস নিয়েই আজ শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জাতির সেই সূর্য সন্তানদের প্রতি বিনম্র চিত্তে শ্রদ্ধা জানাই।তাঁদের উত্তরসূরিরা তাঁদের স্বপ্নের বাংলাদেশকে পথ হারাতে দেবে না।
[মো. শহিদুজ্জামান সরকার, মার্কেটিং বিভাগ]