মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষায় যাদের আশানুরূপ ফল হয়নি

মির্জা অন্ত আহদী নূর
মির্জা অন্ত আহদী নূর  © ফাইল ফটো

স্নেহের অনুজবৃন্দ! তোমাদের যাদের মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষায় আশানুরূপ ফল আসেনি তাদের এখনই হতাশ হওয়ার কিছু নেই। সামনে আরও অনেকগুলো ভর্তি পরীক্ষা আছে তোমাদের; যেগুলোতে ভালো করতে তোমাদের এখন মানসিকভাবে স্থির থেকে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।

যারা মেডিকেল টার্গেট করে প্রস্তুতি নিয়েছিলে তাদের সামনে একই প্রস্তুতিতে ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে যা আগামী ২৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে এবং সেখানে অনেকেই প্রত্যাশিত ফল পাবে আশা করি। এজন্য হতাশ না হয়ে প্রস্তুতি চলমান রাখতে হবে। এরপরে বিইউপি ও এমআইএসটি এর পরীক্ষা রয়েছে।

আরও পড়ুন: ঢাবির সাত কলেজের ভর্তি পরীক্ষা শুরু ১৬ জুন

তবে মেডিকেল লক্ষ্য নিয়ে প্রিপারেশন নেওয়ায় এতো অল্প সময়ে এসবের প্রস্তুতি নেওয়া যথেষ্ট কষ্টসাধ্য। তোমাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো আশাহত হয়ে দ্বিতীয়বার মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির কথা ভাবছো। তবে এবছরের সবগুলো ভর্তি পরীক্ষা না দিয়ে এরকম সিদ্ধান্ত নিলে তুমি নিজের অনেকগুলো সুযোগ হাতছাড়া করবে। তাই আমার পরামর্শ থাকবে, এবছরের সবগুলো ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে তারপর এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে।

তবে তোমাদের আশাহত হওয়ার কিছুই নেই। মূলত ঈদুল ফিতরের ছুটির পর বাকি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে। আগামী ৬ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘খ’ ইউনিট (এবছর ঢাবিতে ‘খ’ ও ‘গ’  উভয় ইউনিটেই বিভাগ পরিবর্তনের জন্য পরীক্ষা দেওয়া যাবে) এবং ১২ মে ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা রয়েছে এবং এরপর একে একে রাবি, চবি, জাবি এবং কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায়ও ভালো করার অনেক সুযোগ রয়েছে তোমাদের।

আরও পড়ুন: জালিয়াতির অভিযোগে সাতশো শিক্ষার্থীকে ভারতে ফেরত পাঠাচ্ছে কানাডা

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিজ্ঞান ইউনিটে পরীক্ষার জন্য যেকোনো একটি ভালো এডমিশন গাইড ও প্রশ্নব্যাংক থেকে তোমাদের নিয়মিত প্র্যাকটিস করে যেতে হবে এবং মডেল টেস্ট দিয়ে নিজের কোথায় কোথায় ভুল হচ্ছে সেই জায়গাগুলোতে আরও ভালো প্রস্তুতি নিতে হবে।

বিভাগ পরিবর্তনের জন্য ঢাবি ‘ঘ’ ইউনিটের পরিবর্তে অন্য ইউনিটগুলোর সাথে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে ‘খ’ ইউনিটের জন্য মেডিকেল প্রস্তুতি নেওয়া শিক্ষার্থীদের শুধু বাংলার প্রস্তুতি নিলেই হবে। কারণ খ ইউনিটের সিলেবাসের ইংরেজি এবং সাধারণ জ্ঞানের প্রস্তুতি তারা মেডিকেল প্রস্তুতির সাথেই নিয়ে ফেলেছে। তাই এখানে তাদের ভালো করার সম্ভাবনার হার অনেক বেশি।

আরও পড়ুন: ঢাবির গার্হস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ১০ জুন

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা লক্ষ্য নিয়ে এবং প্রায় কাছাকাছি প্রস্তুতিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এর ‘ডি’ ইউনিটের পরীক্ষায় ভালো করার নজির পূর্ববর্তী ব্যাচগুলোতে রয়েছে। কারণ এখানে জীববিজ্ঞান বিষয় থেকে বেশিরভাগ প্রশ্ন হয়ে থাকে।

গতবছর তোমাদের এই সময়টা আমিও পার করে এসেছি এবং পরবর্তী সময়ে প্রস্তুতি নিয়ে ঢাবির ‘ঘ’ ইউনিটের মেধাতালিকায় ৩৮তম স্থান অধিকার করি। প্রস্তুতি নিতে গিয়ে যে সমস্যাটির সম্মুখীন সবচেয়ে বেশি হয়েছি তা ছিল সময় ব্যবস্থাপনা। এর সমাধানের জন্য বেশি বেশি মক টেস্ট বা মডেল টেস্ট দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই।

পরীক্ষার হলে এমসিকিউ এবং লিখিত উভয়টিতে ভালো করতে হলে নির্দিষ্ট সময়ের ভেতর পরীক্ষা শেষ করার অভ্যাস অনুশীলনেই করতে হবে। বারবার মডেল টেস্ট দিয়ে এই বিষয়টিকে নিজেদের আয়ত্তে আনলে পরবর্তী সকল পরীক্ষা প্রত্যাশিতভাবে দিতে পারবে তোমরা।

আরও পড়ুন: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাফিস চান্স পেলেন যুক্তরাষ্ট্রের এমআইটিতে

এই সময়টিতে শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে দৃঢ় রাখতে অনেক সহায়ক হয় যদি তাদের অভিভাবক তাদের পাশে থাকে। তাই অভিভাবকবৃন্দের প্রতি আহবান থাকবে এই সময়ে তাদের সন্তানের পাশে থাকার।

সকল ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীদের সামনের পরীক্ষাগুলোর জন্য সফলতা কামনা করছি। মানসিকভাবে সবল থেকে সঠিক পথে এগোলে তোমরাও সফল হবে। মনে রাখবে, ভর্তি পরীক্ষা তোমার শিক্ষাজীবনের একটি ধাপ থেকে পরের ধাপে যাওয়ার একটি সিড়ি। এটি কোনোভাবেই তোমার সমগ্র শিক্ষাজীবনকে মূল্যায়নের মাপকাঠি নয়।

লেখক: শিক্ষার্থী, ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার মেধাক্রম– ৩৮তম (বিজ্ঞান বিভাগ থেকে)।

(অনুলেখন- তৌফিকুল ইসলাম হিমেল)


সর্বশেষ সংবাদ