সুযোগ বঞ্চিত ১-১৫তম নিবন্ধন সনদধারীদের প্রতিবাদ ও দাবি
গত মঙ্গলবার গণমাধ্যমে প্রকাশিত এনটিআরসিএ কর্মকর্তার কন্ঠ বিকৃত শিরোনামে একটি সংবাদ সকল নিবন্ধন সনদধারীদের দৃষ্টি গোচর হয়েছে। প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে 'সনদ বাঁচাও, আবেদনের সুযোগ চাই আন্দোলনের' সভাপতি রাসেল আহসান, সাধারণ সম্পাদক মো. ওবাইদুল ইসলাম, মুখপাত্র মো. মাহমুদুল হাসান অর্থ সম্পাদক এস এম রুহুল আমিন এবং অর্থ সম্পাদক এস এম নাসিমুর রহমান। প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে তাদের বক্তব্য নিম্নরূপ
১-১৫তম নিয়োগ বঞ্চিত সকল নিবন্ধন সনদধারী বিভিন্ন জেলা উপজেলা ও প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দা। এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতা ও বয়স ৩৫ বছর অতিক্রম না হওয়া নিবন্ধনধারীরা সংবিধানের ২৭, ২৯ ও ৩১ ধারা অনুযায়ী এনটিআরসিএ কর্তৃক প্রকাশিত যেকোনো গগণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ পাওয়ার যোগ্যতা রাখে। সনদ বাঁচাও, আবেদনের সুযোগ চাই একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। যেহেতু নিয়োগের সম্পূর্ণ কার্যক্রম এনটিআরসিএ কর্তৃক পরিচালিত হয়, সেহেতু নিবন্ধনধারীদের নিয়োগ ব্যবসায়ী বলা হাস্যকর ছাড়া কিছু নয়।
সভাপতি রাসেল আহসান বলেন, আমরা যদি নিয়োগ ব্যবসায়ী হই তাহলে আমাদের নিয়োগ ব্যবসায়ীদের ডিলার হলো— এনটিআরসিএ কর্মকর্তাবৃন্দ। যারা দাবি আদায়ে কাজ করে যাচ্ছে সবাই নিয়োগ বঞ্চিত।
মুখপাত্র মো: মাহমুদুল হাসান বলেন, সকল সংবাদ কর্মীই তার যুক্তি নির্ভর তথ্যবহুল সংবাদ প্রকাশের স্বাধীনতা রাখে। একক কোনো ব্যক্তিকে খুশি করতে বিকৃত তথ্য প্রচার দুঃখজনক। দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ গ্রহণযোগ্য না হলেও এনটিআরসিএ এর কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজশে ৩য় ও ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে দারুল ইহসানের সনদধারীদের সুপারিশ করা হয়েছে। দেশে ৭০ হাজারের ওপরে শিক্ষক শুন্যপদ আছে, যা শুধু মাত্র এককভাবে ১৬ এবং ১৭ তম অল্প কিছু নিবন্ধন সনদধারীর মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভয় নয়। এই অবস্থায় কাম্য শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা এবং বয়স ৩৫ বছর অতিক্রম না করা প্রার্থীদের গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ দেওয়া দরকার।
সাধারণ সম্পাদক মো: ওবাইদুল ইসলাম বলেন, আমরা ইতিমধ্যে এনটিআরসিএ এর চেয়ারম্যান বরাবর নুরে আলম সিদ্দিকী এবং জনাব, মো: ওবায়দুর রহমানের পদত্যাগ ও শাস্তি দাবি করেছি। আমাদের দাবি হচ্ছে সরকার নির্ধারিত এমপিও নীতিমালার বাস্তবায়ন। কোনো কর্মকর্তাকে হেয় প্রতিপন্ন করা বা অসম্মানিত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয় । নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে দেশে যথেষ্ট শিক্ষক ঘাটতি রয়েছে এই বিষয়টা কর্মকর্তাদের বুঝতে হবে। শিক্ষামন্ত্রী বছরে চারটি গগণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শিক্ষক সংকট নিরসন করতে বলেছেন। মন্ত্রীর এমন ঘোষণায় আমরা নিবন্ধন সনদধারীরা আশ্বস্ত হয়েছিলাম।
তিনি আরও বলেন, যুগে যুগে আইন প্রণয়ন হয়েছে মানুষের কল্যাণে, কিন্তু শিক্ষক নিবন্ধনের সনদের মেয়াদ তিন বছর সংক্রান্ত আইনের দরকার হয় না। এমন কোনো কালো আইনের দরকার পরে না যার দরুন ১-১৫তম দের বাদ দিতে হয়। এই আইন বাস্তবায়ন হলে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি হয়ে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা চরমে পৌঁছে যাবে। যে আইনে ৩য় ও ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তি পরিচালিত হয়েছে, সেই আইনেই নিয়োগের আবেদনের সুযোগ প্রদান করা হোক। আর তা করা না হলে ৩য়, ৪র্থ ও সেসিপের বিজ্ঞপ্তিগুলো প্রশ্নবিদ্ধ হবে। রায়টা যেহেতু মার্চ ২০২০ এর। এর আগেও এনটিআরসিএতে বহু কর্মকর্তা এসেছে এবং বদলি বা রিটায়ার্ড হয়ে চলে গেছে। এখানে কেও চিরকাল থাকবে না। এমন কোনো কাজের প্রতিফলন উচিত হবে না, যাতে মানুষ সারাজীবন ঘৃণার চোখে স্মরণ করে।
প্রচার সম্পাদক এস এম রুহুল আমিন বলেন, এনটিআরসিএর সনদ একটি পেশাগত সনদ, অন্য কোনো দেশের সনদের উদাহরন টেনে ১-১৫তম দের আবেদনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা গ্রহণযোগ্য হবে না।কারণ নিয়োগ সুপারিশ কার্যক্রম সরকারি নিয়ম অনুযায়ী হলেও প্রতিষ্ঠান গুলো বেসরকারি।
অর্থ সম্পাদক এস এম নাসিম উদ্দীন বলেন, আইনগত প্রতিকার সবারই পাওয়ার অধিকার রয়েছে। এসব অসহায় নিয়োগ বঞ্চিতগণ কোনো একক নিয়োগ বা শর্তহীন নিয়োগ সুপারিশ পাওয়ার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেনি। রিট ব্যবসা ভিন্ন জিনিস। কারোও সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুন্ন হলে আইনের দ্বারস্থ হওয়া মানেই রিট ব্যবসায়ী নন। আমরা কোন্দল চাই না, নিয়োগের আবেদনের সুযোগ চাই। আশা করি কর্তৃপক্ষ মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে হলেও ১-১৫ তমদের আবেদনের সুযোগ নিশ্চিত করবেন।
কিশোরগঞ্জের নারী নেত্রী হাজেরা সাইবার ক্রাইম মামলার উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, এ ধরণের হুমকি দিয়ে ১-১৫তম নিবন্ধন সনদধারীকে থামানো যাবে না। আমরাও বিধি বিধানের বাহিরে কথা বলছি না। কারো মন চাইলে সাইবার মামলা করতে পারে। আমরা প্রমাণ করবো আসলে সাইবার অপরাধী এনটিআরসিএ। কারণ তারা অসহায় বেকারদের সাথে তামাশা শুরু করেছে।