বঙ্গবন্ধুর উক্তির অনুসরণেই প্রকৃত মুক্তি
শুধু আউটকাম বেইজড এডুকেশন(ওবিই) নয়, দরকার আউটকাম বেইজড ম্যান (ওবিএম)। যাদের যোগ্যতা হবে দক্ষতা, সততা ও কৃতজ্ঞতা। এখনও এদেশ থেকে প্রতিবছর পাঁচ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পায় পার্শ্ববর্তী দেশ। তাহলে কি দাঁড়াল- দেশের অভ্যন্তরের চাকরি বাজারেই এখনও দক্ষ মানুষের গভীর শূন্যতা। অথচ আমাদের মানুষ বেকার। যতদিন না STEM (Science, Technology, Engineering and Mathematics) আমাদের ধ্যান, জ্ঞান ও অধ্যাবসায়ে পরিণত হবে, ততদিন আমরা পিছিয়ে থাকব।
সরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরি মানে মোঘল আমলের রাজার মসনদ। তাদের অনিয়ম দেখে কিছু বললে তারা সাপের মত ফোঁস করে ওঠে। আমি জানি একটি বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের কথা। তিনি বছরের পর বছর ক্লাস নিতেন না। একদিন তার একজন জুনিয়র সহকর্মীর সাথে এয়ারপোর্টে দেখা হলে কথপোকথনে তিনি জানান যে, তিনি এয়ারপোর্টের আশেপাশে বাস করেন। জুনিয়র কলিগ জিজ্ঞাসা করেন" স্যার বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে অসুবিধা হয় না?" তিনি উত্তরে বলেন, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে যানই না। সেই লোকটিও এক নম্বর গ্রেডের অধ্যাপক হয়ে সম্প্রতি অবসরে গেছেন।
স্কুল-কলেজের শিক্ষকগণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে শৈল্পিক জড়তা তৈরি করে রাখেন, যাতে তাদেরকে প্রাইভেট পড়তে বাধ্য হতে হয়। বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখেছি, একটি গ্যাস কোম্পানির একজন চাকুরে ৭ দিন বিনা নোটিশে অনুপস্থিত। তাকে মোবাইলে ফোন করেও যখন পাওয়া যায়নি তখন তার হাজিরা খাতায় দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি লাল কালি দিয়ে অনুপস্থিতি চিহ্নিত করলে অনুপস্থিত ব্যক্তি ফিরে এসে খুব রাগান্বিত হয় ও হম্বিতম্বি করে এই মর্মে যে, কার এতবড় সাহস যে তার হাজিরা খাতাতে অনুপস্থিত লেখে।
কিন্তু এক্ষেত্রে জিহাদী হম্বিতম্বির বিষয়টি বেশিদূর এগোয়নি কারণ যিনি অনুপস্থিতির বিষয়টি কতৃপক্ষের কাছে তুলে ধরেছিলেন তিনিও স্থানীয়। নিশ্চয়ই বঙ্গবন্ধু এমন যথেচ্চার দেখার জন্য সারা জীবন আন্দোলন সংগ্রাম করেন নি। ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে যে দেশ স্বাধীন হয়েছে তার উন্নয়ণে বঙ্গবন্ধুর উক্তির বাস্তবায়নই যথেষ্ট। তিনি বলেছিলেন "যিনি যেখানে রয়েছেন, তিনি সেখানে আপন কর্তব্য পালন করলে দেশের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে না"।
আসুন দেশকে ভালবাসি, দেশকে গড়ে তোলার চেষ্টা করি। এতেই জীবনের প্রকৃত সার্থকতা।
লেখক: উপাচার্য, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়