২৮ আগস্ট ২০২২, ১৬:১৪

আশ্বাসে আশ্বাসে কেটে গেল তিন বছর

নিবন্ধন প্রত্যাশীরা  © সংগৃহীত

বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্রায় তিন বছর হতে চললেও এখনো ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা আয়োজন করতে পারেনি বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। চাকরিপ্রার্থীরা পরীক্ষা আয়োজনের দাবিতে নয়বার স্মারকলিপি এবং দুই বার মানববন্ধন করলেও প্রতিবার শুধু আশ্বাসই মিলেছে। তবে এই আশ্বাসের বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে দীর্ঘ তিন বছর ধরে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন প্রায় ১২ লাখ চাকরিপ্রার্থী।

রবিবার (২৮ আগস্ট) দ্রুত সময়ের মধ্যে ১৭তম নিবন্ধনের পরীক্ষা আয়োজনের দাবিতে নবম বারের মতো স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন নিবন্ধন প্রার্থীরা। প্রার্থীদের পক্ষে জসিম উদ্দীন, অভি খান, ইমরুল হাসান, জাহান, দেলোয়ার, রাহুল, রিয়াদ ও মাহমুদ এই স্মারকলিপি জমা দেন।

স্মারকলিপি জমা দেওয়া শেষে প্রার্থীরা এনটিআরসিএ পরিচালক (পরীক্ষা মূল্যায়ন ও প্রত্যয়ন) তাহসিনুর রহমান এবং সচিব ওবায়দুর রহমানের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এসময় এই দুই কর্মকর্তা আগামী ডিসেম্বর মাসে ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা আয়োজনের আশ্বাস দেন।

স্মারকলিপি জমা দেওয়া শেষে নিবন্ধন প্রার্থীরা দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ২০২০ সালে ১৭তম নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সেই বছরই প্রিলি ও লিখিত পরীক্ষা আয়োজনের কথা থাকলেও প্রায় তিন বছর হতে চললেও এখনো ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা আয়োজন করতে পারেনি এনটিআরসিএ। দীর্ঘদিন ধরে পরীক্ষার অপেক্ষায় থাকা চাকরিপ্রার্থীরা হতাশায় ভুগছেন। পরীক্ষা কবে হবে সেটি কেউ জানে না। আমরা চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছি। আমাদের অনেকের বয়স ৩৫ বছর অতিক্রম হয়ে গেছে। এছাড়া অনেকের বয়স ৩৫ বছরের কাছাকাছি।

তারা অভিযোগ করে বলেন, এনটিআরসিএ কেবল তাদের আশ্বাস দিচ্ছে। তবে সেই আশ্বাস বাস্তবায়ন হয়নি। তাই আমরা আর আশ্বাস চাই না। দ্রুত সময়ের মধ্যে ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনের পরীক্ষা চাই।

রবিবার এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান বরাবর জমা দেওয়া স্মারকলিপিতে বলা হয়, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) সারা দেশের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের লক্ষ্যে প্রতিবছর শিক্ষক/প্রভাষক পরীক্ষা গ্রহণ করে থাকে। ২০০৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত এনটিআরসিএ প্রতিবছর ধারাবাহিকভাবে একটি করে নিবন্ধন পরীক্ষা নিয়েছে।

আরও পড়ুন: ৩ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের সুপারিশ

এরই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ২২ জানুয়ারি ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে ২০২০ সালের ১৬ মে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা এবং ৭ ও ৮ আগস্ট লিখিত পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও মহামারি করোনার কারণে পরীক্ষা সাময়িক সময়ের জন্য স্থগিত করা হয়। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গত তিন বছরে ৪১/৪২/৪৩/৪৪তম বিসিএস, ব্যাংক ও প্রাথমিক স্কুলের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষাসহ দেশে শতাধিক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু হয়নি ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা।

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার দাবিতে আমরা কয়েকবার চেয়ারম্যান বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি। সর্বশেষ ঈদের কিছুদিন আগে আমরা একটি মানব-বন্ধন করেছিলাম। সেই মানব-বন্ধন শেষে এনটিআরসিএর কর্মকর্তারা ঈদের পর দ্রুত পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে আমাদের কথা দিয়েছিলেন। এনটিআরসিএ’র নীতিমালায় চাকরি পাওয়ার সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে আমাদের প্রায় ৩০ শতাংশ পরীক্ষার্থীর বয়সসীমা ৩৫ অতিক্রম হয়ে গেছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় দ্রুত সময়ের মধ্যে ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনের পরীক্ষা আয়োজনের দাবি জানাচ্ছি।