পরিবারের সদস্য নয়, আত্মীয়ের মতো ঈদ করতে যাই

  © টিডিসি ছবি

ঈদ সেই ছোট্ট বেলার উঁকি দেওয়া ঈদ আনন্দ যুবক বয়সে কখনো হতাশা, কখনো ঝুঁকে আসা আনন্দে রুপ নেয় আবার কখনো অপেক্ষার প্রহর হয়না যেনো শেষ, এমন বেদনায় কাতর হয়ে যায় আমার মতো অনেক স্বপ্নবাজরা।

ছোট্ট বেলায় ঈদ আনন্দ মনে আনন্দের মেলা নিয়ে আসতো, অপেক্ষায় থাকতাম যারা পরিবার ছেড়ে বাহিরে আছে তাদের জন্য। রাত জেগে অপেক্ষা করতাম, আশায় থাকতাম, যপ্রিয় মানুষগুলো কি  মার্কেট আনবে সেটা রাতেই দেখার জন্য। আবার  ফলমূলসহ খাবারের জন্য যা নিয়ে  আসতে সেটা ভাগ করে বেশি অংশটা নিয়ে সবার আড়ালে গোপনের লুকিয়ে রেখে ঘুমিয়ে পড়তাম।

যখন সেই ছোট্ট বেলার ইতি টেনে পরিবার ছেড়ে চলে আসলাম দুরে তখন থেকেই ছোট্টোবেলার ঈদ স্মৃতির সেখানেই কবর হলো,তারপর যখন ঈদ আসে মাঝেমধ্যে পরিবারের মানুষের সাথে সাক্ষাৎ করার উদ্দেশ্য নিয়ে দুই-তিন দিনের জন্য যাই তখন হঠাৎ নিজেকে আবিষ্কার করলাম ঐ পরিবারের আত্নীয় হিসাবে। কেননা পরিবারের সদস্যের মতো আর সময় দেওয়া হয় না। দেওয়া হয় আত্নীয়ের মতো করে।

সেই থেকে হলাম নিজ পরিবারের পরিচিত আপনের মতো আত্নীয়, এটা শুধু আমি একাই না আমার মতো হাজারো তরুণ-তরুণী এ কাতারে থাকবে। আবার যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসাবে নিজেকে আবিষ্কার করলাম এবং ছাত্ররাজনীতির জড়িয়ে গেলাম  তখন থেকেই  স্বপ্নই দেখে সে পথে লড়াই- সংগ্রাম শুরু করে দিলাম। 

শুরু হলো ছাত্ররাজনীতিতে ইমেজ রক্ষা করে টিকে থাকার লড়াই-সংগ্রাম। তখন থেকে জীবনে যত ঈদ আসে তা যে আশা হতাশা আর অপেক্ষার পাল্লা নিয়ে আমাদের জীবনে আসে। এখন ঈদ আসলে মনে হয় এবছর আত্মীয় হিসাবে পরিবারে না গিয়ে ক্যাম্পাসেই থেকে যাই, কেননা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ছাত্ররাজনীতির বড় একটা স্বপ্ন থাকে বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি ও নেতৃত্ব দেওয়া, গত দুই তিন ঈদ আগে কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা যখন বলে গেলো ঈদের পরেই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটি,তখন থেকেই মনে হয় যদি আমি দুই-তিনটা দিনের জন্য বাড়িতে যাই তাহলে আমি রাজনীতিতে হয়তো পিছিয়ে যাবো, ঈদের পরেই তো কমিটি আর অন্য প্রতিযোগিরা বুঝি আমার চেয়ে এগিয়ে যাবে তাদের স্বপ্নের পক্ষে।

তখন থেকেই নিজের স্বপ্ন আর পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ এদুটোর মাঝে সাপ-নেউলের খেলা চলছে। এখন যখন ঈদ আসে মনে আশা জাগে মনে হয় এইতো আমাদের কমিটি হবে,আবার যখন ঈদ চলে যায়, সময় চলে যায়, কমিটির কোন খোঁজ নেই তখন মনে হয় ঈদ আশা নিয়ে এসে হতাশা দিয়ে গেলো আর এভাবেই যাচ্ছে দিন। 

এখন আমাদের জীবনে ঈদ আশা নিয়ে আসে, আশা নিয়ে এসে ঈদ হতাশায় রুপান্তরিত হয়,আবার সেই হতাশা সময়ের সাথে সাথে অপেক্ষায় পরিণত হয়, দেখা যাচ্ছে অপেক্ষার প্রহর হয়না যেনো শেষ। মানুষ যেহেতু আশা নিয়ে বাঁচে, তাই আমরাও আমাদের অভিভাবকদের প্রতি বরাবরের মতো আস্থা বিশ্বাস রেখে  সাফল্যের আশা নিয়ে ঈদ বিনিময় করতে চাচ্ছি যারা ঈদ উপভোগ করবে তাদের সাথে। 

লেখক:  উপ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা


সর্বশেষ সংবাদ