দেশের শিক্ষার্থীরা দেখে দেখে লিখে ঘরে ঘরে সহ-সভাপতি হয়ে উঠবে
ইংলিশ মিডিয়ামের নবম-দশম গ্রেডের বিজ্ঞানের সিলেবাস দেখুন। দেখবেন ওরা কতো এডভান্স লেভেলের ফিজিক্স, কেমেস্ট্রি, বায়োলজি ও ম্যাথ পড়ে। পাশাপাশি আপনি বাংলা মিডিয়ামের নতুন কারিকুলামের নবম-দশম গ্রেডের বিজ্ঞানের বই দেখুন, তুলনা করুন।
কিছুদিন পরপর যারা কারিকুলাম বদলায়, তাদের বেশিরভাগের সন্তানরা পড়ে ইংলিশ মিডিয়ামে। সেসব স্টুডেন্টদের একটা বড় অংশ দেশে থাকবে না।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ স্টুডেন্ট হলো বাংলা মিডিয়ামে পড়া। তাদের বেশিরভাগ আসে গ্রাম থেকে, মফস্বল শহর থেকে। যারা স্কুলে ভালো শিক্ষক পায় না, কলেজে ভালো শিক্ষক পায় না। এখন যদি সিলেবাসও দুর্বল থাকে, তাহলে কি হবে?
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা-গবেষণার সংস্কৃতিটা আরো দুর্বল হবে। অনলাইন কোচিং সেন্টারে ব্যবসা ভালো হবে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে বের হয়ে ২৪-২৫ বছরের স্টুডেন্টরা অনলাইন কোচিং সেন্টারে স্পোকেন ইংলিশ শিখবে। পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন শিখবে।
চাকরির ইন্টারভিউতে কীভাবে ড্রেস পরবে, সেটা শিখবে। কিন্তু রাষ্ট্রের কোন অভিভাবক ধমক দিয়ে বলবে না স্কুল-কলেজে কি শিখাইছে তোদেরকে?
একই সময়ে, চীন, সিঙ্গাপুর, জাপানের স্টুডেন্টরা নবম-দশম গ্রেডে এডভান্স লেভেলের ফিজিক্স, কেমেস্ট্রি, বায়োলজি, ম্যাথমেটিক্স পড়বে। ঠিক একই গ্রেডের বাংলাদেশের স্টুডেন্টরা পরিবেশ দেখে দেখে খাতায় বর্ণনা লিখবে।
সেসব দেশের স্টুডেন্টরা যখন বড় বড় উদ্ভাবক হয়ে উঠবে, আমাদের ছেলে-মেয়েরা তখন বিদেশে শ্রমনির্ভর কাজ করবে। নয়তো দেশে সরকারি চাকরি নিয়ে পড়ে থাকবে। তার চেয়ে বড় কথা, দেশের গলিতে গলিতে, গ্রামে গ্রামে কমিটি তো আছেই। ঘরে ঘরে অসংখ্য সহ-সভাপতি তৈরি হবে।
লেখক: যুক্তরাষ্ট্রের পিটিসি থেরাপিউটিকস’র সিনিয়র সায়েন্টিস্ট