ফ্রিল্যান্সারদের আয়ের উপর আগেও ট্যাক্স ছিল না, এখনো নেই
‘ফ্রিল্যান্সারদের আয়ের উপর ১০% ট্যাক্স’—এমন খবরে বাংলাদেশের পুরো মিডিয়ার কাণ্ডকীর্তি দেখে আমি একবারে বেকুব হয়ে গেলাম। দু-একদিনের মধ্যে পুরো ফ্রিল্যান্সার কমিউনিটিতে ওনারা যে প্যানিক ক্রিয়েট করল, আনবিলিভেবল।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক যে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল, এটা একদমই রুটিন প্রজ্ঞাপন। প্রজ্ঞাপনের কারণ হল সেবা খাত, রেভিনিউ শেয়ারিং খাত এইসব খাত থেকে বিদেশ থেকে যে আয় আসে, সেই আয়ের উপর যে কর তা আগে বিভিন্ন কর অঞ্চলে জমা দিতে হতো।
নতুন আয়কর আইন আসার পর সরকার নিয়ম করলো এই খাতের কর বিভিন্ন কর অঞ্চলে জমা না দিয়ে মাত্র একটা কর অঞ্চলের কোডে জমা দেয়া লাগবে। ওই কর অঞ্চলও (ঢাকা-১১) একটা চিঠি দিয়ে তা বাংলাদেশ ব্যাংককে মনে করায়ে দিছে। এটাই। এর বেশি আর কোন কথা চিঠিতেও লেখা নাই, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনেও লেখা নাই।
আরও পড়ুন: ৫-৬ লাখ ফ্রিল্যান্সার ঘরে বসেই বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে: প্রধানমন্ত্রী
আয়কর আইনে স্পষ্ট করে লেখাই আছে ফ্রিল্যান্সারদের কোন ট্যাক্স দেয়া লাগবে না। এই একটা টার্ম এতই বহুল চর্চিত যে এনবিআর বিট কভার করে এমন প্রত্যেকটা সাংবাদিকের এই জিনিস জানার কথা। ব্রেকিং নিউজের দেশে ২৭ তারিখ প্রজ্ঞাপন জারির পর ওইদিন কেউ একটা টু শব্দও করলেন না, করলেন ২৮ তারিখ—যেদিন থেকে টানা তিনদিনের বন্ধ।
ফ্রিল্যান্সারদের সাক্ষাৎকার, মাননীয় মন্ত্রীর সাক্ষাৎকার নিয়ে উড়ায়ে ফেললেন। কিন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক বা এনবিআরের কারো কথাই কোট করলেন না। অথচ আইন আমাদের, প্রজ্ঞাপন বাংলাদেশ ব্যাংকের।
ফ্রিল্যান্সারদের আয়ের উপর আগেও ট্যাক্স ছিল না, এখনো নেই। এরপরও প্রোপাগান্ডা ছড়ায়ে যারা প্যানিক সৃষ্টি করতেছেন, স্রষ্টা তাঁদের অনেক মঙ্গল করুক। রিজার্ভ দিন দিন কমতেছেই, ফ্রিল্যান্সাররাও যদি ট্যাক্সের ভয়ে ব্যাকডোর দিয়ে ডলার আনা শুরু করে, তখন তো অবস্থা আরো খারাপ হবে।
লেখক: কর পরিদর্শক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড