শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা থেকে প্রিলি তুলে দেওয়ার চিন্তা
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশ পর্যায়ে শিক্ষক নিয়োগের যোগ্যতা অর্জন করতে হয় নিবন্ধন পরীক্ষার মাধ্যমে। বিসিএসের মতো প্রিলিমিনারি, লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার মাধ্যমে এ সনদ অর্জন করতে হয়। তবে একটি নিবন্ধন কার্যক্রম শেষ করতে দীর্ঘদিন লাগায় পরীক্ষা পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) বলছে, পরীক্ষার সয়ম কমিয়ে আনতে পরবর্তী নিবন্ধন পরীক্ষা থেকে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা তুলে দেওয়া হতে পারে। এক্ষেত্রে লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে প্রার্থী বাছাই করা হতে পারে।
জানতে চাইলে এনটিআরসিএ সচিব এ এম এম রিজওয়ানুল হক দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘বর্তমানে নিবন্ধন পরীক্ষা সম্পন্ন হয় তিনটি ধাপে। আমরা একটি ধাপ কমিয়ে আনতে চাচ্ছি। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতিগত অনুমোদনও পাওয়া গেছে। জনপ্রশাসন এবং আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ বিভাগের মতামত পাওয়ার বোর্ড সভায় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
দুটি ধাপে পরীক্ষা হলে প্রিলি অথবা লিখিত অংশের যে কোনো একটি বাদ দিতে হবে। আপনারা কোনটি বাদ দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে এনটিআরসিএ সচিব আরও বলেন, ‘যদিও বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে প্রাথমিকভাবে নিবন্ধন পরীক্ষা থেকে প্রিলিমিনারি অংশ বাদ দেওয়া হতে পারে।’
গত ২৫ মে এনটিআরসিএর নানা বিষয় নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সভাকক্ষে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ও সভায় শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা পদ্ধতিতে পরিবর্তনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
শূন্যপদের দ্বিগুণ প্রার্থী ভাইভা দিতে পারবেন
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শূন্য পদের সংখ্যার দ্বিগুণ প্রার্থীকে ভাইভার জন্য ডাকা হবে। অর্থাৎ শূন্য পদের সংখ্যা ৫০ হাজার হলে ভাইভা এক লাখ প্রার্থী অংশগ্রহণ করবেন। শুধু ভাইভা নয়; চূড়ান্ত ফলও শূন্য পদের সংখ্যা অনুযায়ী দেওয়া হবে। যতগুলো পদ শূন্য থাকবে তার চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি প্রার্থীকে চূড়ান্তভাবে পাস করানো হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক উপসচিব জানান, শূন্য পদের সংখ্যার দ্বিগুণ প্রার্থীকে ভাইভার জন্য ডাকবে এনটিআরসিএ। এ ছাড়া যতগুলো পদ তার চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি প্রার্থীকে চূড়ান্তভাবে পাস করানো হবে। অর্থাৎ পদের সংখ্যা এক লাখ হলে উত্তীর্ণ হবে এক লাখ ২০ হাজার প্রার্থী।
বিজ্ঞপ্তির দিন থেকে বয়স হিসেব
এখন থেকে শিক্ষক নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দিন থেকে প্রার্থীদের বয়স গণনা করতে হবে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষকে (এনটিআরসিএ)। গণবিজ্ঞপ্তিত প্রকাশের সময় পৃথকভাবে বয়স গণনা করা যাবে না। এর ফলে গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের ক্ষেত্রে বয়সের বাধা উঠে যাচ্ছে।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, একজন প্রার্থীর নিবন্ধন সনদ অর্জন করতে গিয়ে কয়েক বছর লেগে যায়। যার ফলে গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সময় তার বয়স থাকে না। ওই শিক্ষক পরবর্তীতে আবেদনের সুযোগও পান না। এজন্য সংশোধন হতে যাওয়া নীতিমালায় শিক্ষক নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সময় প্রার্থীর বয়স নির্ধারণ করা হবে। গণবিজ্ঞপ্তির সময় আলাদা করে বয়স হিসেব করা হবে না।'
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, 'নীতিমালা সংশোধনের বিষয়টি এখন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এরপর আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত নিয়ে এটি প্রকাশ করা হবে। এর আগে কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে সেটি এই নীতিমালার আওতায় আসবে না।'