অভিযোগের প্রতিকার নেই এনটিআরসিএতে
৬ মাসের ডিপ্লোমায় আইসিটি শিক্ষক নিবন্ধন সনদধারী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরিরতদের রিট নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন এনটিআরসিএ’র কর্মকর্তারা। তবে যাদের জন্য এত আয়োজন তাদের সমস্যা সমাধানে উদাসীন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানটি। প্যাটার্ন জটিলতা, ভুল চাহিদাসহ নানা সমস্যার দিকে কোনো নজর নেই প্রতিষ্ঠানটির। এতে করে চরম বিপাকে পড়েছেন প্রার্থীরা।
প্রার্থীদের অভিযোগের পাহাড় জমলেও সেদিকে কোনো কর্ণপাতই করছে প্রতিষ্ঠানটি। যেন গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করাই প্রতিষ্ঠানটির একমাত্র কাজ। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর সব সমস্যা প্রার্থীর নিজের। এনটিআরসিএ’র এমন মনোভাবে শিক্ষকতার আগ্রহ হারাচ্ছেন অনেকে। এতে করে ভবিষ্যতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক সংকট দেখা দিতে পারে।
জানা গেছে, তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের লক্ষ্যে বেসরকারি স্কুল-কলেজ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের শূন্য পদের তথ্য ই-রিকুইজিশনের মাধ্যমে সংগ্রহ করে এনটিআরসিএ। সে সময় সংযুক্ত প্রতিষ্ঠানে বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ের চাহিদা প্রদানের ক্ষেত্রে কারিগরি (টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট অনলি) লেখার কোনো সুযোগ ছিল না। তবে অন্য বিষয়ের ক্ষেত্রে এটি উল্লেখ করার সুযোগ ছিল। পরবর্তীতে এনটিআরসিএকে বিষয়টি জানানো হলে তারা পুনরায় প্রতিষ্ঠান প্রধানদের চাহিদা দিতে বলেন। তবে পুনঃচাহিদা প্রদানের ক্ষেত্রেও একই ধরনের সমস্যায় পড়েন প্রধানরা। সফটওয়্যার আপডেট না করে শূন্য পদের তথ্য সংগ্রহ করায় এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে অনেকে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েও যোগদান করতে পারেনি। অনেকে যোগদান করলেও এমপিওভুক্ত হতে পারছেন না। এসব বিষয়ে একাধিকবার এনটিআরসিএতে অভিযোগ করেও কোনো সমাধান পাননি প্রার্থীরা।
আরও পড়ুন: রুম সংকটে আটকে আছে ১৭তম নিবন্ধনের প্রিলি
অন্যদিকে বয়স ৩৫ বছর অতিক্রম করা শিক্ষকদের নিয়োগ দিয়েছে এনটিআরসিএ। তবে এসকল শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত হতে জটিলতা দেখা দিয়েছে। তবে বিষয়টি সমাধানে কার্যত কোনো উদ্যোগ নেয়নি এনটিআরসিএ। প্রার্থীরা বিষয়টি এনটিআরসিএকে লিখিতভাবে জানালেও তারা জটিলতা নিরসনে কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
কমিটি করে দায় শেষ: যোগদান করতে না পারা শিক্ষকদের সমস্যা সমাধানে কমিটি করেছে এনটিআরসিএ। তবে এই কমিটিকে কেবল তথ্য সংগ্রহ করতেই দেখা গেছে। কবে নাগাদ প্রার্থীরা যোগদান করতে পারবেন কিংবা এমপিওভুক্ত হতে পারবেন সে বিষয়ে কোনো উত্তর নেই এনটিআরসিএ’র কাছে।
জবাবদিহিতার অভাব: নিবন্ধিত প্রার্থীরা মনে করেন, এনটিআরসিএকে মনিটরিং ও জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসা দরকার। এটি না করা গেলে চাকরিপ্রার্থীদের ভোগান্তি লাঘব হবে না। প্রতিটি গণবিজ্ঞপ্তি থেকে এনটিআরসিএ বিপুল অংকের অর্থ উপার্জন করে। এটি কোন খাতে ব্যায় হয় সেটিরও হিসেব রাখা জরুরি। একটি প্রতিষ্ঠানে জবাবদিহিতা না থাকলে তাদের খামখেয়ালিপনা কখনো বন্ধ হয় না বলেও অভিমত তাদের।
আরও পড়ুন: রিটের সুরাহা না হলে বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তির ফল নয়: এনটিআরসিএ
অধিদপ্তরের সাথে সমন্বয় নেই: চাকরিপ্রার্থীদের নানা সমস্যার মূল কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের সাথে এনটিআরসিএ’র সমন্বয়হীনতায়কেই দায়ী করা হচ্ছে। শূন্য পদের তথ্য সংগ্রহ করা, চূড়ান্ত সুপারিশপত্র দেয়ার আগে অধিদপ্তরকে অবহিত না করা এবং সমস্যা সমাধানে মহাপরিচালকদের সাথে বৈঠক করতে না পারা এর মূল কারণ।
এসব বিষয়ে জানতে এনটিআরসিএ’র চেয়ারম্যান এনামুল কাদের খানকে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।